২০২২ সালে ১৪০০টি গুজব শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার

জানুয়ারি ৩, ২০২৩

আপনি কি ভাবতে পারেন, সম্প্রতি যে বছরটা ফেলে এসেছেন সেই বছরে অন্তত ১৪০০ গুজব অনলাইনে ছড়িয়েছিল? অবাক লাগলেও বিষয়টি সত্য। সদ্য ফেলে আসা বছরটিতে (২০২২ সাল) রিউমর স্ক্যানার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও দেশীয় গণমাধ্যমে প্রচারিত ১৪০০টি গুজব, ভুয়া খবর ও বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করেছে। যা বাংলাদেশের যে কোনো ফ্যাক্ট-চেকিং প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেই রেকর্ড।

এর মধ্যে ধর্মীয় বিষয়ে ২০৬ টি, রাজনীতি নিয়ে ৯২ টি, জাতীয় ইস্যুতে ১১৫ টি, খেলাধুলা নিয়ে ১৫৬ টি ও শিক্ষা বিষয়ে ৩৮ টি গুজব শনাক্ত করেছে রিউমর স্ক্যানার। এছাড়াও আছে কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে ১১১টি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময় দেশে ছড়িয়ে পড়া ৬৬ টি ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্তের সংখ্যাও। (বিস্তারিত পাওয়া যাবে এই লিংকে)

রিউমর স্ক্যানার জানায়, ফ্যাক্ট-চেকিং হলো কোনো তথ্য, ছবি কিংবা ভিডিওর সত্যতা, সামঞ্জস্যতা এবং সঠিকতা যাচাই কিংবা নির্ণয় করা। মানুষের সঠিক তথ্য জানার অধিকার নিশ্চিতকরণের জায়গা থেকেই ফ্যাক্ট-চেকিং গুরুত্বপূর্ণ।

ভুলতথ্য ছড়ানোর মাধ্যমে সাধারণ ব্যবহারকারীদেরকে বিভ্রান্ত করা, কোনো ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সম্প্রদায়কে হেয় প্রতিপন্ন করা, অর্জনকে ছোট করে দেখানো কিংবা পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে ব্যক্তি, প্রতষ্ঠান বা সম্প্রদায়কে অর্জন নিয়ে বাড়িয়ে বলা ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রভাব পড়ে সমাজ, দেশ কিংবা অর্থনীতিতেও। ভুয়া তথ্য রোধ করতে পারলে যেমন বেঁচে যেতে পারে মানুষের জীবন তেমনি রোধ হতে পারে সাম্প্রদায়িক সহিংসতাও।

তারা আরও জানায়, আমরা ইন্টারনেট তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউজার জেনারেটেড কন্টেন্ট মাধ্যম, ব্লগ ও গণমাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং এর মাধ্যমে ভুয়া তথ্য কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য পেয়ে থাকি। এই পরিসংখ্যানটি আমরা ২০২২ সালের জানুয়ারির ১ তারিখ থেকে ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত আমাদের সাইটে প্রকাশিত সকল শনাক্তকরণ প্রতিবেদন থেকে তৈরি করেছি।

বিশ্লেষণ করলে- জানুয়ারি মাসে ৮২, ফেব্রুয়ারিতে ৯০, মার্চে ১১৯, এপ্রিলে ৯০, মে ৭২, জুন ১৩০, জুলাই ১০৫, আগষ্ট ১৫০, সেপ্টেম্বর ১৩৩, অক্টোবর ১৩০, নভেম্বর ১৪২ এবং ডিসেম্বর মাসে ১৫৭টি গুজব, ভুয়া তথ্য কিংবা বিভ্রান্তিকর তথ্য শনাক্ত করা হয়েছে। প্রতিমাসের আলাদা আলাদা ডাটাসহ প্রতিবেদনগুলো পাওয়া যাবে এই লিংকে।

এই পরিসংখ্যান তৈরিতে রিউমর স্ক্যানারের সকল ফ্যাক্ট-চেকারদের সমান পরিশ্রম ও অংশগ্রহণ রয়েছে। পাশাপাশি পুরো প্রক্রিয়ায় আমাদের ভলান্টিয়ার টিম ও ক্যাম্পাস এম্বাসেডরগণেরও অংশগ্রহণ ছিল প্রশংসনীয়।

এই বছরের সবচেয়ে আলোচিত গুজব “জুনায়েদ আহমেদ পলকে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকতে না দেওয়া”, “মাশরাফির সম্পদ নিয়ে ভুয়া তথ্য” এছাড়াও “আর্জেন্টিনা টিমের কুক’কে মেসির মা দাবি করা” কিংবা “মেসির গায়ের বিশত’কে বগুড়ায় তৈরি দাবি” নিয়ে বিস্তর তথ্য পাওয়া যাবে এই লিংকে।

রিউমর স্ক্যানার একটি ফ্যাক্ট-চেকিং বা তথ্য-যাচাইকারী উদ্যোগ যার প্রধান লক্ষ্য দেশের চলমান গুজব ও ভুয়া খবর নির্মূল করা এবং সঠিক তথ্য জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া। ১৭ মার্চ ২০২০ তারিখে রিউমর স্ক্যানার আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে। রিউমর স্ক্যানার ফ্যাক্টচেক উৎস, ফান্ডিং, কার্যক্রম এবং সংস্থার স্বচ্ছতা রক্ষায় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। ২৮ জুলাই ২০২১ সালে রিউমর স্ক্যানার আন্তর্জাতিক ফ্যাক্ট-চেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) এর সদস্যপদ লাভ করে।