চার সিটি করপোরেশনে ভোট চলছে
ঢাকা জার্নাল: জাতীয় নির্বাচনের ছয় মাস বাকি থাকতে চার সিটি কর্পোরেশনের ১২ লাখেরও বেশি ভোটার শনিবার তাদের নতুন জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন।
প্রধান দুই রাজনৈতিক দলই স্থানীয় সরকারের ‘নির্দলীয়’ এ নির্বাচনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ায় রাজশাহী, খুলনা, বরিশাল ও সিলেট নগরীতে চলছে টান টান উত্তেজনা।
শনিবার সকাল ৮টায় একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শান্তিপূর্ণভাবেই ভোট শুরু হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত একটানা চলবে ভোটগ্রহণ।
চার শহরের মেয়র হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন মোট ১২ জন প্রার্থী। তবে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ভোটাররা মনে করছেন।
রাজশাহীতে ভোটগ্রহণ শুরুর আগেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটারদের লাইন দেখা যায়। উপশহর মডেল সরকারি প্রাথমিক প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং সাগরপাড়ার শাহ মখদুম কলেজ কেন্দ্রে সকাল ৮টায়ই দীর্ঘ লাইন দেখা যায়।
রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র সরকার বলেন, বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণ চলবে। তবে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিত থাকলে এরপরও ভোট নেয়া হবে।
নির্বাচন শান্তিপূর্ণভাবে হবে বলে আশা করছেন তিনি।
খুলনায় ভোটগ্রহণ শুরুরে সময় পাইনিয়র উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে লাইন দেখা যায়। এই কেন্দ্রেই ভোট দেবেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মনিরুজ্জামান মনি ভোট দেবেন আলীয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে।
বরিশালে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হওয়ায় ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা যায়।
নির্বাচনের আগে বরিশালে একজন মেয়র প্রার্থীর কর্মী গুলিবিদ্ধ, সিলেটে এক কাউন্সিলরকে মারধর এবং রাজশাহীতে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই ছিল। কোথাও বড় কোনো গোলযোগ না ঘটায় উৎসবের আমেজেই এ ভোটযুদ্ধ শেষ হবে বলে নির্বাচন কমিশন আশা করছে।
অবশ্য চার সিটিতে স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীর কর্মীরা ভোটারদের ‘ভয়ভীতি প্রদর্শন ও কালো টাকা’ ছাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
চারটি সিটি কর্পোরেশনেই সদ্য বিদায়ী মেয়ররা ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সমর্থনে আবারো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন। আর বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা দিচ্ছেন পরিবর্তনের ডাক।
রাজশাহীতে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগরের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন (তালা প্রতীক) এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মহানগর যুবদলের আহবায়ক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল (আনারস প্রতীক)।
এ সিটি কর্পোরেশনের তৃতীয় প্রার্থী হাবিবুর রহমান লড়ছেন চশমা প্রতীক নিয়ে।
খুলনায় আওয়ামী লীগের মহানগর সভাপতি ও বিদায়ী মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের (তালা প্রতীক) সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন বিএনপির মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান মনি (আনারস প্রতীক)। আর জাতীয় পার্টি (এ) জেলা শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু লড়ছেন দোয়াত-কলম প্রতীক নিয়ে।
বরিশালের বিদায়ী মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন হিরন টেলিভিশন এবং জেলা বিএনপির সভাপতি আহসান হাবিব কামাল আনারস প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। এ নগরীর তৃতীয় প্রার্থী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনের প্রতীক দোয়াত কলম।
সিলেটে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের আনারস এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরীর টেলিভিশনের মধ্যেই মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে স্থানীয় ভোটাররা মনে করছেন। অপর প্রার্থী সালাহ উদ্দিন রিমনের প্রতীক তালা।
পাশাপাশি সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে রাজশাহীতে মোট ২২১ জন, খুলনায় ১৮২ জন, বরিশালে ২১১ জন এবং সিলেটে ১৭৪ জন নির্বাচন করছেন।