নিজেদের বাঁচাতেই জামায়াতের নাস্তিকতার অভিযোগ: ইমরান
ঢাকা জার্নাল: কয়েকদিন আগেও গনজাগরণ মঞ্চের আহ্বানে সারাদেশ উঠে দাঁড়িয়েছিল৷ শুভকামনার প্রতীক হিসেবে আলোও জ্বলেছিলো দেশে৷ সেই তারাই এবার লাঠিও নিয়েছে হাতে৷ শুধুমাত্র হামলা প্রতিরোধের প্রতীকি অঙ্গীকারেই এ কর্মসূচি দেয়া হয়েছে বলে জানান ডা. ইমরান এইচ সরকার!
গনজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, ধাপে ধাপে আন্দোলনের রূপ বদলের কথা৷ শুরুতে শাহবাগের প্রজন্ম চত্বরের দিকেই ছিল জনস্রোত৷ এক সময় উল্টো স্রোতও এসেছে৷ জামায়াত-শিবির মাঠে নেমেছে, দেশময় চালিয়েছে তাণ্ডব৷ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে প্রচুর৷ সংখ্যালঘুরা ঘরছাড়া হয়েছেন অনেক জায়গায়, ঘরের মতো তাঁদের মন্দির আর ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও চলেছে ভাংচুর, লুটপাট৷
এমনকি গনজাগরণ মঞ্চেও হামলা চালানোর চেষ্টা হয়েছিল৷ প্রতিরোধের অটল প্রতিজ্ঞায় কর্মীরা দাঁড়িয়ে যাওয়ায় সেদিন অবশ্য অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি৷ পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আবার আক্রান্ত হলে তা ঠেকানোর প্রত্যয় প্রকাশের উদ্দেশ্যেই গত মঙ্গলবার লাঠি মিছিল হয়েছে বলে জানালেন ডা. ইমরান এইচ সরকার৷
প্রত্যক্ষ হামলার চেয়ে পরোক্ষ আক্রমনের তিরই বেশি আসছে গনজাগরণ মঞ্চের দিকে৷ নাস্তিকতার কথাও তোলা হয়েছে৷ প্রকাশ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চেয়েছেন এমন অনেকের গায়েই ‘নাস্তিক’ লেবেল লাগানোর চেষ্টা চলছে৷ গনজাগরণ মঞ্চের খবর পরিবেশনের পেশাগত দায়িত্ব পালনে যাওয়া সাংবাদিককেও ‘নাস্তিক’ বলতে শুরু করেছে একটি মহল৷
এই প্রয়াসের সঙ্গে যাঁরা, তাঁদের অগ্রসৈনিকদের কারো কারো অবস্থান যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবির বিপক্ষে৷ ইমরান এইচ সরকার জানালেন, বিষয়গুলো তাঁকে একাত্তরের কথাই মনে করিয়ে দেয়৷
এ প্রসঙ্গে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের মিত্ররাও যে একই অপকৌশল অবলম্বন করেছিল সে কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি৷
মূলত যুদ্ধাপরাধী এবং সেই সূত্রে জামায়াতে ইসলামী আর তাদের অঙ্গসংগঠন ইসলামী ছাত্র শিবিরের বিরুদ্ধেই চলমান আন্দোলন- এ কথা জানিয়ে ব্লগার, সরকার এবং হেফাজতে ইসলামীর ব্যাপারেও কিছু কথা বলেছেন গনজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র৷
আটক ব্লগারদের কারো কারো বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সত্যি নয়, তাঁদের নাস্তিক হিসেবে তুলে ধরতে মিথ্যের আশ্রয় নেয়া হয়েছে- এ দাবি করে ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, তিনি আশা করেন সরকার ব্লগারদের সুবিচার নিশ্চিত করবেন৷
হেফাজতে ইসলামীর সঙ্গে জামায়াতের সম্পৃক্ততার প্রসঙ্গটিও উঠে এসেছে ইমরান এইচ সরকারের বক্তব্যে৷
ইমরান মনে করেন, সংগঠনটির কিছু দাবি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক৷ তাঁদের কার্যকলাপ নিয়েও প্রশ্ন আছে তাঁর৷ অথচ কিছু ক্ষেত্রে সেই হেফাজতের পাশেই সরকারের অবস্থান৷ সর্বশেষ যে সমাবেশে হেফাজত কর্মীরা প্রকাশ্যে একুশে টেলিভিশনের স্টাফ রিপোর্টার নাদিয়া শারমিনসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর হামলা চালিয়েছে সেই সমাবেশকেই ‘শান্তিপূর্ণ’ বলে সরকারের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়েছে হেফাজতকে৷
ইমরান এইচ সরকার জানান, হেফাজতের ব্যাপারে সরকারের এই দৃষ্টিভঙ্গি হতাশ করেছে তাঁকে, তবে গনজাগরণ মঞ্চের আন্দোলন নিয়ে তিনি আগের মতোই আশাবাদী৷