ফরমালিনে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন
ঢাকা জার্নাল: ফরমালিনের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ আইন- ২০১৪’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার সচিবালয়ে প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে চূড়ান্ত খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, কেউ লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ বিক্রয় ও ব্যবহার করতে পারবে না। আর লাইসেন্সপ্রাপ্তদের চাহিবা মাত্র ফরমালিন ব্যবহারের হিসাব দিতে হবে।
লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রয় ও ব্যবহার করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রয়েছে।
তিনি বলেন, ফরমালিনের অপব্যবহার এখন শঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফরমালিনের অপব্যবহার রুখতে এবং মাত্রা নিয়ন্ত্রণে এ আইন করা হচ্ছে।
ফরমালিনের অপব্যবহার রোধে এ আইনে বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, লাইসেন্স ছাড়া ফরমালিন আমদানি, উৎপাদন, পরিবহন, মজুদ, বিক্রি ও ব্যবহার করলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, আইনে ফরমালিনের লাইসেন্স শর্ত ভঙ্গ করলে সাত থেকে দুইবছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিতের বিধান রাখা হয়েছে।
ফরমালিনের যন্ত্রপাতির জন্যও বিধান রাখা হয়েছে, জানিয়ে তিনি বলেন, ফরমালিন উৎপাদনে ব্যবহার করা যায়, সে রকম যন্ত্রপাতি রাখলে ১০ থেকে দুই বছরের কারাদণ্ড এবং ২০ থেকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
লাইসেন্স ছাড়া বা অবৈধভাবে ফরমালিন দখলে রাখলে সাত থেকে দুইবছরের কারাদণ্ড এবং পাঁচ থেকে দুই লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
সচিব বলেন, ফরমালিনের অপব্যহার রোধে এ আইনে মোবাইল কোর্ট বিচার করতে পারবেন। তবে শাস্তির পরিমাণ বেশি হলে মোবাইল কোর্ট সংশ্লিষ্ট কোর্টে মামলা রেফার (স্থানান্তর) করতে পারবেন।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনের মাধ্যমে ফরমালিনের উৎপাদন, আমদানি, ব্যবহার ও মজুদ ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না; মূলত ফরমালিনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও অপব্যবহার রোধে এ আইন করা হচ্ছে।
ফরমালিন, ফরমালডিহাইড, প্যারা-ফরমালডিহাইড বা এর যে কোনো মাত্রার সলিউশন বা দ্রবণ ইত্যাদি ফরমালিনের সংজ্ঞা এ আইনের আওতায় আসবে। তবে আইন হওয়ার পর আরো বিধি তৈরি করে এর আওতা নির্ধারণ করা হবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির বর্ণিত পন্থায় এ আইনে প্রয়োগ নিশ্চিত করা হবে (পরোয়ানা, গ্রেফতার বা তল্লাশি ইত্যাদি) বলেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
এ আইনের আওতায় যে অপরাধ তা কগনিজিবল বা আমলযোগ্য হবে অর্থাৎ ওয়ারেন্ট ছাড়া গ্রেফতার করতে পারে, অআপসযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য হবে।
এ আইনের মাধ্যমে প্রতি উপজেলা ও জেলায় ফরমালিন নিয়ন্ত্রণ কমিটি করা হবে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা।
এ আইনে ছয়টি অধ্যায় ও ৩৭টি ধারা আছে। ফরমালিনের অপব্যবহার রোধে এই কঠোর আইন করতে যাচ্ছে সরকার।
চলতি অধিবেশনেই এ আইন পাস হবে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আশা করা যাচ্ছে।
এর আগে গত বছরের ৪ নভেম্বর আইনটির খসড়ার নীতিগতভাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
ঢাকা জার্নাল: জুন ৩০, ২০১৪।