গোলাম আরিফ টিপুর জানাজা সম্পন্ন

মার্চ ১৫, ২০২৪

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপুর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুর সোয়া তিনটায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।

এরপর তার মরদেহের সামনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারপতিরা, প্রসিকিউটররা, তদন্ত সংস্থার কর্মকর্তারা ও বিভিন্ন লিয়াজোঁ অফিসের কর্মকর্তারা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে টিপুর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

পরে দীর্ঘদিনের কর্মস্থল থেকে তার মরদেহ পল্টনে অবস্থিত বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির অফিস মুক্তি ভবনে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তার মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে। পরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।

এর আগে জুমার নামাজ শেষে মিনিস্টার্স অ্যাপার্টমেন্টে তার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিসহ অন্য বিচারপতিরা, অ্যাটর্নি জেনারেল ও অসংখ্য আইনজীবী জানাজায় অংশগ্রহণ করেন।

সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর ও ভাষাসৈনিক অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু। তার বড় মেয়ে ডালিয়া নাসরিন এ খবর নিশ্চিত করেন।

ডালিয়া বলেন, বাবার বয়স ৯২ পার হয়ে ৯৩-এ পড়েছিল। বয়সজনিত নানা জটিলতায় তিনি দীর্ঘদিন কষ্ট পাচ্ছিলেন। পারিবারিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন গোলাম আরিফ টিপু। ১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষা আন্দোলন মূলত তার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। রাজশাহী কলেজে দেশের প্রথম শহীদ মিনারও তৈরি হয় তারই নেতৃত্বে। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদক প্রদান করে।

১৯৩১ সালের ২৮ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার কমলাকান্তপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন গোলাম আরিফ টিপু। তার বাবা আফতাব উদ্দিন আহমদ ছিলেন জেলা রেজিস্ট্রার। আইন বিষয়ে স্নাতক সম্পন্নের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি। ১৯৫৪ থেকে ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি আইনজীবী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষা আন্দোলন কর্মী ছিলেন।

১৯৫২ সালে রাজশাহীতে বাংলা ভাষা আন্দোলন মূলত তার নেতৃত্বে সংগঠিত হয়। তিনি রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের রাজশাহী অঞ্চলের যুগ্ম আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনে বিশেষ অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ২০১৯ সালে একুশে পদকে ভূষিত করে।