বাংলাদেশ-পাকিস্তানের ৮০ কোটি টাকার যৌথ বিনিয়োগ
ঢাকা জার্নালঃ যৌথ উদ্যোগে চট্টগ্রামের নাসিরাবাদ শিল্প এলাকায় প্রতিষ্ঠিত একটি অটোমোবাইল কারখানা উত্পাদন শুরু করেছে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানি বিনিয়োগকারীরা প্রতিষ্ঠানটিতে ৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। আরো ৪০ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। কারখানাটিতে তৈরি মোটরসাইকেল এবং উন্নত মানের সিএনজিচালিত অটোরিকশা ক্রেতা চাহিদা সৃষ্টি করেছে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গত জানুয়ারিতে এটি উত্পাদনে যায়।
এইচপিএম অটো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানটির ৯০ শতাংশ মালিকানা পাকিস্তানের অন্যতম শীর্ষ কোম্পানি হাসান ফির গ্রুপের। প্রতিষ্ঠানটির তৈরি ‘সুপার পাওয়ার’ ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেল পাকিস্তানে বেশ জনপ্রিয়। বাংলাদেশে পাওয়ার নামে প্রতিষ্ঠানটির ফোর স্ট্রোক সিএনজিচালিত অটোরিকশা বেশ মজবুত ও জ্বালানিসাশ্রয়ী। ডবল সিলিন্ডারের এ অটোরিকশা একবার গ্যাস নিয়ে দেশে বর্তমানে চলমান অটোরিকশার চেয়ে দ্বিগুণ পথ চলতে পারে।
গত জানুয়ারিতে প্রথমবারের মতো বাণিজ্যিক উত্পাদনে যাওয়া এইচপিএম অটো মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড মাসে গড়ে তিন হাজার মোটরসাইকেল ও ৮০০ অটোরিকশা তৈরিতে সক্ষম। উন্নত মানের আমদানি যন্ত্রপাতি দিয়ে মোটরসাইকেল তৈরি করা হলেও স্যাডেল ও পেইন্টিং চট্টগ্রামের কারখানাতেই তৈরি হচ্ছে। অন্যদিকে সিএনজিচালিত অটোরিকশার ক্ষেত্রে কেবল ইঞ্জিন বাদে যাবতীয় যন্ত্রাংশ এ কারখানায় তৈরি হয়। এখানে উত্পাদিত ৮০ সিসি থেকে ১৫০ সিসির মোটরসাইকেলগুলো অত্যন্ত জ্বালানিসাশ্রয়ী। প্রতি লিটার জ্বালানিতে ৭০ কিলোমিটার পথ চলা যায়। ছয় ধরনের মোটরসাইকেল উত্পাদনকারী এ প্রতিষ্ঠানের উত্পাদিত মোটরসাইকেল বাজারের যেকোনো ব্র্যান্ডের মোটরসাইকেলের চেয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশে এইচপিএম অটো মোবাইল ইন্ডাস্ট্রিজের সিইও মোহম্মদ সেলিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘এ অঞ্চলের মধ্যে বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের বাজার অনেক বেশি সম্ভবনাময়। তিন বছর আগে বাজার জরিপ করে দেখা গেছে, এখানকার বাজারে প্রতি বছর দুই লাখ মোটরসাইকেলের চাহিদা রয়েছে। এছাড়া বছরে প্রবৃদ্ধি রয়েছে ১৮ থেকে ২০ শতাংশ। এখানকার ক্রেতারা ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে অনেক বেশি শৌখিন। ফলে উন্নত মানের মোটরসাইকেলের এটি একটি লোভনীয় বাজার। আমাদের প্রতিষ্ঠান এরই মধ্যে ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং আরো ৫০ লাখ ডলারের নতুন বিনিয়োগ পরিকল্পনা রয়েছে।’
বর্তমানে বাংলাদেশে ভারতীয় বাজাজ মোটরসাইকেলের বিশাল ও একচেটিয়া বাজার রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে চীন এবং স্থানীয় কোম্পানি ওয়ালটনের তৈরি মোটরসাইকেলের বাজার। তবু গুণগত মান ও দামের জন্য এইচপিএমের তৈরি মোটরসাইকেল অচিরেই ব্যাপক ক্রেতা আকর্ষণে সক্ষম হবে বলে ধারণা করছে এইচপিএম অটোমোবাইল।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের কান্ট্রি ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) শফিউল আজম বলেন, বাজারে অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু গুণগত মানের কারণে এরই মধ্যে অনেকেই এইচপিএমের মোটরসাইকেল ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। জানুয়ারি মাসে বাণিজ্যিক উত্পাদন চালু হওয়ার পর কোম্পানিটি ঢাকা-চট্টগ্রামে দুটি আউটলেট খুলেছে। এছাড়া সারা দেশে ২১ জন ডিলার পণ্য বাজারজাত প্রক্রিয়ায় নিয়োজিত।