ইদের দিন ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের আদেশ জারি করলেন জেলা প্রশাসক

জুন ২৬, ২০২৩

ইদের দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাতক্ষীরার সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের আদেশ জারি করেছেন জেলা প্রশাসক। গত ৪ জুন জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। সেদিনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গত ১২ জুন এই আদেশ জারি করে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

এদিকে, এমন আদেশ জারি হওয়ার পর শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা। সমালোচনার মুখে শনিবার (২৪ জুন) এই আদেশ সংশোধন করে নতুন প্রজ্ঞাপন জারি করে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সাধারণ শাখা থেকে জারিকৃত আদেশে বলা হয়, ‘ইদ মোবারক ও কালেমা তাইয়্যিবা লিখিত ব্যানার দ্বারা প্রধান প্রধান সড়ক সজ্জিত ও তোরণ নির্মাণ করতে হবে। ইদের দিন সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সাতক্ষীরার সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে যথাযথ মর্যাদায় জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ইসলামিক পতাকা উত্তোলন করতে হবে। এ ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচি বাস্তবায়নের আদেশ দেয়া হলো।’

তবে জাতীয় পতাকার পাশাপাশি ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের বিষয়টিকে দুরভিসন্ধিমূলক ও সাম্প্রদায়িক বলে মন্তব্য করেছেন প্রগতিশীল এবং সুশীল সমাজের ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে জাসদের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইদ্রিস আলী বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের এ আদেশ দুরভিসন্ধিমূলক ও সাম্প্রদায়িক। ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি গণতান্ত্রিক ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জাসদের পক্ষ থেকে এই আদেশের প্রতিবাদ ও তীব্র নিন্দা জানাই।’

এমন আদেশের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক ও বাসদের সভাপতি আজাদ হোসেন বেলাল। তিনি বলেন, ‘ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি। ৩০ লাখ শহীদের রক্তে রঞ্জিত জাতীয় পতাকার বাইরে বাংলাদেশে আর কোনও পতাকা নেই। এটি ষড়যন্ত্র।’

ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের আদেশ জারির বিষয়ে জানতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরকে একাধিকবার ফোন দিলেও রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার আবদুল্লাহ আল আমিন বলেন, ‘ইসলামিক পতাকা উত্তোলনের বিষয়টি প্রিন্টিং মিসটেক। ভুল করে ছাপানো হয়েছে। বিষয়টি আমাদের নজরে আসার পর সংশোধন করে পুনরায় প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।’