ঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামী ভারতের জন্য বড় ধরনের হুমকি বলে মনে করছে সে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। বাংলাদেশে আসন্ন নির্বাচনের আগে দেশব্যাপি ব্যাপক নাশকতা আর অরাজকতা সৃষ্টির গোপন পরিকল্পনা করেছে জামায়াতে ইসলামী বলে মনে করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন ইসলামী দেশ থেকে এ জন্য নাকি বিপুল অর্থও জোগাড় করা হচ্ছে। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনকে ভিত্তি করে এই সংবাদ প্রকাশ করেছে কলকাতার বাংলা সংবাদপত্র আনন্দবাজার পত্রিকা। বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ নিয়ে এই সংবাদ প্রকাশ করে পত্রিকাটি।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়, জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ সহ আরও ১০৮টি মৌলবাদী জঙ্গি সংগঠন বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে প্রস্তুত। এই প্রতিবেদন দিল্লির দুশ্চিন্তা কিছুটা বাড়িয়েছে বলে সংবাদ বলা হয়েছে। ভারতের পূর্বাঞ্চলে শান্তি ধরে রাখতে স্থিতিশীল বাংলাদেশ দরকার বলে মনে করে দিল্লী।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার রাস্তায় সংঘাত সৃষ্টির জন্য বিশেষ কর্মীবাহিনী গড়া হচ্ছে। এই দলের প্রত্যেকেই কিশোর।
বাংলাদেশে নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজনৈতিক সংকট তীব্র হয়ে ক্রমেই বাড়ছে সহিংসতার পরিবেশ। আদালত জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিল করায় তারা নিজেদের প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে লড়তে পারবে না। যুদ্ধাপরাধের দায়ে তাদের প্রথম সারির অনেক নেতা ফাঁসির আসামি। এর বদলা হিসেবেই তারা সহিংসতা ছড়ানোর পরিকল্পনা করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, জামায়াতের পরিকল্পনা কার্যকর হলে এক ধাক্কায় অনুপ্রবেশ বেড়ে যাবে। সেই সঙ্গে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে সন্ত্রাস আমদানির ঘটনাও বেড়ে যেতে পারে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ধাক্কা লাগবে বাংলাদেশ-সংলগ্ন রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে।
এক বিএনপি নেতাকে উদ্ধৃত করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি বাহিনীকে সন্ত্রাস ছড়ানোর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নাশকতার সময়ে পুলিশের গুলিতে মারা যাওয়া কর্মীদের পরিবারকে আর্থিক মদদ দিতেও তৈরি জামায়াত নেতারা।
প্রতিবেদনে কয়েকটি ঠিকানার একটি বিস্তারিত তালিকাও রয়েছে। সেখানে জামায়াতসহ ইসলামী সংগঠনগুলোর সশস্ত্র কর্মীরা গোপনে আশ্রয় নিচ্ছে। ঢাকা শহরের প্রায় ২৭০টি এমন ঠিকানার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে যাত্রাবাড়ী, মতিঝিল, ধানমণ্ডি, মিরপুর ও চকবাজার থানার নানা এলাকা। জামায়াতের সঙ্গী মোট ১০৮টি ইসলামী সংগঠনের কথা বলা হয়েছে প্রতিবেদনে। তাদের মধ্যে রয়েছে আফগানি পরিষদ, ইসলামী বিপ্লব পরিষদ, ইসলামী জিহাদ গ্রুপ, জাগ্রত জনতা, মুজাহিদিন তায়েব, রোহিঙ্গিয়া ইসলামিক ফ্রন্ট, রোহিঙ্গিয়া প্যাট্রিয়াটিক ফ্রন্ট ইত্যাদি। তাদের বেশির ভাগই অত্যন্ত গোপনে সংগঠন বাড়াচ্ছে।
ঢাকা জার্নাল, নভেম্বর ৩০, ২০১৩।