এমপি রনির সঙ্গে সাংবাদিক একরামুল হকের পুরোনো স্মৃতি
একরামুল হক: সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি। নানা কারণে এখন বহুল আলোচিত একটি নাম। এই দফায় তাকে ঈদ কাটতে হচ্ছে কারাগারে।
আমাকেও এক সময় দু’টি ঈদ জেলে বসেই কাটাতে হয়েছিলো। তবে লেখাটি এসব বিষয় নিয়ে নয়। রনির সঙ্গে আমার পুরনো কিছু স্মৃতি রয়েছে। তারমধ্যে অন্যতম হলো, ঈদের স্মৃতি।
এখন থেকে প্রায় ২১ বছর আগের কথা। ৯২ সালের মার্চ/এপ্রিল হবে সম্ভবত। আমরা দু’জনই তখন মতিঝিল মধুমিতা সিনেমা হলের পেছনের সোনালী ব্যাংক কোয়ার্টারে সাবলেটে ব্যাচেলর থাকতাম। রনি ছিলেন ম্যারেড ব্যাচেলর। তার স্ত্রী থাকতো গ্রামের বাড়িতে। তিনি এখানে একটা রুমে ব্যাচেলর জীবন কাটাতেন। আমি ছিলাম ফুল ব্যাচেলর। আমি অন্য একটি রুমে সাবলেট থাকতাম। এ রুমগুলো এতোই ছোট ছিল যে, একটা সিঙ্গল খাট রাখার পর আর তেমন জায়গা থাকতো না।
রনি সেই সময় এসজিএস নামে কাস্টমস সংক্রান্ত একটি ইন্সপেকশন কোম্পানিতে চাকরি করতেন। পাশাপাশি খবর গ্রুপের সিনে ম্যাগাজিনগুলোতে লেখালেখি করতেন। আমি দৈনিক জনপদ-এ রিপোর্টিংয়ে। জনপদের মালিক, সম্পাদক ছিলেন মুজিবুল হায়দার চৌধুরী। তিনি তখনকার এনসিএল (বর্তমান এনসিসি ব্যাংক) এর চেয়ারম্যান। আমাদের পেমেন্ট ছিলো ভালো। এনসিএল থেকে বেতন হতো। কিন্তু, হঠাৎ করে মুজিবুল হায়দার চৌধুরী পত্রিকাটি বিক্রি করে দিলেন।
এনসিএল ব্যাংক না হয়েও অবৈধভাবে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালাচ্ছিলো। এ রকমের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ছিলো বিসিএল। তৎকালীন সরকার এ দু’টি প্রতিষ্ঠানের অবৈধ কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছিলো। এরমধ্যে বিসিএল সংকট কাটাতে পারেনি, তবে এনসিএল উৎরে যায় মুজিবুল হায়দার চৌধুরীর সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ঠতার সুবাদে। এরপর মুজিবুল হায়দার চৌধুরী পত্রিকার আর প্রয়োজন মনে করলেন না। বিক্রির সময় নিয়ম অনুযায়ী পাওনা যেভাবে মেটানোর কথা তাও মেটালেন না। যেসব কমিটমেন্ট করলেন সেগুলোও পরে রক্ষা করলেন না।
সবমিলিয়ে এক ধরনের সংকটের মধ্যে পড়ে গেলাম। এদিকে সামনে ঈদ। নতুনভাবে কখন কাজ শুরু করতে পারবো, কখন বেতন পাবো এ নিয়ে এক চরম অনিশ্চয়তা। মন-মেজাজ অত্যন্ত খারাপ। তাই ঈদে বাড়ি যাবার চিন্তা বাদ দিলাম।
রনিরও প্রায় একই অবস্থা। এসজিএস নামে যে কোম্পানিতে কাজ করতেন তারা বেতন দেয়নি। হাতে মোটেই টাকা-পয়সা নেই। তাই তিনিও ঈদে বাড়ি যাননি।
