শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সীমা নির্ধারণ
মার্চ ৪, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়িয়ে ব্যাংক কোম্পানী (সংশোধন) আইন, ২০১৩-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূঁইঞা সাংবাদিকদের এ তথ্য দেন।
তিনি বলেন, “বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রস্তাবে আইনটি সংশোধন করা হচ্ছে। তবে সরকারই চায় এই আইনটি সংশোধন করতে।
১৯৯১ সালে ব্যাংক কোম্পানী আইনটি তৈরি করা হয়েছিল। ২০০৩ সালে বড় ধরণের পরিবর্তন করা হয়। এরপর ১০ বছর পার হয়েছে। এর মধ্যে অনেক পেক্ষাপট পরিবর্তন হয়েছে। দেশে এখন আন্তর্জাতিক রিফ্লেক্ট, বিশেষ করে ক্রস বর্ডার ব্যাকিং বেশি সম্প্রসারিত হয়েছে।”
কেন্দ্রীয় ব্যংকের ক্ষমতা বৃদ্ধি
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্তৃত্ব বাড়ানো হয়েছে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “সংশোধন আইনে ব্যাসেল প্রিন্সিপ্যালের সঙ্গে সংগতি রাখা হয়েছে। প্রথমে ১৯৭৪ সালে ১০টি দেশ ব্যাসেল প্রিন্সিপ্যাল শুরু করে একটি নীতিমালা ঠিক করেছিল। এখন প্রায় ২৭টি দেশ ব্যাসেল কমিটিতে আছে। এই কমিটি ব্যাংকিং গাইড হিসেবে কিছু নীতিমালা ধারণ করে। এই সংশোধনীতে ব্যাসেল প্রিন্সিপ্যালের সাথে সংগতি রাখা হয়েছে। এই আইনের কোন বিষয় যদি স্থগিত করতে হয় তা হলে তা বাংলাদেশ ব্যাংক করবে। আগে এটি সরকার করতো। এটি করা হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংককে কর্তৃত্ব দেওয়ার জন্য।”
মন্ত্রিপরিষদ সচিব সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, “ব্যাংক পরিচালনার ক্ষেত্রে নীতিমালা করবে সরকার। ব্যাংক তাদের দায়িত্ব পালন করবে।”
পরিচালকের মেয়াদ বৃদ্ধি
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “পরিচালকের মেয়াদ বৃদ্ধি করে তিন বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। পরিচালক হিসেকে তিন বছর করে পরপর দুই ময়াদে থাকতে পারবেন। এর বেশি থাকতে হলে মাঝখানে গ্যাপ দিতে হবে। বর্তমানে যারা পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তাদেরও এ সুযোগ রয়েছে আইনে। পরিচালক হিসেকে দায়িত্ব পালনকালে অন্য ব্যাংক বা বিভাগে দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না।”
জরিমানা
সচিব জানান, শেয়ার সংক্রান্ত্র বিধান লংঘন করলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সর্বোচ্চ ২০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। এই লংঘন অব্যাহত থাকলে প্রথম দিনের পর প্রত্যেক দিনের জন্য ৫০ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ব্যক্তি বা কোম্পানীকে জরিমানা করতে পারবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “যখন এ আইনটি ভেটিংয়ে যাবে, তখন আইনমন্ত্রণালয় এ ক্ষেত্রে পরিবর্তন করতে পারে। অন্য কোন আইনের সাথে সাংঘর্ষিক কী না সে জন্য ভেটিংয়ে পাঠানো হয়, ভেটিং শেষে চুড়ান্ত করতে আবার মন্ত্রিসভায় আনা হবে।”
সমবায়ের নামে ব্যাংকের ব্যবহারে সুরক্ষা
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, “আইনে সমবায় আইনের সংশোধনীর বিষয়ও আনা হয়েছে। সমবায়ের নামে কেউ যেন ব্যাংকের নাম ব্যবহার করতে না পারে তার একটা সুরক্ষা রাখা হয়েছে। সংশোধিত সমবায় আইনেও সুরক্ষা রাখা আছে। এই আইনেও সুরক্ষা রাখা হয়েছে। আইন অপব্যবহার করে কেউ ব্যাংক শব্দের ব্যবহার করে যেন সুযোগ না নিতে পারে। কারণ এতে অনেকেই প্রতারণার শিকার হয়।”
শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ
সচিব বলেন, “ব্যাংক কোম্পানী বা অন্য কোন কোন কোম্পানীর শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে ধারণকৃত শেয়ার বাজারমূল্যে ওই কোম্পানীর আদায় করা লভ্যাংশ, শেয়ার প্রিমিয়াম ও সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটাররিং আয়ের আদায়কৃত পরিমাণের ৫ শতাংশ। আর ওই কোম্পানীর আদায়কৃত মূলধনের ১০ শতাংশ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবে।”
ঋণ খোলাপীর সজ্ঞা
এই আইনে ঋণ খেলাপীর সজ্ঞা সহজ, স্পষ্ট ও বিস্তৃত করা হয়েছে। কেউ যদি ঋণ গ্রহণ করে ছয়মাস অনাদায়ী হয় তাহলে তাকে ঋণ খেলাপী ধরা হবে।”
মূলধন সংরক্ষণ
বাংলাদেশ যত ব্যাংক আছে তারা বাংলাদেশ ব্যাংক সময় সময় যে হার নির্ধারণ করবে তা রিজার্ভ করবে। তবে স্পেশালাইজ ব্যাংকের ক্ষেত্রে এ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুযোগ থাকবে।
মার্চ ৪, ২০১৩