শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার ষড়যন্ত্র’ করছে বিএনপি, প্রতিরোধের ঘোষণা কাদেরের

মে ২১, ২০২৩

বিএনপি সরকার পতনের ‘এক দফার’ নামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘হত্যার ষড়যন্ত্র’ করছে বলে দাবি করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, বিএনপির সমাবেশে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। এ জন্য এখন থেকে শান্তি সমাবেশ নয়, সারা দেশে বিএনপিকে প্রতিরোধ করতে দলীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।

রবিবার (২১ মে) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের এক শান্তি সমাবেশে এ ঘোষণা দেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে এক দফার ঘোষণা দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়ায় দলটির জেলা আহ্বায়ক বলেন—শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে! আমরা অনেক শান্তি সমাবেশ করেছি। নেতাকর্মীদের বলবো, আর শান্তি সমাবেশ নয়, তাদের প্রতিরোধ করা হবে। আমরা কোনও ব্যক্তিকে মারবো না। আমরা খুনের রাজনীতি করি না।

মির্জা ফখরুলকে উদ্দেশ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক চাপাবাজি করেছেন। আপনি কি ওই চাঁদকে (পুঠিয়ার বিএনপি নেতা) জিজ্ঞেস করেছেন শেখ হাসিনার প্রকাশ্য হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা। লজ্জা করে না? বলেন আপনাদের কর্মীরা বিপদে আছে, তাদের হয়রানি করা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে। ১৯ মে শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আজ ২১ তারিখেও তিনি বাইরে আছেন, জেলে যাননি।

বিষয়টি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কতদূর অবহিত, তা জানেন না উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি আজ রাজশাহীতে আছেন, আপনি সরেজমিন শুনে আসুন। আমার কাছে ভিডিও আছে, আমি শুনেছি। যে ঔদ্ধত্য কণ্ঠে, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এক দফা, তাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে।

আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আজ থেকে প্রতিরোধের সংগ্রাম চলবে। চক্রান্তকারী, ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ চলবে। তাদের ষড়যন্ত্রের দুর্গ আমরা চূর্ণবিচূর্ণ করে দেবো। আমরা সত্যের পথে, ইমানের পথে আছি। মানুষের পাশে আছি। আমরা ভাগ্যবান, শেখ হাসিনার মতো নেতৃত্ব পেয়েছি। তাকে হারাতে চাই না। তার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের এক দফা এক দাবি- বিএনপির সাম্প্রদায়িক, দুর্নীতির রাজনীতিকে কবরস্থানে পাঠাবো। তারা আমাদের নেত্রীকে কবরস্থানে পাঠাতে চায়। আমরা তাদের রাজনীতিকে কবরস্থানে পাঠাতে চাই।

বিএনপি নেতা তারেক রহমান দেশের বাইরে বসে ফন্দি আঁটছে, পরামর্শ দিচ্ছে– এই মন্তব্য করে তিনি বলেন, তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয়, এ সরকারের অধীনে নির্বাচন নয়। নির্বাচন করবেন না সেটা জানি। কিন্তু নির্বাচন ঠেকাতে এলে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। কোনও অপশক্তিকে বাংলাদেশের শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে বাধা দিতে দেবো না। তিনি বলেন, নির্বাচনও আমরা করবো সংবিধান অনুযায়ী। সংবিধানের বাইরে কোনও নির্বাচন বাংলাদেশে হতে দেওয়া হবে না। সব দেশে সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন করে, আমার দেশে কেন নয়?

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি জানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না, কবরে শুয়ে আছে। খালেদা জিয়া বলেছিল, নির্দলীয় সরকার পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ বুঝে না। এখন কোন পাগল ও শিশুকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বানাবে মির্জা ফখরুল, সেটা জানি না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনে আর মাত্র কয়েক মাস। এখন থেকে প্রস্তুত হতে হবে। নেত্রীকে যে কটূক্তি করেছে তার প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করতে হবে সারা দেশে। এভাবে আর আমরা ছেড়ে দেবো না। এই নগরীতে তাদের বিক্ষোভের পাশে শান্তির সমাবেশ করেছি। একটা টুঁ-শব্দও হয়নি। কোনও হানাহানি, মারামারিতে আওয়ামী লীগের কর্মীরা যায়নি। ফখরুলের লজ্জা থাকলে এ কথা স্বীকার করতো। প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মিটিং করলো। আমরা তো কোনও মিছিলে হামলা করিনি। অথচ আমরা বিরোধী দলে থাকতে রাস্তায় পিটুনি খেয়েছি।

ঢা্কা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম। সমাবেশের শেষ পর্যায়ে আগামী ২৭ মে রাজধানীর বাড্ডায় বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয় ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।

উল্লেখ্য, গত ১৯ মে রাজশাহীর পুঠিয়ায় এক জনসভায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, আর ২৭ দফা ১০ দফা নাই। এক দফা শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠাতে হবে। এবং শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করতে যা যা করার দরকার আমরা তা করবো ইনশাআল্লাহ।