বৃষ্টি উপেক্ষা করে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে মানুষের ঢল

জুন ২৯, ২০২৩

প্রচণ্ড বৃষ্টি উপেক্ষা করে আনন্দঘন পরিবেশে কিশোরগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া মাঠে অনুষ্ঠিত হলো দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। গত রাত থেকেই বৃষ্টি। সকালে কর্দমাক্ত মাঠ। তবুও মাঠে ঈদের নামাজ আদায় করা স্থানীয় মুসল্লিদের কাছে একটি আবেগ।

এটি ছিল শোলাকিয়ায় ঈদুল আজহার ১৯৬তম নামাজ। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকাল ৯টায় শুরু হয় এই নামাজ। ইমামতি করেন মার্কাস মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান।

নামাজ শেষে হাওরের বন্যা রক্ষা, দেশের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি এবং মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও শান্তি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

ঈদের জামাতকে সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ রাখতে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে দেওয়া হয় শোলাকিয়া ও আশপাশের এলাকা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে মুসল্লিদের ঢুকতে হয় ঈদগাহ মাঠে। কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে হাসিমুখে সহযোগিতা করতে দেখা গেছে।

সকালে প্রচণ্ড বৃষ্টির মাঝেও ভোর থেকেই শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের দিকে যেতে থাকেন মুসল্লিরা। কেউ গাড়িতে চড়ে, ইজিবাইকে, সাইকেলে, কেউবা পায়ে হেঁটে এসেছেন। প্রতিবারের মতো এবারও মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধায় দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে রেল কর্তৃপক্ষ। একটি ট্রেন ভৈরব থেকে, অন্যটি ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জে যায়। ঈদগাহ এলাকায় কয়েকটি মেডিক্যাল টিম ও ফায়ার সার্ভিসের একটি দল মোতায়েন ছিল। স্বেচ্ছাসেবকের দায়িত্বে ছিল বিপুল সংখ্যক স্কাউট সদস্য।

নামাজ শুরুর আগে মুসল্লিদের স্বাগত জানিয়ে বক্তব্য রাখেন ঈদগাহ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ ও পৌর মেয়র মাহমুদ পারভেজ।

ঈদগাহ মাঠের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দুই প্লাটুন বিজিবি, বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‍্যাব, আনসার সদস্যের সমন্বয়ে কঠোর নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়। একইসঙ্গে মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। শোলাকিয়া মাঠ ও শহরসহ প্রবেশ পথগুলো সিসি ক্যামেরা দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হয়। মাঠে স্থাপিত ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার থেকে দূরবীন ও স্নাইপার রাইফেল নিয়ে দায়িত্ব পালন করে র‍্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। শোলাকিয়া এলাকা ও শহরের যত অলিগলি আছে, সবখানে বসানো হয় নিরাপত্তা চৌকি।

শোলাকিয়ায় ঈদের নামাজ উপলক্ষে শহরের মোড়ে মোড়ে নির্মাণ করা হয় শুভেচ্ছা তোড়ন। রাস্তার দুই পাশে টাঙানো হয় রঙ-বেরঙের পতাকা ও ব্যানার। সবমিলিয়ে কিশোরগঞ্জে ছিল বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ।