অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের প্রত্যাশা ইইউর
ঢাকায় সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শ্রম অধিকার বিষয়ক প্রতিনিধিদল আশা করেছে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সরকার গঠিত হবে।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
বুধবার (১৫ নভেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় প্রতিনিধিদল তিন সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে অংশ নেয়া তিন সচিবের মধ্যে ছিলেন পররাষ্ট্র সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, বাণিজ্য সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব এহছানে ইলাহী। বৈঠকে ইইউ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সংস্থাটির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভাগের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক পাওলা প্যাম্পালোনি।
প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক শেষে মাসুদ বিন মোমেন জানান, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে তারা কোনো প্রশ্ন তোলেনি। শ্রম অধিকারের পাশাপাশি মানবাধিকারের কিছু কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ইউপিআর’য়ে আমাদের যে সাকসেসফুল ডিফেন্স সেটাও তাদের বিস্তারিত জানিয়েছি। তারাও সেটা ফলো করেছে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তারা আশা করে ফ্রি ও ফেয়ার ইলেকশনের মাধ্যমে একটি সরকার গঠিত হোক।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, মানবাধিকারের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। যেমন ফ্রিডম অব অ্যাসোসিয়েশন, ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন, বেআইনি আটক ইউপিআর’য়ে আলোচনা করেছি। সেগুলো তাদের অবহিত করেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন নিয়ে আলাদা করে তারা আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। তবে আমরা বলেছি, ফ্রি অ্যান্ড ফেয়ার ইলেকশনের জন্য যে পরিবেশ দরকার, আজ রাতেই সম্ভবত তফসিল ঘোষণা হবে, তারপর আশা করছি, সব দল নির্বাচনে অংশ নেবে।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব আরও বলেন, ইইউ প্রতিনিধিদলের সফর পূর্ব নির্ধারিত, নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো সম্পর্ক নেই।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ৫৬ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। তবে তারা বলেছে, এটা নিয়ে সব পক্ষ একমত হতে পারেনি।
বৈঠক শেষে বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, দেশের রপ্তানির শতকরা ৮৫ শতাংশ গার্মেন্টস থেকে আসে। সুতরাং এলডিসি গ্রাজুয়েশন পরবর্তীতে যদি জিএসপি প্লাস থাকে একই সঙ্গে বাইরে থেকে গার্মেন্টস শিল্প যদি শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, তাহলে তো অর্থহীন, তাই আমরা বলেছি, এটা যুক্ত করতে হবে। আমাদের প্রত্যাশা, তারা যেন সেভাবে রিপোর্ট দেন। বাংলাদেশ ৩২টা কনভেনশন অনুস্বাক্ষর করেছে। সেগুলো আমরা বাস্তবায়নের বিভিন্ন পর্যায়ে আছি। এটা চলমান প্রক্রিয়া। কোনো দেশই বলতে পারবে না, সব বাস্তবায়ন করে ফেলেছি। ২০২৯ সালে আমাদের যেভাবেই হোক জিএসপি প্লাসে যেতে হবে।
তিনি বলেন, পোশাক খাতে আমাদের সাফল্যকে কোনোভাবেই শাস্তি দেওয়া যাবে না। এটাকে উৎসাহিত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের শ্রম খাতের অগ্রগতি দেখতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন প্রতিনিধিদল গত ১২ নভেম্বর পাঁচ দিনের সফরে ঢাকায় আসে। প্রতিনিধিদল ঢাকা সফরকালে শ্রম আইন সংশোধন পরবর্তী পরিস্থিতি, শিশুশ্রম বিলোপ ও শ্রমিকবিরোধী সব ধরনের সহিংসতা নিরসনসহ নানা বিষয়ে আলোচনা করছে।