আগেই বলেছি সময়টা মার্চ/এপ্রিল। গ্রীস্ম আসছে আসছে। দু’জনই আলোচনা করলাম, সামনে তো গ্রীস্ম। ফ্যান না কিনলে থাকা যাবে না। এখনই কিনতে হবে। গরম পড়া শুরু হলে ফ্যানের দাম বেড়ে যাবে।
যেহেতু দু’জনই আলাদা রুমে থাকি, ফ্যান দরকার দু’টির। কিন্তু, নতুন দু’টি ফ্যান কেনার মতো সামর্থ্য আমাদের নেই। টেবিল ফ্যানের দামও বেশি। তাই পুরাতন সিলিং ফ্যান কেনার সিদ্ধান্ত নিলাম। পুরাতন দু’টি ফ্যান কিনতেও অন্তত দু’হাজার টাকা লাগবে। রনির পকেট এ সময় একেবারেই শূন্য। আমার কাছে টাকা আছে দু’হাজারের সামান্য বেশি। রনি বললেন, ভাই আমাকে ফ্যান কেনার জন্য এক হাজার টাকা ধার দিন। ঈদের পরই অফিস খুললে বেতন পেয়ে দিয়ে দেবো। আমি রাজি হলাম, তবে কড়া শর্তে। বললাম, এই হলো আমার একমাত্র অবলম্বন। ঈদের পরে এই টাকা না দিলে আমি বেকায়দায় পড়ে যাবো।
কাপ্তান বাজার-ঠাটারি বাজার এলাকার ইলেক্ট্রিশিয়ানদের কাছে পুরাতন ফ্যান পাওয়া যেতে পারে। তাই দু’জন হেঁটে সেখানে গেলাম। ঈদের পরের দিন। অনেক দোকানই বন্ধ। দু’একটা দোকান খোলা পেলাম। কিন্তু, পুরাতন ফ্যান পেলাম না। ইলেক্ট্রিশিয়ানরা বললো, এখন নেই, মাঝেমধ্যে আসে। যোগাযোগ রাখলে পাবেন। হতাশ হলাম।
হাঁটতে হাঁটতে নবাবপুর রোড অর্থাৎ নতুন ফ্যান এলাকায় গেলাম। যে বাজেট তাতে নতুন ফ্যান কেনা যাবে না। তারপরও যেহেতু কোনো কাজ নেই, অনেকটা সময় কাটানোর উদ্দেশ্যেই এখানে আসা। ঈদের কারণে প্রায় সব দোকানই বন্ধ। মাঝেমধ্যে দু’একটা খোলা দেখা যাচ্ছিলো। এর মধ্যে এক দোকানে দেয়ালে সাঁটানোর মতো ছোট ফ্যান দেখলাম। দাম আমাদের বাজেটের মধ্যেই পড়ে। যেহেতু সিলিং (পুরাতন) ফ্যান পাওয়াই যাচ্ছে না। এ ফ্যান কিনলেও গরমকাল কিছুটা হলেও ঠেকানো যাবে। সিদ্ধান্ত নিলাম এ ফ্যানই দু’টি কিনবো। তবে আরো দু’একটি দোকান দেখে নিই।
বেশ কয়েকটি দোকান পরে আরেকটি দোকান খোলা পেলাম। এ দোকানে দেয়াল ফ্যান নেই। দোকানি বললেন, কী খুঁজছেন? বললাম, দেয়াল ফ্যান নেই আপনার কাছে? দোকানি বললেন, ওই ফ্যান নিয়ে কী করবেন? ওগুলো ভালো বাতাস দেয় না। তাছাড়া কিছুদিন পর নষ্ট হয়ে যাবে। সিলিং ফ্যান নিয়ে যান। লাইফ গ্যারান্টি। জানালাম, আমাদের বাজেটে সিলিং ফ্যান কুলোবে না। দোকানি জিজ্ঞেস করলেন, বাজেট কতো? বললাম, টাকা আছে দু’হাজার। লাগবে দু’টো ফ্যান। দোকানি বললেন, বাজেট আরেকটু বাড়ান। দু’টো ফ্যান দিয়ে দেবো। বললাম, বাজেট মোটেও বাড়ানো সম্ভব নয়। দু’টো ফ্যানের জন্য প্রথমে ২৫০০ টাকা চাইলেন। এ থেকে কমাতে কমাতে ২১০০ টাকায় আসলো। বললাম, আমরা দু’হাজার টাকার বেশি খরচ করতে পারছি না। টাকা নেই। তারপর দোকানি বললেন, লাভ না হয় না-ই করলাম। অন্ততঃ আরো ৫০ টাকা দিন। তা না হলে লস হবে। কাতরকণ্ঠে বললাম, এ টাকাও দিতে পারবো না। কারণ, আমাদের কাছে দু’হাজার টাকার অতিরিক্ত শুধুমাত্র রিক্সা ভাড়াটা আছে। আর কোনো টাকা নেই।
