কে এই দেশপ্রেমিক? পর্ব ২
ঢাকা জার্নাল গুজব ডেস্ক: সম্প্রতি দেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল, পত্রিকাগুলোতে বাংলাদেশের একটি শীর্ষ টেলিকম প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন লক্ষ করা যাচ্ছে। বিজ্ঞাপনটিতে প্রশ্ন করা হচ্ছে, কে এই দেশপ্রেমিক? তবে, ‘কে এই দেশপ্রেমিক’ প্রশ্নটি শুধু বিজ্ঞাপনদাতা করলেও প্রশ্নটি আর তাদের মধ্যেই আবর্তিত থাকেনি। প্রশ্নটি এখন বাঙ্গালী জাতি ও তাদের বিবেকের।
জাতির প্রশ্নটিকেই প্রশ্নবিদ্ধ করতে সম্প্রতি ঢাকা জার্নালের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদক দল
খুঁজতে বের হয়েছিল ‘কে এই দেশপ্রেমিক’। অনেকটা কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বের হবার মতই – অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে কিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য। অনুসন্ধান দল সারা দেশ ঘুরে অবশেষে কয়েকজন দেশপ্রেমিকের সন্ধান পায়।
পর্ব:২
অনন্ত জলিল একজন দেশপ্রেমিক। তিনি নিজেকে সবসময় এমনটাই দাবি করেন। তিনি বলেন, দেশে যখন ভালো পাত্রের সংকট মারাত্নক অবস্থায় তখন আমি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে নিজেকে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তুলি।
তিনি বলেন “আমার কাছে মনে হয়েছে, দেশের অবিবাহিত নারী ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যেই নায়িকা বর্ষাকে বিয়ের আগে আমি আরো দুইটি বিবাহ করেছি। কয়েকবছর যাবত অবিবাহিত নারীদেরকে বিয়ের মাধ্যমে তাদেরকে সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান করছি। এর ফলে ভালো পাত্রের কিছুটা সংকট মেটাতে পারছি। শুধু এ কাজটির জন্যই আমি দেশের সেরা ‘প্রেমিক’ এবং দেশপ্রেমিক হবার যোগ্যতা রাখি।
জলিল বলেন, শুধু বিবাহিত নারীদের সামাজিক স্বীকৃতিই নয়, একক চেষ্টায় ইতিমধ্যে আমি তিনটি ডিজিটাল ছবি করেছি। বাংলাদেশের চলচিত্রেও আমার অবদান অনস্বীকার্য। আমি মনে করি, এসব কাজ একজন দেশপ্রেমিকের পক্ষেই যা সম্ভব।
হলমার্ক প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভির মাহমুদ নিজেকে দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন। কারন হিসেবে তিনি মনে করেন, দেশে দূর্নীতি বেড়ে গেছে। ফলশ্রুতিতে ব্যাংকগুলোতে কালো টাকার পাহাড় গড়েছে কতিপয় দূর্নীতিবাজেরা। ইদানিং নাকি ব্যাংকগুলোও তারল্যের আধিক্যে সমস্যায় পরেছিল!
তিনি বলেন, আমি সত্যিকার একজন দেশপ্রেমিক হয়ে কিভাবে এটা মেনে নিতে পারি? তাই, ভুয়া এলসি দেখিয়ে ব্যাংক থেকে মাত্র ২৬’শ কোটি টাকা লোন নিয়ে একটু তারল্য কমাতে চেষ্টা করেছি মাত্র। এর ফলে দেশের মানুষ এবং সরকার কোন প্রকার ক্ষতির শিকার হয়নি। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে শুধু মাত্র দূর্নীতিবাজেরা।
তানভির দাবি করে বলেন, দূর্নীতিবাজদের কালো টাকাকে কাজে খাটিয়ে দেশের বেকার সমস্যার কিছুটা সমাধান করার চেষ্টা করেছি মাত্র। আফসোস, সরকার এবং জাতি আমার মূল্যায়ন করেনি। তারই ফল হিসেবে আমাকে কারাবাস করতে হচ্ছে।
কখা হয় ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. দেলাওয়ার হোসেনের সাথে। তিনিও নিজেকে দেশপ্রেমিক মনে করেন। তিনি বলেন, আমিই সত্যিকার দেশপ্রেমিক। কারন হিসেবে তিনি দাবি করে বলেন, রাজধানী ঢাকায় প্রতিদিন লাখো মানুষ যানজটের শিকার হয়। দেশের সব গণমাধ্যম এই সমস্যাটি নিয়ে অনেক লেখালেখি করলেও সরকার শহরকে যানজট মুক্ত করতে পারেনি।
তিনি বলেন, এই সরকার ক্ষমতায় আছে প্রায় ৫ বছর যাবত। তারপরেও শহরকে যানজট মুক্ত করার কোন কাজ হাতে নেয়নি। জনগনের কষ্ট লাঘব করতে এবং শহরবাসীকে যানজটমুক্ত দেখার ইচ্ছাকে সত্যিতে পরিণত করতে আমার সংগঠন এখন পর্যন্ত ৩০০টি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। এসব কাজের জন্য আমার অবদান অনস্বীকার্য। আসছে কিছুদিনের মধ্যেই ধারাবাহিকভাবে রাজধানীর সব গাড়ি পুড়িয়ে শহরকে যানজনমুক্ত করবোই। সুতরাং, আমার চেয়ে আর কে বেশি বড় দেশপ্রেমিক হতে পারে?
দেলোয়ার বলেন, অচিরেই শহরবাসী রাজধানীতে আর কোন গাড়ি দেখতে পারবে না। এর ফলে তারা মুক্তভাবে হেটেই হেটেই অফিস, বাসায় পৌছাতে পারবে!
চলবে….?
আরো পড়ুন পর্ব ১: কে এই দেশপ্রেমিক?
নিচেই আছে।