প্রথমবার মুদ্রা অদলবদলের সুবিধা চালু করলো কেন্দ্রীয় ব্যাংক

ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৪

প্রথমবারের মতো মুদ্রা অদলবদল বা সোয়াপ ব্যবস্থা চালু করলো বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে উদ্বৃত্ত ডলার থাকলে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা দিয়ে তারা সমপরিমাণ টাকা ধার নিতে পারবে। এতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাণিজ্যিক ব্যাংক উভয়েই লাভবান হবে।

বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সর্বনিম্ন সাত থেকে সর্বোচ্চ ৯০ দিনের জন্য টাকা-ডলার অদলবদলের এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। উদ্বৃত্ত ডলারের বিপরীতে ব্যাংকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে টাকা পেয়ে যাবে। আবার নির্ধারিত সময় পর টাকা ফেরত দিয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে সমপরিমাণ ডলার পেয়ে যাবে।

এর মাধ্যমে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের দাম অনুযায়ী, ডলার নিয়ে ব্যাংকগুলোকে টাকা ধার দিতে পারবে বাংলাদেশ। বর্তমানে আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলার বিক্রির দর (স্পট রেট) হলো ১১০ টাকা।

এদিকে ব্যাংকগুলো যখন তাদের ডলার ফেরত নেবে, তাদের টাকায় সুদ দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সুদহার হবে সোফর রেট এবং রেপো রেটের মধ্যকার পার্থক্য।

বর্তমানে সোফর (সিকিউরড ওভারনাইট ফিন্যান্সিং রেট) সুদহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ, আর রেপো সুদহার হলো ৮ শতাংশ। এখানে পার্থক্য হচ্ছে ২ দশমিক ৭ শতাংশ। মুদ্রা অদলবদলের জন্য বার্ষিক এই হারে সুদ দিতে হবে ব্যাংকগুলোকে।

বর্তমানে ব্যাংকগুলো ৮ শতাংশ বার্ষিক সুদহারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের থেকে অর্থ ধার করে। কিন্তু তারা মুদ্রা অদলবদলের ক্ষেত্রে বার্ষিক ২ দশমিক ৭ শতাংশ হারে সুদ দেবে।

জানা যায়, বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো নিজেদের প্রয়োজনে একে অপরের মধ্যে ডলার ও টাকার অদলবদল করে থাকে। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে এ অদলবদলের সুবিধা চালু হলো। মুদ্রা ব্যবস্থাপনার আওতায় নতুন এ বিধান চালু করা হয়েছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক ব্যাংকের হাতে থাকা অতিরিক্ত ডলার কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অন্য ব্যাংকের কাছে বিক্রি করা যায়। তবে প্রয়োজনের সময় ওই ডলার আবার ফেরত পাওয়া যাবে, এ নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু অদলবদল বা সোয়াপ ব্যবস্থায় সেই নিশ্চয়তা রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ব্যবস্থার আওতায় সর্বনিম্ন ৫০ লাখ ডলার বা তার সমপরিমাণ টাকা অদলবদল করা যাবে। এ সুবিধা নিতে হলে আগ্রহী ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চুক্তি হবে। সেই চুক্তি অনুযায়ী, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো যেদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে ডলার জমা দেবে, ওই দিনের ডলারের বিনিময়মূল্য হিসাবে সমপরিমাণ টাকা পেয়ে যাবে। একইভাবে নির্ধারিত সময় পর টাকা জমা দিয়ে ডলার ফেরত নিতে পারবে বলেও জানান তারা।