মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না: হাইকোর্ট

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৪

মাতৃগর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ সংক্রান্ত নীতিমালা হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোকে কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

এ সংক্রান্ত রিটের ওপর জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে রবিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী তীর্থ সলিল রায়। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাশগুপ্ত।

এর আগে, ২৯ জানুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকাবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না উল্লেখিত স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত কমিটির প্রতিবেদন হাইকোর্ট দাখিল করা হয়। স্বাস্থ্য অধিদফতর এ নীতিমালা দাখিল করে।

নীতিমালায় বলা হয়– কোনও ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ল্যাবরেটরি কোনও লেখা, চিহ্ন বা অন্য কোনও উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না; এ বিষয়ে কোনও বিজ্ঞাপন দিতে পারবে না; সরকারের মন্ত্রণালয়গুলো চিকিৎসক, নার্স, পরিবার পরিকল্পনাকর্মী, টেকনিশিয়ান কর্মীদের নেতিবাচক ফলাফল সম্পর্কে ট্রেনিং দেওয়াসহ নৈতিকতা ও পেশাগত আচরণ বিষয়ে ট্রেনিং দেবে; হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিক্যাল সেন্টারগুলো এ সংক্রান্ত সব ধরনের টেস্টের ডাটা সংরক্ষণ রাখবে; হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ মেডিক্যাল সেন্টারগুলো ডিজিটাল ও প্রিন্ট মাধ্যমে লিঙ্গ সমতা এবং কন্যাশিশুর গুরুত্ব তুলে ধরে বিভিন্ন মেসেজ প্রচার করবে।

এর আগে, ২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি গর্ভের শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।

রিট আবেদনে বলা হয়, ভারতে আইন করে গর্ভজাত শিশুদের লিঙ্গ নির্ধারণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গর্ভের শিশুর লিঙ্গ নির্ধারণ করা হলে প্রসূতি মায়ের মানসিক চাপ তৈরি হয়। অনেক ক্ষেত্রে পারিবারিক চাপে গর্ভপাত করার ঘটনাও ঘটে।

ওই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২০ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা তৈরি করতে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় রোধে নীতিমালা বা নির্দেশনা তৈরি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না এবং অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণে নীতিমালা তৈরিতে বিবাদীদের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চান হাইকোর্ট।

বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত তৎকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন। হাইকোর্টের ওই রুলের পর নীতিমালা তৈরির জন্য কমিটি গঠন করে স্বাস্থ্য অধিদফতর।