এবার বিয়ের দাবিতে আইডিয়ালের শিক্ষকের বাসায় ছাত্রী

আগস্ট ৩১, ২০২৩

মতিঝিলের আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ গভর্নিং বডির দাতা সদস্যের সঙ্গে এক ছাত্রীর বিয়ের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির রেশ না কাটতেই আরেক ছাত্রী বিয়ের দাবিতে শিক্ষকের বাসায় গিয়ে হাজির। শিক্ষকের প্রলোভনের ফাঁদ থেকে ছাত্রীর পিতা মেয়েকে উদ্ধার করে শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠানটির অভিভাবক ফোরাম অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ আহম্মদের চাকরিচ্যুতি ও গ্রেফতার দাবি করেছে।

জানা গেছে, গত ২৩ আগস্ট রাতে আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক এক ছাত্রী কলেজের মূল শাখার ইংরেজি ভার্সনের (দিবা শাখা) শিক্ষক মুরাদ আহম্মদের বাসায় গিয়ে বিয়ের দাবি করেন। পরে ছাত্রীর পিতা ঘটনার রাতেই মেয়েকে উদ্ধার করে শাহজাহানপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।

ছাত্রীর পিতা থানায় করা সাধারণ ডায়েরিতে উল্লেখ করেছেন, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মূল (মতিঝিল) ক্যাম্পাসের ইংরেজি ভার্সনের দিবা শাখার ইংরেজির শিক্ষক মুরাদ আহম্মদের কাছে মেয়ে কোচিং করতো। শিক্ষক মুরাদ আহম্মদ দুই সন্তানের জনক হওয়া সত্ত্বেও আমার কোমলমতি মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক করতে প্রলুব্ধ করে। বিভিন্ন সময় নানারকম প্ররোচনা দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ আগস্ট মুরাদ আহম্মদ তার উত্তর শাহজাহানপুরের বাসায় আসতে বলে। ওই দিন রাত আনুমানিক ৯টায় আমার মেয়ে মুরাদ আহম্মদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে কাউকে কিছু না বলে তার বাসায় চলে যায়। খবর পেয়ে আমরা মেয়েকে উদ্ধার করতে ওই বাসায় গেলে মুরাদ পালিয়ে যায়।

বুধবার (৩০ আগস্ট) আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরাম অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ আহম্মদকে চাকরিচ্যুত ও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছে।

অভিভাবক ফোরামের চেয়ারম্যান ফাহিম উদ্দিন আহম্মেদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. রুস্তম আলী যৌথ বিবৃতি দিয়ে জানান, গত ২৩ আগস্ট রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের ওই শিক্ষকের বাসায় ওই ছাত্রী বিয়ের দাবিতে ওঠেন। বিবাহিত হয়েও বিয়ের প্রলোভনে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুললেও এখন আর বিয়ে করতে চাইছেন না তিনি। এ ঘটনায় শিক্ষার্থী-শিক্ষক-অভিভাবকরা বিব্রত।

অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ আহম্মদ স্কুলের গভর্নিং বডির সভাপতি টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে বিবৃতিতে দাবি করা হয়।

অভিভাবক ফোরামের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, এর আগেও ২০১৩ সালে ৪র্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে মুরাদ আহম্মদকে মতিঝিল শাখা থেকে বনশ্রী শাখায় বদলি করা হয়। পরে বর্তমান সভাপতির সহায়তায় তিনি আবার মূল মতিঝিল শাখায় ফিরে আসেন।

এছাড়া ২০১৪ সালে ৪র্থ শ্রেণির অপর এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির শাস্তি হিসেবে আরেক অস্থায়ী শিক্ষক হুমায়ুন কবিরকে বহিষ্কার করা হয়।

অভিভাবক ফোরামের দাবি—বিচারহীনতা ও প্রশাসনিক অক্ষমতায় শিক্ষকদের যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে ছাত্রীরা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। তাই অবিলম্বে অভিযুক্ত শিক্ষক মুরাদ আহম্মদকে চাকরিচ্যুত ও গ্রেফতার করার জোর দাবি জানাচ্ছি।