‘অনুমতি ছাড়াই ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ঢুকে ছবি-ভিডিও তুলতে পারবেন সাংবাদিকরা’
অনুমতি ছাড়াই মিডিয়াকর্মীরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করতে পারবেন এবং ছবি-ভিডিও তুলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।
তিনি বলেছেন, ‘মিডিয়াকর্মীরা ভোটকেন্দ্রের বাইরে থাকবেন না, ভেতরে থাকবেন। তারা ভিডিও-ছবি তুলতে পারবেন। এজন্য প্রিসাইডিং কর্মকর্তার অনুমতি নিতে হবে না। সরাসরি প্রবেশ করতে পারবেন। পর্যবেক্ষকরাও সরাসরি প্রবেশ করতে পারবেন। মিডিয়া সত্য-মিথ্যা প্রকৃত তথ্যটা জনগণকে তাৎক্ষণিকভাবে জানিয়ে দিতে পারবেন। এসবের জন্য কারও অনুমতি নিতে হবে না।’
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকালে চট্টগ্রাম নগরের পিটিআই মিলনায়তনে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে নগরের এলজিইডি মিলনায়তনে চট্টগ্রাম জেলার ১৬টি আসনের প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সিইসি।
আগের রাতে ভোট না হওয়ার বিষয়ে শতভাগ নিশ্চয়তা দিচ্ছি উল্লেখ করে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আগের রাতে ভোট নিয়ে যেসব কথা প্রচলিত রয়েছে, তা ৯৯ নয়, ১০০ শতাংশ নিশ্চিত করছি, সেটি কোনও অবস্থায় হবে না। এজন্য অনেক কেন্দ্রে ব্যালট সকালে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি অ্যাপস তৈরি করেছি, যেখানে দুই ঘণ্টা পর পর প্রতি কেন্দ্রে কত শতাংশ ভোট পড়লো তার ইনপুট দেওয়া হবে। মোবাইলের মাধ্যমে অ্যাপস ডাউনলোড করে সেটি সবাই জানতে পারবেন। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে ১০টার সময় দেখা গেলো ১০ শতাংশ ভোট পড়লো, কিন্তু ১২টার দিকে গিয়ে হঠাৎ ৮০ শতাংশ হয়ে গেলো, এটি বিশ্বাসযোগ্য হবে না। এজন্য আমরা বিভিন্ন পরিমাপক নিয়েছি, যাতে ভোটগ্রহণের সত্যতা মানুষের মাঝে ফুটে ওঠে।’
হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘ভোট চলাকালে যদি কোনও পেশিশক্তির উদ্ভব ঘটে, তাহলে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত হওয়ার পর কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রার্থীদের বলেছি, এ ধরনের ঘটনা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে হবে না। ভোট আরেক জায়গায় চলে যাওয়ার কোনও আশঙ্কা নেই। এমন পরিস্থিতি প্রিসাইডিং অফিসারদের ভোট বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। তিনি যদি বন্ধ না করেন রিটার্নিং অফিসার অবহিত হলে তিনি বন্ধ করে দেবেন। তিনিও যদি বন্ধ না করেন, আমরা ঢাকা থেকে অবহিত হলে বন্ধ করে দেবো।’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার আরও বলেন, ‘যদি প্রতিটি কেন্দ্রে গণনা সঠিকভাবে হয়ে যায়, তাহলে নিশ্চিতভাবে ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়ে যাবে। আর যদি মাঝখানে কোনও পেশিশক্তির উদ্ভব ঘটে, সেগুলো তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করবেন। আমরা সেসব কেন্দ্রের ভোট বন্ধ করে দেবো। এভাবে আমরা প্রত্যেক প্রার্থীকে আশ্বস্ত করার চেষ্টা করেছি। তারা অনেকে আশ্বস্ত হয়েছেন। ভোট যেখানে দেওয়া হয়, ওখান থেকে আরেক জায়গাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। সেটি আমরা শতভাগ নিশ্চিত করতে পারি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন কমিশনের সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার তোফায়েল আহমেদ, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায়, চট্টগ্রামের ডিআইজি নুরে আলম মিনা, জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও জেলা পুলিশ সুপার এসএম শফিউল্লাহ। চট্টগ্রাম বিভাগের প্রত্যেক উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসিরা সভায় উপস্থিত ছিলেন।