বাংলাদেশে শুরু হয়েছে ডিজিটাল মেলা

জানুয়ারি ২৭, ২০২৩

শুরু হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা। বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মেলা উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ২০২১ সালে ছিল ডিজিটাল বাংলাদেশ। ২০৪১ সালে হবে স্মার্ট বাংলাদেশ আর আগামী ২১০০ সালে ডেল্টা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। এ লক্ষ্যেই সরকারের এই প্রযুক্তি এবং কানেকটিভিটির মহাসড়কে পা রাখলো। আগামীর উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণেই এই ডিজিটাল সংযোগের বিকল্প নেই।

স্মার্ট বাংলাদেশের ‘স্মার্ট’ রূপকল্প তুলে ধরে তিনি আরও বলেন, আমাদের সামনে উপস্থিত শিশু, যাদের বয়স এখন ১৫-১৬, তারা মানবিক ও উন্নত সমৃদ্ধি বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। এখানে স্মার্টনেস অর্থ হবে টিকে থকার জন্য সফট স্কিল অর্জন, প্রবলেম সলভিংয়ে দক্ষতা। স্মার্ট বাংলাদেশের স্মার্ট নাগরিকরা কাজে হবেন সৎ, মানবিক, পরমত সহিষ্ণু, অসাম্প্রদায়িক ও সৃজনশীল।বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, বাঙালি জাতির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে আগামী প্রজন্মের ওপর। কারণ সব ধরনের আধুনিক প্রযুক্তিলভ্য জ্ঞান তাদের কাছে আছে। ১৯৯২ সালে সাবমেরিন ক্যাবল গ্রহণ না করা আমরা প্রযুক্তিতে কিছুটা পিছিয়ে পড়ি। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য পজিটিভ দিক হলো আমাদের তরুণের সংখ্যা বেশি। ইউরোপ আমেরিকার সমস্যা হলো তাদের ডেমোগ্রাফিক ডেভিডেন্ট নেই। শিক্ষার আমূল পরিবর্তন এবং প্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয়ের জন্য সরকার চেষ্টা করছে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ তরুণদের লক্ষ্য করেই করা হয়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিক্ষার্থীদের জন্য মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম প্রযুক্তিগত সব ধরনের সরঞ্জাম সরবরাহ করা হয়েছে।

মেলার সার্বিক সহযোগিতাদানকারী সংগঠন আইইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, পেপারলেস, সিমলেস ও ক্যাশলেস কানেকটিভিটি হলো ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য। বাংলাদেশের এনালগ প্রযুক্তি থেকে ডিজিটাল যুগে প্রবেশ করেছে। এবার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গ্রামে উচ্চগতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে আমরা প্রস্তুত। এখন সরকারের নীতিগত সহায়তা প্রত্যাশা করছি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে শিক্ষা এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মেলার প্যাভিলিয়ন ও স্টল ঘুরে দেখেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলায় ফাইভ-জিসহ সর্বাধুনিক সব ফিচার ও উদ্ভাবন দেখার সুযোগ পাবেন দর্শনার্থীরা। মেলার মূল আয়োজক ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। তাদের সঙ্গে থাকছে মোবাইল অপারেটর সংগঠন এমটব। অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ কনটাক্ট সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং।

মেলায় মুজিব কর্নারে হলোগ্রাফির পাশাপাশি ভিআর হেডসেটে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে ঘুরে আসতে পারবেন দর্শনার্থীরা। ফাইভ-জি সুবিধার নানা খুঁটিনাটি তুলে ধর হবে গ্রাহকদের কাছে। ২০টি প্যাভিলিয়ন, ৩২টি মিনি প্যাভিলিয়ন ও ১৭টি স্টলে আইপিভি-সিক্সসহ উচ্চগতির ইন্টারনেটে বাংলাদেশের ডিজিটাল অভ্যুদয় তুলে ধরা হচ্ছে।

মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে (২৮ জানুয়ারি) ১৪টি ক্যাটাগরিতে ২২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হবে ডাক ও টেলিযোগাযোগ পদক। রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সেরা স্টল এবং সেরা উদ্ভাবকেরা পাবেন ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা পুরস্কার। মেলা সকাল ১০টা রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে।

 

মেলায় হুয়াওয়ের প্যাভিলিয়নে ৫.৫জি, এন্টারপ্রাইজ বিজনেস সলিউশন, হুয়াওয়ে ক্লাউড ও ডিজিটাল পাওয়ারের মতো বিভিন্ন যুগান্তকারী উদ্ভাবন প্রদর্শন করা হচ্ছে। রয়েছে সার্ভিস রোবট, স্মার্ট পোর্ট ও ডিজিটাল পাওয়ার সলিউশন ডেমো সাইট। মেলায় হুয়াওয়ে ক্লাউড দিচ্ছে ২০ শতাংশ ছাড়। আগ্রহীরা হুয়াওয়ে প্যাভিলিয়নে এসে ফ্রি রেজিস্ট্রেশন করে পরবর্তীতে এই ছাড় উপভোগ করতে পারবে।

হুয়াওয়ে টেকনোলজিস (বাংলাদেশ) লিমিটেডের চিফ অপারেটিং অফিসার ক্লিফ হু বলেন, গত তিন বছরে বাংলাদেশের টেলিকম খাত সফলভাবে সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সাফল্য অর্জন করেছে। বাংলাদেশের দক্ষিণ এশিয়ার ডিজিটাল হাব হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে।