বাজেটে শিক্ষা খাতে ১৫ শতাংশ বরাদ্দের দাবি

মার্চ ২৮, ২০২৪

টাকার অঙ্কে বাজেটে শিক্ষার বরাদ্দ বাড়লেও শতাংশে বরাদ্দ কমেছে। আর তাই আসন্ন বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে।

বৃহস্পতিবার (২৮ মার্চ) ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযানের উদ্যোগে মালালা ফান্ড ও জিপিই-এর সহযোগিতায় ‘শিক্ষায় ন্যায্যতাভিত্তিক বাজেট: আমাদের প্রত্যাশা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ দাবি জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় মিলিয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রস্তাব করা হয়েছিল জাতীয় বাজেটের ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি খাতের বরাদ্দ যোগ করে এই হার দাঁড়িয়েছিল ১৩ দশমিক ৭ শতাংশ।

আসন্ন ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেটে দুই মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বরাদ্দ কমপক্ষে ১৫ শতাংশ দাবি করা হয়েছে গণসাক্ষরতা অভিযানের মতবিনিময় সভায়।

এডুকেশন ওয়াচের চেয়ারপারসন ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধুরী।

বাজেট বিষয়ক আলোচনাপত্র উপস্থাপন করেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক ড. মোস্তাফিজুর রহমান।

আলোচনাপত্রে ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, টাকার অঙ্কে বরাদ্দ বৃদ্ধি হলেও শতাংশে বরাদ্দ কমেছে। আবার যে অর্থ বরাদ্দ হয় তাও আবার শতভাগ বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। উল্টোদিকে সময়মত অর্থছাড় না হওয়াকেও কেউ কেউ দুষছেন। গত কয়েকদিন আগেও আমরা দেখেছি সংশোধিত বাজেটে শিক্ষা খাত থেকে ১২ হাজার কোটি টাকা ফেরত নেওয়া হয়েছে। আমাদের দাবি অন্ততপক্ষে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে ১৫ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। অর্থ সংস্থানের জন্য প্রয়োজনে এডুকেশন সারচার্জ চালু করা এবং বিভিন্ন ব্যাংক ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের সিএসআর ফান্ডের অর্থ ব্যবহার করা যেতে পারে।’

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী বলেন, ‘শিক্ষার মানোন্নয়নে সমন্বিতভাবে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শিক্ষায় প্রবেশাধিকার বৃদ্ধি পেয়েছে, এবার গুণগত মান নিশ্চিতে আমাদের কাজ করতে হবে। সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে, ভবন দিচ্ছে– এখন শুধু সমন্বয় করে বাস্তবায়ন প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বাস্তবায়নের দায়িত্বে যারা আছেন তাদের অদক্ষতার জন্য যদি টাকা ফেরত যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। শিক্ষকতায় তরুণদের আকর্ষিত করতে হলে সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধিসহ প্রশিক্ষণ, চাকরির পরিবেশ ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে নইলে তারা অন্য পেশায় চলে যাবেন। শিক্ষা আইনের খসড়া কেন আলোর মুখ দেখছে না এ ব্যাপারে আমি উদ্যোগ নেবো। উপবৃত্তির অর্থবৃদ্ধির দাবিও যৌক্তিক। আমি এর সঙ্গে একমত এবং এই সুপারিশটিও যথাযথ জায়গায় পৌঁছানোর চেষ্টা করবো। এসব ব্যাপারে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়কে দৃষ্টি দেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।’

সভায় অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোছা. নূরজাহান খাতুন, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহবুবা নাসরীন।

অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন গণসাক্ষরতা অভিযানের উপ-পরিচালক তপন কুমার দাশ। এছাড়া শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক, সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা, নাগরিক সমাজ, গবেষকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।