প্রাথমিকে ৭১ ও মাধ্যমিকে ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী বিশেষ সহায়তা পায়নি
কোভিড-১৯ সময়ে বিদ্যালয় বন্ধ থাকার পর তা খুলে দেওয়া হলে শিখনঘাটতি পূরণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষকদের কাছ থেকে বিশেষ সহায়তা পায়নি।
শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযানের ‘এডুকেশন ওয়াচ ২০২২ সমীক্ষা প্রতিবেদ’নে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।
প্রসঙ্গত, শিখনঘাটতি পুনরুদ্ধার ও প্রতিকারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবস্থা নিতে সব ধরনের সহায়তা করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক (বোর্ড), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদফতর, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদফতর ও কারিগরি শিক্ষা অধিদফতর। তবে মনিটরিং ঠিকঠাক হয়নি বলে সংবাদ সম্মেলনে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন সংশ্লিষ্টরা।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, শিখনঘাটতি সম্পর্কে অংশীজনদের মধ্যে কোনও দ্বিমত ছিল না। কারণ, মহামারি চলাকালীন বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীদের উল্লেখযোগ্য শিখনক্ষতি হয়েছে বলে দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন ৯৭ শতাংশের বেশি অংশগ্রহণকারী এবং শতভাগ গশিক্ষা কর্মকর্তা।
প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭১ শতাংশ এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ৭৫ শতাংশ শিক্ষার্থী স্কুল খোলার পর তারা পাঠ বোঝার জন্য বিশেষ কোনও সহায়তা পায়নি। বেশির ভাগ অভিভাবক ইঙ্গিত করেছেন, তাদের শিশুদের জন্য ব্যক্তিগত উদ্যোগে পড়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং একটি ছোট অংশ মা-বাবা ও বড় ভাইবোনদের সহায়তার ওপর নির্ভর করেছিল।
প্রতিবেদনের আরও বলা হয়, বেশির ভাগ শিক্ষক ও কর্মকর্তা বিশ্বাস করেন যে নির্দেশনামূলক অনুশীলনগুলোয় কিছু পরিবর্তন আনার প্রচেষ্টা ছিল। শিক্ষার্থীদের জন্য অতিরিক্ত ক্লাসসহ এ ধরনের আরও পদক্ষেপ নেওয়া এবং শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি নির্ধারণের জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন বলে তারা উল্লেখ করেন। বিদ্যালয়গুলোয় অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, এমনটিই জানিয়েছেন ৫৭ দশমিক ৮ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষক এবং ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ মাধ্যমিক শিক্ষক। যদিও এই অতিরিক্ত পাঠের গুণগত মান ও কার্যকারিতা নিরূপণ করা যায়নি, তবে এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি শিক্ষক সপ্তাহে পাঁচ দিন পর্যন্ত অতিরিক্ত পাঠদানের কথা উল্লেখ করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক শিক্ষাবিদ রাশেদা কে. চৌধূরী, গবেষণা দলের পক্ষে এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউটের গবেষক অধ্যাপক ড. সৈয়দ শাহাদাৎ হোসেন, এডুকেশন ওয়াচের সদস্য অধ্যক্ষ কাজী ফারুক আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলেনে গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক ও এডুকেশন ওয়াচের ফোকাল পয়েন্ট ড. মোস্তাফিজুর রহমান।