এ সময় দোকানি অত্যন্ত দয়ার্দ্র কণ্ঠে বললেন, আপনারা কী করেন? বললাম দু’জনই সবেমাত্র পাস করে বেরিয়েছি। ছোটখাটো চাকরি করছি। সংকটে আছি। দোকানি জানালেন, তিনিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স পাস করে বেরিয়েছেন কিছুদিন হলো। আমাদের প্রতি বেশ দয়া দেখিয়ে তার কর্মচারীকে বললেন, লস হলে হবে। ওনাদের দু’টি সিলিং ফ্যান বের করে দাও। রূপসা কোম্পানির ৪৮ ইঞ্চির দু’টি ফ্যান আনা হলো। বললাম, পরীক্ষা করে দিন, ঠিক আছে কিনা। দোকানি বললেন, পরীক্ষা করে দিচ্ছি। তারপরও কোনো সমস্যা হলে নিয়ে আসবেন। সঙ্গে সঙ্গে পাল্টে দেবো।
পুরনো ফ্যানের বাজেটে নতুন ফ্যান। এই দুর্দিনেও দু’জনের মন বেশ খুশি। রুমে নিয়ে এলাম। কিন্তু, দু’টি ফ্যান ফিটিংয়ের জন্য ৮০ টাকা দরকার। ইলেক্ট্রিশিয়ানকে দেয়ার মতো এ টাকাও আমাদের দু’জনের পকেটে নেই। রনি বললেন, তিনি ফ্যান সিলিংয়ে ফিটিং করতে পারেন, তবে সরাসরি। রেগুলেটর লাগাতে পারেন না। সিদ্ধান্ত নিলাম তা-ই হবে। রনি প্রথমে আমার ফ্যানটা রেগুলেটর ছাড়াই ফিটিং করে দিলেন। পরে নিজেরটাও করলেন।
ঈদের পর কথামতো আমার পাওনা টাকাটা পরিশোধ করে দিলেন। প্রায়ই দু’জনের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হতো। সম্পর্ক বেশ ভালো ছিলো। কয়েক মাস পর রনি তার বাসস্থান পরিবর্তন করলেন। ফলে যোগাযোগ তেমন একটা হতো না। একদিন হঠাৎ দেখা মতিঝিলে। বললেন, সংবাদপত্রে আর লেখালেখি করেন না। এসজিএস’র চাকরিও ছেড়ে দিয়েছেন। নিজেই কয়েকজন মিলে কাস্টমস সংশ্লিষ্ট ইন্সপেকশন প্রতিষ্ঠান গড়েছেন। আমাকে নিয়ে গেলেন তাদের অফিসে। মতিঝিল মডার্ন ম্যানশনের ১১ তলায় ছোট এক রুমের একটা অফিস। মাঝে আরেকদিন দেখা হলো। বললেন, অফিস দিলকুশায় স্থানান্তর করেছেন। এরপর আর দীর্ঘকাল রনির সঙ্গে আমার সাক্ষাতই হয়নি। সম্ভবত ২০০৮ এর মাঝামাঝি দিকে একদিন হঠাৎ তোপখানা রোড মেহেরবা প্লাজার নীচে দেখা। গ্যারেজ থেকে গাড়ি বের হচ্ছে। গাড়িতে উঠার জন্য দাঁড়িয়েছেন। বললেন মেহেরবা প্লাজায় অফিস। খুব আন্তরিকতার সঙ্গে কথা হলো। গাড়িতে উঠার জন্য বললেন। বললাম, আমি কোথাও যাচ্ছি না, এখানে পল্টনেই দরকার আছে। বললেন, এটুকুই উঠুন। জোর করে তুললেন। পল্টন মোড়েই আমি নেমে গেলাম। দামি গাড়ি। বুঝলাম, গাড়ি দেখানোর জন্যই মূলত এতোটা জোর করে তোলা হয়েছে।
