দেশে ফেরা প্রসঙ্গে যা বললেন সাকিব
ঢাকা জার্নাল ডেস্ক
ভারতের মাটিতে টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচের আগে কানপুরে সংবাদ সম্মেলনে আজ (বৃহস্পতিবার) সবাইকে অবাক করে দিয়ে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন সাকিব আল হাসান। সাম্প্রতিক সময়ে মাঠের ফর্ম এবং মাঠের বাইরের একাধিক বিতর্কে মানসিকভাবে কিছুটা চাপেই ছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই পোস্টার বয়। এবার বড় সিদ্ধান্তই নিয়ে ফেললেন তিনি!
তবে লাল বলের ক্রিকেট থেকে বিদায়টা সাকিব নিবেন দেশের মাটিতেই। অক্টোবরে টেস্ট সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে আসছে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট দল। সেই সিরিজের পরই জাতীয় দলের সাদা জার্সিটা তুলে রাখবেন সাকিব। অন্যদিকে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে নিজের শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটা খেলে ফেলেছেন দেশসেরা এই ক্রিকেটার, এমনটাও জানান তিনি।
দেশে রাজনৈতিক পট-পরিবর্তনের পর ব্যাপক সমালোচিত হয়েছেন সাকিব। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। যদিও মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই গণ আন্দোলনের মুখে পতন হয়েছে সেই সরকারের। তাই সাকিবের দেশে ফেরত আসা নিয়েও ছড়িয়েছে নানামুখী গুঞ্জন।
‘আমি যেন দেশে গিয়ে খেলতে পারি এবং নিরাপদ অনুভব করি। যখন দেশের বাইরে আসার দরকার হবে, দেশের বাইরে আসতেও যেন আমার কোন সমস্যা না হয়। বোর্ড খেয়াল করছে। বিষয়গুলোর সঙ্গে যারা জড়িত তারা দেখছেন। তারা হয়তো আমাকে একটা সিদ্ধান্ত দেবে, যেটার ভিত্তিতে আমি দেশে গিয়ে খুব ভালোভাবে খেলে অন্তত টেস্ট ফরম্যাটটা ছাড়তে পারব।’- দেশে ফেরত আসা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমনটাই বলেছেন সাকিব।
দেশের মাটিতে টেস্ট ক্রিকেটের শেষ ম্যাচটা খেলতে চান সাকিব, ‘আমার দেশের সমর্থকদের সামনে টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ করাটা উপযুক্ত হবে বলে মনে হচ্ছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আমাকে অনেক কিছু দিয়েছে এবং এই ফরম্যাটের শেষটা আমি ঘরের মাঠেই খেলতে চাই। আমি বিসিবির কাছে নিজের শেষ টেস্টটি মিরপুরে খেলার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছি। যদি তা না হয়, তাহলে কানপুরে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটিই আমার শেষ টেস্ট হবে।’
অবসরের সিদ্ধান্ত নিয়ে বিসিবির সঙ্গেও ইতিমধ্যে আলোচনা সেরেছেন সাকিব, ‘দেখুন, এখন পর্যন্ত আমি তো অ্যাভেইলেবল। দেশে যেহেতু অনেক পরিস্থিতি আছে, সবকিছু অবশ্যই আমার ওপরে না। আমি বিসিবির সঙ্গে এসব নিয়ে আলোচনা করেছি। তাদেরকে বলা হয়েছে আমার কি পরিকল্পনা। এই সিরিজ আর হোম সিরিজটা আমি ফিল করেছিলাম আমার শেষ সিরিজ হবে, টেস্ট ক্রিকেটে স্পেশালি।’
‘ফারুক ভাইয়ের সঙ্গে ও নির্বাচকদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। যদি সুযোগ থাকে, আমি যদি দেশে যাই, খেলতে পারি, তাহলে মিরপুর টেস্ট হবে আমার জন্য শেষ। সেই কথাটা বোর্ডের সবার সঙ্গে বলা হয়েছে। তারা চেষ্টা করছেন কিভাবে সুন্দর ভাবে আয়োজন করা যায়’-আরও যোগ করেন সাকিব।
কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন না হয়ে সাকিব যেন দেশের মাটিতে সুষ্ঠুভাবে ক্যারিয়ারের ইতি টানতে পারেন, তার জন্য নিজেদের সর্বোচ্চটাই চেষ্টা করবে বিসিবি। সাকিবও আশা করেন, এতবছর সমর্থকদের যেই ভালোবাসা তাকে আজ এই তারকা সাকিব আল হাসান বানিয়েছে, শেষ দিন পর্যন্ত এই ভালোবাসাটাই তিনি পাবেন।