অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করা ২২ রোহিঙ্গা রিমান্ডে

ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৪

মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্ত হয়ে অস্ত্রসহ বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করা ২২ রোহিঙ্গার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ শ্রীজ্ঞান তঞ্চঙ্গা তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। মোট ২৩ জনের মধ্যে একজন অসুস্থ থাকায় তাকে আদালতে আনা হয়নি।

উখিয়ার পালংখালী সীমান্ত থেকে অস্ত্রসহ আটকের পর বিজিবির করা মামলায় ২৩ জনের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছিল পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ও উখিয়া থানার ওসি (তদন্ত) নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রহমতের বিল সীমান্ত দিয়ে অস্ত্রসহ অনুপ্রবেশের পর ৩৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) পালংখালী বিওপির নায়েব সুবেদার মো. শহিদুল ইসলাম উখিয়া থানায় অস্ত্র আইনে মামলা করেন। সে মামলা অধিকতর তদন্ত ও কেন অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করছিল তা জানার জন্য তাদের ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত শুনানি শেষে ২২ জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একজন অসুস্থ থাকায় তার রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়নি।

অস্ত্রসহ অনুপ্রবেশের কারণে আটকের পর বিজিবির করা মামলায় শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকালে তাদেরকে কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম ফাহমিদা সাত্তারের আদালতে হাজির করা হয়েছিল। তদন্ত কর্মকর্তা প্রত্যেক আসামির জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। আজ শুনানির দিন ধার্য ছিল।

শনিবার দুপুরে কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. মাহাফুজুল ইসলাম জানিয়েছেন, শুক্রবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উখিয়া থানায় বিজিবি বাদী হয়ে মামলাটি করে। অনুপ্রবেশকারীদের পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে পাওয়া ১২টি অস্ত্র পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। ২৩ জনই মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত নাগরিক।

জানা গেছে, এসব রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের ক্যাম্পে ছিলেন। মিয়ানমারে চলমান সংঘাতে অংশ নিতে তারা নিজ দেশে প্রবেশ করেন। সংঘাতের মধ্যে বিদ্রোহীদের তাড়া খেয়ে প্রাণ বাঁচাতে ৬ ফেব্রুয়ারি কক্সবাজারের উখিয়া সীমান্তের বিভিন্ন স্থান দিয়ে বিজিপি সদস্যদের পাশাপাশি ২৩ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে ঢুকে পড়ে। অস্ত্রসহ বাংলাদেশে প্রবেশের সময় তাদের আটক করা হয়।

২৩ রোহিঙ্গা হলেন- উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর ক্যাম্পের কবির আহমদের ছেলে মো. হোসেন আহমদ (৩০), একই ক্যাম্পের মো. ইউনুসের ছেলে মো. রফিক (২৩), আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আয়াতুল্লাহ (৩০), ৯ নম্বর ক্যাম্পের মো. রফিকের ছেলে মো. জুনাইদ (১৯), একই ক্যাম্পের নুর কালামের ছেলে মো. হারুন (২৩), সমসের আলমের ছেলে মো. কায়সার (১৯), রশিদ আহমেদের ছেলে মো. সাবের (১৯), ১০ নম্বর ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছেলে ওসামা (১৯), একই ক্যাম্পের জাফর আলমের ছেলে ওমর ফারুক (১৯), মো. তোহার ছেলে মো. সাদেক (১৯), মকবুল আহমদের ছেলে হারুন অর রশিদ (২৪), হামিদ হোসেনের ছেলে ইয়াসিন আরাফাত (১৯), দিল মোহাম্মদের ছেলে মো. ইসমাইল (১৯), মো. হোসেনের ছেলে মো. রহিম (১৯), ১১ নম্বর ক্যাম্পের আতা উল্লাহর ছেলে নজু মোল্লা (৩৮), ১৫ নম্বর ক্যাম্পের মো. সৈয়দের ছেলে সৈয়দ উল্লাহ (১৯), একই ক্যাম্পের দিল মোহাম্মদের ছেলে হাফেজ আহমেদ (১৯), ২০ নম্বর ক্যাম্পের মো. রশিদের ছেলে মো. জোবায়ের (১৯), কুতুপালং এলাকার ৬ নম্বর ক্যাম্পের ইউসুফের ছেলে আব্দুল্লাহ (২০), একই এলাকার ৩ নম্বর ক্যাম্পের আবুল হাসেমের ছেলে এনামুল হাসান (২২), ২ নম্বর ক্যাম্পের ইমাম হোসেনের ছেলে মো. রফিক (২৪), একই ক্যাম্পের আবুল কালামের ছেলে সৈয়দুল ইসলাম (২৪) ও ৭ নম্বর ক্যাম্পের মো. জলিলের ছেলে মো. আরমান (২১)।

এ ঘটনায় উদ্ধার ১২টি অস্ত্রের মধ্যে ৫টি এসএমজি (সাবমেশিন গান), ১টি জি-৩ রাইফেল, ২টি পিস্তল ও ৪টি রিভলবার রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে- এসএমজি গুলি ১৯৮ রাউন্ড, এমজি গুলি ৯৮ রাউন্ড, রাইফেলের গুলি ২৭৬ রাউন্ড, জি-৩ রাইফেলের গুলি ১০৩ রাউন্ড, পিস্তলের গুলি ১৯৩ রাউন্ড, পিস্তলের খালি কার্তুজ ২৫ রাউন্ড, রাইফেলের গ্রেনেড ফিউজ ৫ রাউন্ড, এসএমজি ম্যাগাজিন ৬টি, এলএমজি ম্যাগাজিন ৪টি, জি-৩ ম্যাগাজিন ১টি, পিস্তল ম্যাগাজিন ২টি।