জলাধার ভরাট-জলস্রোত বন্ধ করলে দণ্ড
ঢাকা জার্নাল: জলাধার রক্ষা, জলস্রোত স্বাভাবিক রাখাসহ পানি সম্পদ সংরক্ষণের বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ পানি বিল-২০১৩’ চূড়ান্ত করেছে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বিলে এই আইনের বিধান লঙ্ঘনের জন্য অনধিক পাঁচ বছরের জেল অথবা ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় সংসদ ভবনে সংসদীয় কমিটির বৈঠকে বিলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বিলটি পাসের সুপারিশ করে প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়।
কমিটির সভাপতি র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটির সদস্য পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন, প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান, এ. বি. এম. রুহুল আমিন হাওলাদার, এ. বি. এম. আনোয়ারুল হক, এ. কে. এম. ফজলুল হক, আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকব ও হাসিনা মান্নান এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য এ. কে. এম. ফজলুল হক জানান, আশা করছি, বিলটি আগামী অধিবেশনে পাস হবে।
এর আগে গত ৩ মার্চ জাতীয় সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন পানিসম্পদমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। পরে বিলটি অধিকতর পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।
এর পর কমিটির বৈঠকে বিলটি চূড়ান্ত করতে এ. বি. এম. রুহুল আমিন হাওলাদারকে আহ্বায়ক করে একটি সাব-কমিটি গঠন করা হয়।
সাব-কমিটি বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়ে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন মূল কমিটির বৈঠকে উত্থাপন করেন। বৈঠকে আলোচনা শেষে বিলটি পাসের সুপারিশ করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সদস্য এ. কে. এম. ফজলুল হক জানান, সাব কমিটির প্রস্তাব বিবেচনা করেই সংসদীয় কমিটি প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে।
সাব কমিটির প্রতিবেদনে ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) প্রেসিডেন্টকে জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছে।
বিলে প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারপার্সন করে জাতীয় এই পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়।
এ.কে. এম. ফজলুল হক জানান, দেশের উন্নয়নে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়াররা অনেক ভূমিকা রাখেন। তাই, পানি সম্পদ উন্নয়নে তাদের অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
পানি বিলে শিল্প, কৃষি, অল্প লোনা পানিতে মৎস্য চাষ এবং হ্যাচারি প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনো এলাকাকে পানি অঞ্চল ঘোষণার বিধান রাখা হয়েছে। সেখানে স্থাপনা নির্মাণ বা জলাধার ভরাট করে জলস্রোতের স্বাভাবিক প্রবাহ বন্ধ করলে জেল-জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।
সে ক্ষেত্রে আইনের বিধান লঙ্ঘনের জন্য অনধিক পাঁচ বছরের জেল ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
এ ছাড়া দায়িত্ব পালনরত কোনো ব্যক্তিকে কাজে বাধা দিলে একই দণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে। এছাড়া এই আইনের অধীন কোনো অপরাধের বিচার সংক্ষিপ্ত পদ্ধতিতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিলে পানি সম্পদের সমন্বিত উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, আহরণ, বিতরণ, ব্যবহার, সুরক্ষা ও সংরক্ষণ সম্পর্কিত বিষয়ে সুনির্দিষ্ট বিধান করতে প্রধানমন্ত্রীকে চেয়ারপার্সন করে জাতীয় পানি সম্পদ পরিষদ গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।
এই পরিষদের কাজ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রীকে সভাপতি করে একটি নির্বাহী কমিটি রাখারও বিধান রাখা হয়েছে।
ঢাকা জার্নাল, এপ্রিল ১৬, ২০১৩