‘ চর ও উপকূলীয় অঞ্চলে ঝরে পড়া রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হবে’
ঢাকা জার্নাল : চর ও উপকূলীয় অঞ্চলে বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ এবং মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়নে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘চর ও উপকূলীয় অঞ্চলের মেয়ে শিক্ষার্থীদের স্কুল থেকে ঝরে পড়া এবং প্রজনন ও মাতৃস্বাস্থ্য : সমস্যা ও জনগণের প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক জাতীয় সেমিনারে এই আহ্বান জানানো হয়।
বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘ (বিএনপিএস) ও পাবলিক পলিসি ফোরামের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএনপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর। সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান। আলোচনায় অংশ নেন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ডা. শহিদুল্লাহ শিকদার, সংসদ সদস্য ডা: মো. হাবিবে মিল্লাত, সেলিনা বেগম স্বপ্না ও হাজেরা সুলতানা, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, ডা. লেনিন চৌধুরী, ড. হান্নানা বেগম, সন্দ্বীপ পাবলিক পলিসি ফোরামের আহবায়ক আবুল কাশেম, পটিয়া পাবলিক পলিসি ফোরামের সদস্য মদিনা বেগম, কাজিপুর পাবলিক পলিসি ফোরামের আহবায়ক গাজী এসএম হাবিবুর রহমান, দি এশিয়া ফাউন্ডেশনের প্রদীপ প্রোগ্রামের কার্তিক চন্দ্র মন্ডল প্রমুখ। সেমিনারে গবেষণালব্ধ তথ্য উপস্থাপন করেন গবেষক শিরীন খান।
সেমিনারে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, দেশে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমলেও চর ও উপকূলীয় অঞ্চলের অবস্থার উন্নতি হয়নি। অপেক্ষাকৃত দূর্বল স্বাস্থ্যসেবা, দূর্গম এলাকায় ডাক্তারদের অনুপস্থিতি, গাইনি ডাক্তার না থাকা, অপারেশন সুবিধা না থাকা, অ্যাম্বুলেন্স না থাকা, অপ্রশিক্ষিত দাইয়ের হাতে সন্তান প্রসব এবং মায়েদের সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে জেলা সদরে যাতায়াতের অসুবিধার কারণে পথেই অসংখ্য মা মারা যান। এই অবস্থা পরিবর্তনে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে সক্রিয়, সেখানে লোকবল ও সেবা-সরঞ্জাম নিশ্চিত করা, তাদের প্রশিক্ষণ, দক্ষ টেকনেশিয়ান নিয়োগ এবং দুর্গম এলাকার জন্য বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া প্রয়োজন।
বিদ্যালয়ে ভর্তি ও ছেলে-মেয়ে বৈষম্য দূর করতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সত্ত্বেও শিক্ষা থেকে ঝরে পড়ার হার উদ্বেগজনক দাবি করে তারা বলেন, বিদ্যালয় থেকে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার হচ্ছে ২৭ শতাংশ। যা ছেলেদের ঝরে পড়ার হারের প্রায় দ্বিগুণ। চর এবং উপকূলীয় অঞ্চলের অবস্থা আরও শোচনীয়। তাই এবিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরী।
এসব বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের প্রতিশ্র“তি দিয়েছেন সেমিনারে উপস্থিত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী মোস্তাফিজুল রহমান। তিনি বলেন, চর, হাওর, পাহাড়, উপকূলীয়সহ অপেক্ষাকৃত দুর্গম এলাকার স্বাস্থ্য ও শিক্ষার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়া হবে। আগামী বাজেটে এসব এলাকার জন্য বিশেষ বরাদ্দ চাওয়া হবে। তবে এসব ক্ষেত্রে সেবাগুলো সঠিকভাবে জনগণ পাচ্ছে কি না সে বিষয়ে সচেতন নাগরিকদের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
ঢাকা জার্নাল, মার্চ ২৯, ২০১৪।