প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি প্রমাণ হলে পরীক্ষা বাতিল: পিএসসি চেয়ারম্যান
ঢাকা জার্নাল রিপোর্ট:
বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন বলেছেন, সদ্য শেষ হওয়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি প্রমাণ হলে সেটি বাতিল করা হবে। তবে পূর্বের পরীক্ষাগুলো নিয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার (৯ জুলাই) গণমাধ্যমকে একথা বলেন পিএসসির চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যান দাবি করেন, যে প্রক্রিয়ায় চূড়ান্ত পর্যায়ে প্রশ্নপত্র পাঠানো হয় সেখানে ফাঁস করার সুযোগ খুব কম। তারপরও বিষয়টি নিয়ে তদন্ত হচ্ছে। যদি কারো সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, ‘গত পাঁচ জুলাইয়ের রেলওয়ের পরীক্ষা ছাড়া যেসব পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সেগুলো প্রমাণ হলেও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
কোনো অসৎ কাজে আমার কোনো সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে আমাকেও ফায়ার করুন উল্লেখ করে পিএসসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘সিআইডি যে মুহূর্তে গ্রেপ্তার দেখাবে তখনই পিএসসির যারা আছে তারা সাসপেন্ড হবে।’
দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়ায় বাতিলের বিষয়টি জটিল বলেও অকপটে স্বীকার করেন তিনি।
পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, এরইমধ্যে এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তের পর অগ্রগতিও জানানো হবে।
তিনি আরও বলেন, কমিশনের যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী তাদের সাসপেন্ড করা হবে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে পরীক্ষাগুলোর কথা বলা হয়েছে ১২ বছরের, আজ পর্যন্ত কোনো অভিযোগ আসেনি ওইসব পরীক্ষা নিয়ে। ফলে সেটিই প্রমাণ করে পরীক্ষাগুলো সুষ্ঠু হয়েছে।
পিএসসির গাড়িচালক আবেদ আলীর বিষয়ে তিনি বলেন, যে প্রক্রিয়ায় প্রশ্ন নির্ধারণ ও সাপ্লাই করা হয়, সেখানে প্রশ্নফাঁসের কোনো সুযোগ নেই। তবে এ কার্যক্রমের সাথে যেহেতু অনেকেই জড়িত থাকেন, তাই শতভাগ নিশ্চিতভাবেও বলা যায় না।
যদি কোনো অভিযোগের প্রমাণ মেলে, তাহলে আমার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে-এ কথা জানিয়ে পিএসসির চেয়ারম্যান বলেন, ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই প্রশ্ন বানিয়ে ফেসবুকে আপলোড করেন এবং সেটিকে পিএসসির প্রশ্ন দাবি করেন।
এখন পর্যন্ত সিআইডি থেকে কোনো প্রতিবেদন পাইনি, তাই আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো সাসপেন্ড লেটার তৈরি করা হয়নি। গ্রেফতার দেখানোর সাথে সাথেই তাদেরকে সাসপেন্ড লেটার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে পিএসসি জানিয়েছে, বিসিএসের প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিশনের একজন যুগ্ম সচিবকে আহ্বায়ক করে এ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিকে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, প্রশ্নফাঁস নিয়ে যে ঘটনাটি ঘটেছে, তার ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। তারপরও পুরো ঘটনাটি আরও অধিকতর তদন্ত করতে একজন যুগ্ম সচিবের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিশনের যুগ্ম সচিব ড. আব্দুল আলীম খানকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুইজন সদস্য হলেন- কমিশনের পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানা ও মোহাম্মদ আজিজুল হক।
গত ১২ বছরে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে পিএসসির কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। মঙ্গলবার সকালে তাদের আসামি করে রাজধানীর পল্টন থানার মামলা দায়ের করা হয়।