একদিন আগেই কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন বিএনপির কর্মীরা

অক্টোবর ২৭, ২০২৩

সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায়ে বিএনপির ডাকা মহাসমাবেশে অংশ নিতে একদিন আগেই রাজধানীর নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হচ্ছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মীরা। আগত এসব কর্মীর অধিকাংশ ঢাকার বাইরে থেকে এসেছেন। তবে ঢাকার প্রবেশপথগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি থেকে বাঁচতে নানান কৌশল অবলম্বন করেছেন অনেকেই। তারা জানান, কেউ সবজির টুকরি সঙ্গে নিয়ে, কেউ আবার ভিসা পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে ঢাকায় ঢুকেছেন, কেউ আবার দুদিন আগেই ঢাকায় এসে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) জুমার নামাজের পরপরই দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন এসব প্রান্তিক কর্মী। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কর্মীদের সংখ্যাও বাড়ছে।

কিশোরগঞ্জ থেকে সবজি বিক্রেতা সেজে ঢাকায় এসেছেন আব্দুল মালেক নামে এক বিএনপি কর্মী। তিনি  বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সবজি নিয়ে ঢাকায় এসেছি। কাওরান বাজারে সেগুলা বিক্রি করেছি। রাতে ওখানেই ছিলাম। সকালে আশপাশে ঘোরাঘুরি করেছি। এখন লোক জমছে দেখে অফিসের (বিএনপির কার্যালয়ের) সামনে আসছি।’

দলীয় কোনও পদ-পদবি না থাকলেও কেবল সমর্থন জানাতে একই পদ্ধতিতে গত বছর ১০ ডিসেম্বরও ঢাকায় প্রবেশ করেছিলেন জানিয়ে বিএনপির এই কর্মী বলেন, ‘দেশের অবস্থা ভালো না। মানুষের মধ্যে শান্তি নাই। জিনিসপত্রের দামে মানুষ কুলাইতে পারে না। এই সরকার গেলে যদি সব ঠিক হয়।’

 

এদিকে ভিসা-পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে সিলেট থেকে ঢাকায় মহাসমাবেশে যোগ দিতে এসেছেন আব্দুল জলিল। কিছু দিনের মধ্যে আবারও প্রবাসে ফিরে যাবেন। এই সুযোগে প্রিয় রাজনৈতিক দলকে সমর্থন জানাতে সঙ্গে আরও দুজনকে নিয়ে ঢাকায় এসেছেন তিনি। ঢাকায় প্রবেশে কোনও প্রতিবন্ধকতা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে আব্দুল জলিল বলেন, ‘নিজস্ব সিস্টেমে আসছি, সমস্যা হয় নাই।’

ঢাকায় ঢুকতে বাধা এড়াতে অনেক কর্মী কয়েক দিন আগেই ঢাকায় প্রবেশ করেছেন। যার সম্ভব হয়েছে আত্মীয়ের বাড়িতে এসে উঠেছেন। কেউ আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

ময়মনসিংহ থেকে আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে আসার নাম করে তিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছেন বিএনপির কর্মী নুর আলম। তিনি বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে থেকেই জানিয়ে রাখছিলাম ঢাকায় আসবো। তিন দিন ধরে আছি। প্রত্যেক দিনই আসি কার্যালয়ের সামনে, ভালো লাগে। এখন মানুষজন বাড়ছে, আরও ভালো লাগছে। মনে সাহস আসতেছে। ইনশাআল্লাহ, এইবার এই সরকারের পতন হবে নিশ্চিত।’

বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকায় প্রবেশ করে এক কর্মী হাসপাতালে ভর্তির নাম করে ঢাকায় এসেছেন। তিনি জানান, তিনি চিকিৎসার পাশাপাশি সমাবেশও যুক্ত হতেই ঢাকায় এসেছেন।

রাজধানীর একটি হাসপাতালে রোগী নিয়ে এসেছিলেন জানিয়ে বগুড়া জয়পুরহাট থেকে আসা আওয়াল বলেন, ‘আমি ভর্তি ছিলাম না। তবে সঙ্গে রোগী ছিল। তার সঙ্গেই এসেছি। তাকে ডাক্তার দেখিয়ে ভর্তি করে এখানে এসেছি।’

এদিকে বিএনপি কার্যালয়ে নেতাকর্মীর সংখ্যা বাড়ায় বাড়ানো হয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যও। বিকালে পুলিশ সদস্যরা সেখানকার সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে কাজ করছিলেন। তারা সড়ক থেকে বিএনপির নেতাকর্মীদের সরিয়ে দিচ্ছিলেন।