কিশোর গ্যাংয়ের ‘বড় ভাইদেরও’ গ্রেপ্তার করা হবে: ডিবি প্রধান

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২৪

কিশোর গ্যাং ও ইভটিজারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় অভিযান চালাবে বলে জানিয়েছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। কেউ যদি তথাকথিত বড় ভাইদের নাম বলে বাঁচার চেষ্টা করে, তাহলে সেই বড় ভাইদেরও গ্রেফতার করা হবে। ছিনতাইকারী ও তাদের বড় ভাইদের সম্পর্কে কোনও তথ্য থাকলে গোয়েন্দা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ জানিয়েছে সংস্থাটি।

বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার তাজমহল রোড, জেনেভা ক্যাম্প, বসিলাসহ আশপাশের এলাকা থেকে কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য সন্দেহে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

গ্রেফতাররা হলো- রাজা (৩৫), মো. জালাল (২৫), মো. মৃদুল (২৬), মো. জাহাঙ্গীর (৩৫), মো. শামিম মিয়া (২৪), মো. শহিদ (২৫), মো. শিমুল (২৫), মো. মনিরুল ইসলাম (২৭), মো. সোহেল খান (২৩) ও নুর মোহাম্মদ (২০)। এ সময় তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু দেশি অস্ত্র উদ্ধার করার কথাও জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সামনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) ও ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে তিনি জানান, তারা ভাগ হয়ে মোহাম্মদপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধ করত। তারা ছিনতাইয়ের জন্য লেগুনা ব্যবহার করে। লেগুনা চালক ও হেলপারও তাদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে কিছু বড় ভাইয়ের নেতৃত্বে তারা এসব কাজ করে আসছে। বিশেষ করে রাতের বেলায় চাপাতি দিয়ে ভয় দেখিয়ে ছিনতাই করে এরা, আর দিনের বেলা বড়ভাইদের সঙ্গে ঘোরে। আমরা বেশ কয়েকজন বড় ভাইয়ের নাম পেয়েছি। যে দলেরই হোক না কেন, তাদের কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।

ডিবির এই কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর উত্তরা ও মোহাম্মদপুরে কিশোর গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা বেশ সক্রিয়। এই সব গ্রুপের সদস্যরা চুরি-ছিনতাই, ইভটিজিংসহ নানা অপরাধে জড়িত রয়েছে। তাদের কারণে স্থানীয় বাসিন্দারা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। গোয়েন্দা পুলিশের কাছে অনেকেই অভিযোগ করছেন। তারা দিনে দুপুরে গাড়ি থেকে মোবাইল টান দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। উঠতি বয়সী মেয়েদের উত্ত্যক্ত করে। এই সব অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবির তেজগাঁও বিভাগ কাজ শুরু করেছে। মোহাম্মদপুর থেকে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

হারুন আরও বলেন, কিশোর গ্যাং ও ইভটিজারদের বিরুদ্ধে রাজধানীর প্রতিটি এলাকায় আমাদের অভিযান চলবে। ছিনতাইকারী ও বড় ভাইদের সম্পর্কে কোনও তথ্য থাকলে গোয়েন্দা পুলিশকে জানানোর অনুরোধ করছি।

কিশোর গ্যাংয়ের প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব কি না জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, আমাদের ডিবির ৪০টিরও বেশি চৌকস টিম রয়েছে। তারা প্রত্যেকেই কাজ করবে। এখানে কোনও বড় ভাই ছাড় পাবে না। আমরা যদি তাদের পাই আর আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ, ছিনতাই, ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা ঘটায় তাহলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।

গ্রেফতার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের মধ্যে রাজার বিরুদ্ধে ১১টি মামলা ও মৃদুলের বিরুদ্ধে ৪টি মামলা রয়েছে বলেও জানান ডিবির এই কর্মকর্তা।