আবার সুদিনে ফিরেছে পাট
পাট হারিয়ে গেছে, এ ধারণা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে এসেছে। সবাই ভেবেছিল পাটের সুদিন শেষ। কিন্তু পাট হারিয়ে যায়নি, আবারও পাটের সুদিন ফিরেছে। এর বড় প্রমাণ বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরে পাটখাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন।
শুক্রবার রাজধানীর অফিসার্স ক্লাবে পাট দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী এ কথা বলেন।
গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে পাট পণ্যের বিস্তার ঘটেছে। অনেকে আগে বলতো পাট মরে গেছে, কিন্তু এখন থেকে মনে করতে হবে পাঠ জেগে উঠেছে। কারণ চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যে ৬শ ১৬ দশমিক ২০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি আয় করেছি আমরা। এই আয় গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি।
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘প্লাষ্টিকের অতি ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ক্ষতি বেড়েছে। পরিবেশ রক্ষায় পাটের তৈরি বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছে বাংলাদেশ। আমরা ইতোমধ্যে ২৮২টি বহুমুখী পণ্য উৎপাদন করছি। যা অনেকেই জানেন না। তাদের কাছে অনুরোধ আপনারা পাট মেলায় যাবেন এবং পাট সম্পর্কে জানবেন। সেখানে গেলে কোনো না কোনো পণ্য আপনাদের পছন্দ হবেই। এ বিশ্বাস আমাদের আছে। ’
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিমু মন্সী বলেন, ‘একটা সময় আমরা পাট দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম। কিন্তু আমরা সে অবস্থান ধরে রাখতে পারিনি। এখন আমরা আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছি। আমাদের পাটের সোনালী আঁশের স্বপ্ন শুরু হয়েছে। এটি আমরা নিশ্চিত করবো। আর বেশি দিন নেই যেখানে বিশ্ব বাজারে পলিথিন ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হবে। ‘
এ সময় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মির্জা আজম,এমপি, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) সওদাগর মুস্তাফিজুর রহমানসহ বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন দপ্তর/সংস্থার কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার সকালে ‘সোনালি আঁশের সোনার দেশ, মুজিববর্ষে বাংলাদেশ’- স্লোগানে জাতীয় পাট দিবস উপলক্ষ্যে এক বনার্ঢ্য র্যালী অনুষ্ঠিত হয়েছে। সকাল সাড়ে আটটার দিকে সচিবালয় প্রাঙ্গন থেকে র্যালীটি শুরু হয়। এরপর র্যালীটি জিপিও মোড় হয়ে, পল্টন ও কাকরাইল সড়ক দিয়ে ঢাকা অফিসার্স ক্লাবে গিয়ে শেষ হয়। এর আগে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব লোকমান হোসেন মিয়া ফিতা কেটে এবং পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে র্যালী জাতীয় পাট দিবসের শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) সওদাগর মুস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত সচিব আবুল কালাম আজাদ, বিটিএমসির চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুজ্জামান প্রমূখ।
ঘোড়ার গাড়ি ও ব্র্যান্ড পার্টির বর্ণিল আয়োজনে র্যালিতে পাট অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশন, জেডিপিসি, বিজেএমএ, বাংলাদেশ জুট গুডস এসোসিয়েশন, বিজিএ সহ সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন পাটকল কারখানার শ্রমিক এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ অংশ নেন।