২০০৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে সচিবালয়ে এক সচিবের দফতরে অন্য এক ভিজিটরসহ আলোচনা হচ্ছিল। আসলো রনির প্রসঙ্গ। আমি বললাম, কোন রনি? তারা বললেন, এমপি গোলাম মাওলা রনি। আমি তখনো জানি না, রনি ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের টিকেটে নির্বাচন করে জাতীয় সংসদের সদস্য হয়েছেন। আমি তখন সচিব এবং ওই ভিজিটরকে রনির চেহারার বর্ণনা দিলাম। বললাম, মেহেরবা প্লাজায় অফিস আছে, সেই রনি কিনা? তারা বললেন, হ্যাঁ, সেই রনি। পটুয়াখালীর এমপি। বললাম, তার বাড়ি তো যতোটা জানি ফরিদপুর এবং তিনি কখনো রাজনীতিতেই যুক্ত ছিলেন না। আওয়ামী লীগ থেকে টিকেট পেলেন কীভাবে? পুরনো স্মৃতির কথা ভেবে দেখলাম, কখনো তাকে কোনো দলের নেতা-কর্মী বলে মনে হয়নি। এমনকি রাজনীতি বিষয়ে আলাপ করতেও তাকে উৎসাহী দেখা যায়নি।
যা-ই হোক, এর কিছুদিন পর সচিবালয় চত্বরেই রনির সঙ্গে দেখা হলো। তিনি আমাকে প্রায় জড়িয়ে ধরলেন। বললেন, একরাম ভাই, আপনি সংবাদপত্র জগতে অনেক ভালো অবস্থানে পৌঁছে গেছেন। সচিবালয়ের সবাই দেখছি, আপনাকে ভালো জানে। আমি বললাম, আপনিও অনেক ভালো অবস্থানে পৌঁছেছেন। রাজনীতির ‘র’-ও করতেন না। এখন এমপি হয়েছেন। কিছুদিন আগ পর্যন্ত আমি তো জানতামই না, আপনি যে এমপি হয়েছেন। ভাই, আমার কিন্তু সেই সিলিং ফ্যানটা এখনো আছে।
এ প্রসঙ্গ আসার পর রনি কিছুটা বিব্রত হলেন এবং এড়িয়ে গেলেন। বললেন, আপনার সঙ্গে আমার কাজ আছে। সচিবালয়ে কিছুটা ঘোরাঘুরি করতে হবে। এরপর আরো দু’একদিন সচিবালয়ে রনির সঙ্গে দেখা হয়েছে। আন্তরিকতার সঙ্গে কুশল বিনিময়ও হয়েছে। একবার বেশ জোরাজুরি করে তার অফিসে চা’র দাওয়াত দিয়ে নিয়ে গেলেন। এলাকার রাজনৈতিক কোন্দলসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ করলেন। তাকে বেশ আত্মপ্রত্যয়ী মনে হলো। সবকিছু সাইজ করে ফেলবেন, বললেন। ওই সময় পটুয়াখালীর বিভিন্ন পত্রিকার সংবাদদাতা ও সাংবাদিকদের সঙ্গেও তার বেশ রেষারেষি চলছিলো। সাংবাদিকদের মামলা, হয়রানিসহ নানাভাবে নাজেহাল করে চলছিলেন। আমার সামনেই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছিলেন। আমি বাধা দিলাম। বললাম, সাংবাদিকদের সঙ্গে এভাবে রেষারেষিতে যাওয়া ভালো নয়। আমার কথার কোন গুরুত্বই দিলেন না। বরং উল্টো সাংবাদিকদের সবাইকে একযোগে খারাপ বলে আখ্যায়িত করলেন। আমার কোনো যুক্তিই মানতে চাইলেন না।
