জলবেশ্যায় ছেয়ে গেছে কলকাতা
জলের ওপর সার সার, ছোট ছোট ডিঙি নৌকো। কুপির আলোয় সেখানেই হররোজের দিন গুজরান! মাছ ধরা, সাপের সন্ধান। সাপ? কেন না, সাপের খেলা দেখিয়েই যে দিঙির জীবন চলে বেদেনিদের। এর বাইরে অবশ্য এদের রয়েছে অন্য একটা জীবন কী সেই জীবন? সামান্য অর্থের বিনিময়ে এক চিলতে ডিঙিতেই শরীর দিতে হয়!
দেহব্যবসা করতে হয় ওদের। তাই ওরা ‘জলবেশ্যা’। উগ্র সাজপোশাক আর চটুল চাহনির এই বেদেনিদের জীবন নিয়ে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদের ছোটগল্প ‘জলবেশ্যা’ এবার শহরের পর্দায়।
পৃথক গ্রাম থাকলেও সুন্দরবনে জলবেশ্যার দেখা মেলে জল-জঙ্গলের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। জল, জঙ্গল আর জলবেশ্যাদের সেই গল্প-নির্ভর ছবি বানিয়েছেন মুকুল রায়চৌধুরী। শহরজোড়া পোস্টারে ইতিমধ্যেই অবশ্য পাঠক জেনে ফেলেছেন ছবির নাম, ‘টান’। পরিচালক মুকুল বিজ্ঞাপন জগতের লোক।
একসময়, কাজের সূত্রে বাংলাদেশে ছিলেন দীর্ঘ সময়। একটি সংস্থার হয়ে সুন্দরবন অঞ্চলে কাজ করতে হয় তাঁকে। সেখানেই বেদেনিদের জীবন কাছ থেকে দেখা।
গল্প যেভাবে এগিয়েছে, তাতে বিদেশি এক কোম্পানির হয়ে মুম্বই থেকে ওপার বাংলায় প্রকৃতির ছবি তুলতে যায় সাজু নামের এক যুবক। সুন্দরবনের নিভৃত অঞ্চলে গিয়ে সাজু পড়ে জলদস্যুদের খপ্পরে। বেদেনিরা সাজুকে নিয়ে চলে যায় তাদের ডেরায়।
এদিকে সাজুর খোঁজ না পেয়ে তার বন্ধু লিজা পাড়ি দেয় সেখানে। বন্ধুকে খুঁজতে গিয়ে লিজার চোখ দিয়েই উঠে আসে বেদেনি তথা জলবেশ্যাদের জীবন। সে জানতে পারে সাজুর সঙ্গে এক জলবেশ্যার সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
ছবিতে বাংলাদেশের জুয়েল মামুদের লেখা গানে সুর দিয়েছেন টলিউডের ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত।
এছাড়া পামেলা, দেবলীনা চক্রবর্তী ছাড়াও এই ছবিতে গুরুত্বপূর্ণ এক জলদস্যুর ছবিতে দেখা যাবে রাজেশ শর্মাকে।
ছবির বেশ কিছু অংশের শুটিং সুন্দরবনে হলেও, বেশিরভাগ অংশের শুটিং হয়েছে কলকাতার বাইপাসের পাশে এক ভেড়িতে। সেখানেই তৈরি করা হয়েছিল জলবেশ্যাদের ভাসমান বেশ্যাপল্লী। সমস্যা ছিল সেন্সর নিয়েও। কিন্তু সে সব কিছুকে কাটিয়ে চলতি মাসেই শহরের পর্দায় আসছে জলবেশ্যার গল্প!