জিম্মি জাহাজে খাওয়ার জন্য আনা হচ্ছে ছাগল-দুম্বা

মার্চ ৩০, ২০২৪

এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে জিম্মি ২৩ নাবিকের সঙ্গে আচরণে পরিবর্তন এনেছে সোমালিয়ার জলদস্যুরা। নাবিকদের এখন থাকতে দেওয়া হচ্ছে নিজ নিজ কেবিনে। খাবার পুড়ে যাওয়ার যে শঙ্কা ছিল তাও কেটে গেছে। নাবিকদের খাবারে ভাগ বসানো বন্ধ করে এখন উপকূল থেকে দস্যুরা ছাগল-দুম্বা নিয়ে আসছে। যার থেকে নাবিকদেরও খাওয়ানো হচ্ছে। তবে বিশুদ্ধ পানির সংকট এখনও কাটেনি। পানি ব্যবহার করতে হচ্ছে রেশনিং করে। এমনটাই জানিয়েছেন সমুদ্রগামী বাণিজ্যিক জাহাজের ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান।

এদিকে, দস্যুদের আচরণে এ পরিবর্তনকে ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ। তারা বলছেন, দস্যুদের সঙ্গে জাহাজ মালিকের আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। মুক্তিপণ নিয়ে আলোচনায় সন্তুষ্ট হয়েই জলদস্যুরা বুধবার থেকে নাবিকদের কেবিনে থাকার পাশাপাশি কাজ করার সুযোগ দিয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কবির গ্রুপের মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম  বলেন, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকরা সবাই সুস্থ আছেন। তাদের প্রতি দস্যুরা কোনও খারাপ আচরণ করছেন না। নাবিকদের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। দস্যুদের সঙ্গেও আলোচনায় অগ্রগতি আছে। ঈদের আগে যাতে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনা যায় আমরা সে লক্ষ্যে কাজ করছি।

ক্যাপ্টেন আতিক ইউ এ খান বলেন, আবদুল্লাহ জাহাজের নাবিকদের খাবারে ভাগ বসানো বন্ধ করেছে দস্যুরা। এখন উপকূল থেকে দস্যুরা ছাগল-দুম্বা নিয়ে আসছে। এতে খাবার আরও কিছু দিন বেশি যাবে। তবে পানি সংকট আছে। জাহাজে মিঠা পানির যে সরবরাহ আছে তা দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় রেশনিং করে ব্যবহার করা হচ্ছে। কয়েকদিন পর পর মিঠা পানির লাইন চালু করা হয়। তাও আবার ১/২ ঘণ্টার জন্য। বাকি সময়ে খাবারের জন্য মিঠা পানি পাওয়া গেলেও ব্যবহারের জন্য নেওয়া হচ্ছে সমুদ্রের লোনা পানি।

এদিকে, কবির গ্রুপের অপর এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, দস্যুদের কবল থেকে নাবিকদের মুক্ত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে কবির গ্রুপ। জিম্মি দশা থেকে মুক্তির পর ২৩ নাবিককে আকাশ পথে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। জাহাজটিতে নতুন করে ২৩ জনের একটি টিমকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। তারাই কয়লাভর্তি জাহাজটিকে সোমালিয়া থেকে দুবাই নিয়ে যাবেন। ইতিমধ্যে ওই ২৩ নাবিকের নতুন টিম প্রস্তুত করেছে জাহাজ মালিক।

এসআর শিপিং সূত্র জানিয়েছে, এমভি আবদুল্লাহ জাহাজে প্রায় ৫৫ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আছে। গত ৪ মার্চ আফ্রিকার দেশ মোজাম্বিকের মাপুটো বন্দর থেকে এসব কয়লা নিয়ে যাত্রা শুরু করে জাহাজটি। ১৯ মার্চ সেটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল। এর মধ্যে ১২ মার্চ দুপুর দেড়টার দিকে ভারত মহাসাগরের জলদস্যুর কবলে পড়ে জাহাজটি।

প্রতিষ্ঠানটির অধীনে মোট ২৪টি জাহাজের মধ্যে সর্বশেষ যুক্ত করা জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ। ২০১৬ সালে তৈরি এই বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ’ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। ড্রাফট ১১ মিটারের কিছু বেশি। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেওয়ার আগে এটির নাম ছিল গোল্ডেন হক। মালিকানা পরিবর্তনের পর জাহাজের নামও পরিবর্তন করা হয়। নতুন নাম এমভি আবদুল্লাহ।