অস্ত্র মামলায় সঞ্জয় দত্তের পাঁচ বছরের সাজা
ঢাকা জার্নাল: ১৯৯৩ সালে ভারতের মুম্বই শহরে ঘটে যাওয়া ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযু্ক্ত ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির আদেশ বহাল রেখেছে দেশটির শীর্ষ আদালত।
অভিযুক্তদের কাছ থেকে বে আইনীভাবে অস্ত্র কিনে মজুত করার অপরাধে হিন্দী চলচ্চিত্রের নায়ক সঞ্জয় দত্তকে পাঁচ বছরের কারাবাসের আদেশ দিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট৻
বাকি অভিযুক্তদের মধ্যে ১০ জনের ফাঁসির সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে৻
১৮৯ জন দোষী ব্যক্তি তাঁদের সাজার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে আপীল করেছিলেন, একই সঙ্গে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো বা সি বি আই ৪৮ জনকে মুক্তি দেওয়ার নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধেও আপীল করেছিল৻
সুপ্রীম কোর্টের দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ আজ তাদের রায় ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন যে মুম্বই ধারাবাহিক বিস্ফোরনের মূল পরিকল্পনা যে দাউদ ইব্রাহিম, টাইগার মেমন ও ইয়াকুব মেমন করেছিলেন – তা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে৻ তাই মূল দোষী সাব্যস্ত হওয়া ইয়াকুব মেমনের ফাঁসির সাজা বহাল রাখা হল।
এই মামলায় হিন্দী চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়ক সঞ্জয় দত্তের ৫ বছরের কারাদন্ডের নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রীম কোর্ট৻ বিস্ফোরণের মূল চক্রান্তকারীদের কাছ থেকে বে আইনীভাবে একটি পিস্তল ও একটি এ কে ৪৭ রাইফেল কিনেছিলেন তিনি৻ সন্ত্রাস দমন আইন অনুযায়ী আনা ওই অভিযোগে এর আগে প্রায় দেড় বছর জেলে ছিলেন সঞ্জয় দত্ত।
তাঁর আইনজীবীরা বলছেন বাকি সাড়ে তিন বছরের সাজা খাটতে হবে ওই বলিউড তারকাকে।
মি. দত্তের আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডের কথায়, “রায়ের প্রতিলিপি আজকেই হয়তো পাওয়া যাবে৻ তারপরে মি. সঞ্জয় দত্তকে আমরা পরামর্শ দেব পরবর্তী পর্যায়ের জন্য৻ একমাসের মধ্যে আত্মসমর্পন করতে বলেছে আদালত৻ দেড় বছর তিনি জেলে ছিলেন৻ সাজার বাকি অংশটা এবার জেলে থাকতে হবে তাঁকে – এ ব্যাপারে আগে থেকেই মি. দতকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করে রেখেছিলাম আমরা।”
সঞ্জয় দত্ত প্রখ্যাত হিন্দী চলচ্চিত্রাভিনেতা সুনীল দত্ত ও নায়িকা নার্গিসের পুত্র । আজকের রায় ঘোষণার আগেই আদালত কক্ষে হাজির হয়েছিলেন তাঁদের কন্যা ও সঞ্জয়ের বোন প্রিয়া দত্ত৻ রায় শোনার পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া দত্ত বলেন যে তাঁর কিছুই বলার নেই।
এদিনের রায় ঘোষণার সময়ে পাকিস্তানের ভূমিকার নিন্দা করেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ পাশাপাশি এদিন মুম্বই পুলিশেরও সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট৷ কীভাবে মুম্বই পুলিশের চোখ এড়িয়ে অত্যাধুনিক অস্ত্র ও আরডিএক্স মুম্বইয়ে ঢুকল – তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সর্বোচ্চ আদালত।
১৯৯২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংস হওয়া ও তারপরে দেশব্যপী ব্যাপক হিন্দু-মুসলমান দাঙ্গার হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই ভারতের বাণিজ্যিক রাজধানী মুম্বইতে ১৩টি জায়গায় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়৻ মারা গিয়েছিলেন ২৫৭ জন, আহত হয়েছিলেন সাতশোরও বেশী মানুষ। সূত্র: বিবিসি