কয়েক মাস পরের কথা। হঠাৎ একদিন আমাকে ফোন করলেন। বললেন, প্রেস কাউন্সিলে আপনার কি যেন একটা মামলা আছে। বললাম, হ্যাঁ, কাস্টমস কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দায়ের করা মামলা। তিনি বললেন, আমিতো প্রেস কাউন্সিলের বিচার কমিটির সদস্য। আপনি কাল আসুন। আমাকে একটু বিষয়টা বুঝিয়ে বলুন। পরদিন আমি মতিউর রহমানের অনিয়ম-দুর্নীতি নিয়ে ছাপা হওয়া নিউজের সকল ডকুমেন্টসহ তার অফিসে গেলাম। তিনি আন্তরিকতার সঙ্গে সব বুঝে নিলেন। কিন্তু, আমার কিছুটা খটকা লাগলো। সন্দেহ হলো কারণ, রনির মূল ব্যবসা কাস্টমসে। সে নিশ্চয়ই মতিউরের বিরুদ্ধে যাবে না। বরং আমি যে ডকুমেন্টগুলো সরবরাহ করেছি এগুলো ব্যবহার করে হয়তো তিনি মতিউরের সঙ্গেই একটা গোপন সমঝোতায় পৌঁছাবেন। যা সন্দেহ করেছিলাম ঠিক তাই। প্রেস কাউন্সিলের বিচার কমিটির পরবর্তী বৈঠকে প্রকাশ্যেই তিনি দুর্নীতিবাজ মতিউরের পক্ষে অবস্থান নিলেন। ফলে আমি বাধ্য হলাম, বিচার কমিটির এ সদস্যের বিরুদ্ধে আপত্তি দিতে। পরে জানলাম, প্রেস কাউন্সিলের বিচার কমিটিতে জাতীয় সংসদ সদস্য রাখার বিধান আছে। এ সুযোগে রনি স্পিকারের কাছে তদবির করে প্রেস কাউন্সিলে ঢুকেছেন। এখানে ঢোকার তার মূল উদ্দেশ্য ছিলো, সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকদের নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখা। যেহেতু ওই সময় বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে ধারাবাহিক প্রতিবেদন ছাপা হচ্ছিলো।
আমার অত্যন্ত খারাপ লাগছে, পুরনো বন্ধু রনি ক্ষমতাসীন দলের এমপি হয়েও এখন তাকে কারাগারে ঈদ কাটাতে হচ্ছে। যদিও আমি নিজেও পর পর দু’টি ঈদ কারাগারে কাটিয়েছি। কিন্তু, সরকার আমাকে কারাগারে পাঠানোর ঘটনাকে গণমাধ্যমসহ সর্বস্তরের মানুষ ‘অন্যায়’ বলে আখ্যায়িত করেছে এবং সরকারের প্রতি ধিক্কার জানিয়েছে। আমার প্রতি জানিয়েছে প্রবল সহানুভূতি। আমাকে গ্রেফতার নিয়ে বিদেশেও অনেক প্রতিবাদ হয়েছে। তাই আমি জেলের মধ্যে থেকেও কখনো হতাশ বা শঙ্কিত হইনি। অন্যদিকে, রনির ব্যাপারটা সম্পূর্ণ উল্টো বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। পুরনো বন্ধু রনির ভবিষ্যত ক্যারিয়ার নিয়ে আমি আজ অত্যন্ত শঙ্কিত।
উল্লেখ্য, পুরনো স্মৃতির সেই ফ্যানটি ২০১১ সালে শীর্ষ নিউজ ও শীর্ষ কাগজ বন্ধ হবার সময় পর্যন্ত ওই অফিসে ছিল এবং ভালোভাবেই চলছিলো। এবার অফিস নেয়ার সময় স্টকে অন্যান্য ফ্যানগুলো পেলেও সেই পুরনো ফ্যানটিকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি।
লেখক- একরামুল হক, সম্পাদক, শীর্ষনিউজডটকম
সৌজন্যে- শীর্ষনিউজডটকম