অচিরেই কামারুজ্জামানের রায়
ঢাকা জার্নাল: মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলার সব কার্যক্রম শেষ হয়েছে। যে কোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে।
এর আগে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। মঙ্গলবার আসামিপক্ষের যুক্তিতর্কের জবাবে রাষ্ট্রপক্ষের পাল্টা যুক্তিতর্ক খণ্ডন করা হয়।
এরপর আইন অনুসারে মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার আসামিপক্ষে তৃতীয় ও শেষ দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন কামারুজ্জামানের প্রধান আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক। এর আগে গত ৩ ও ৪ এপ্রিল তিনিই যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন।
অন্যদিকে গত ১৭ মার্চ থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ৪ কার্যদিবসে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন রাষ্ট্রপক্ষ। চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপু, প্রসিকিউটর ড. তুরিন আফরোজ, অ্যাডভোকেট সৈয়দ হায়দার আলী, অ্যাডভোকেট এ কে এম সাইফুল ইসলাম ও অ্যাডভোকেট নুরজাহান বেগম মুক্তা রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন।
কামারুজ্জামানের পক্ষে গত ৬ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ৫ জন সাফাই সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা হচ্ছেন মো. আরশেদ আলী, আশকর আলী, কামারুজ্জামানের বড় ছেলে হাসান ইকবাল, বড় ভাই কফিল উদ্দিন এবং আব্দুর রহিম।
অন্যদিকে গত বছরের ১৫ জুলাই থেকে এ বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) আব্দুর রাজ্জাক খানসহ রাষ্ট্রপক্ষের মোট ১৮ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দেন।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেন, ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহ আনন্দমোহন কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হামিদুল হক, শেরপুরে কামারুজ্জামানের স্থাপন করা আলবদর ক্যাম্প ও নির্যাতন কেন্দ্রের দারোয়ান মনোয়ার হোসেন খান মোহন, মুক্তিযোদ্ধা জহুরুল হক মুন্সী বীরপ্রতীক, মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল মান্নান, মুক্তিযুদ্ধের শহীদ গোলাম মোস্তফা হোসেন তালুকদারের ছোট ভাই মোশাররফ হোসেন তালুকদার, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা বদিউজ্জামানের বড় ভাই ডা. মো. হাসানুজ্জামান, লিয়াকত আলী, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের পুত্র জিয়াউল ইসলাম, অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের সন্তান মো. জালাল উদ্দিন, শেরপুর জেলার ‘বিধবাপল্লী’ নামে খ্যাত সোহাগপুর গ্রামের নির্যাতিত তিন নারী সাক্ষী (ক্যামেরা ট্রায়াল), মুজিবুর রহমান খান পান্নু এবং দবির হোসেন ভূঁইয়া।
আর জব্দ তালিকার প্রথম সাক্ষী হলেন বাংলা একাডেমীর সহকারী গ্রন্থাগারিক এজাব উদ্দিন মিয়া ও মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের তথ্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা আমেনা খাতুন।
গত বছরের ৪ জুন কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।
তার বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা, গণহত্যা, নির্যাতন, দেশত্যাগে বাধ্য করাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাত ধরনের ঘটনায় অভিযোগ আনা হয়।
উল্লেখ্য, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ২০১০ সালের ২৯ জুলাই কামারুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার দেখানো হয়।
কামারুজ্জামানের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩১ জানুয়ারি ৮৪ পৃষ্ঠার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেন ট্রাইব্যুনাল-১।
এরপর ১৬ এপ্রিল চিফ প্রসিকিউটর গোলাম আরিফ টিপুর এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কামারুজ্জামানের মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে ট্রাইব্যুনাল-২ এ স্থানান্তর করা হয়।