সশরীরে পদত্যাগপত্র জমা দিলেন বিএনপির ৫ এমপি

ডিসেম্বর ১১, ২০২২

জাতীয় সংসদের স্পিকারের কাছে সশরীরে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন বিএনপির পাঁচ সংসদ সদস্য। পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার সময় সংসদ সদস্য জি এম সিরাজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা পাঁচ জন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি। বাকি দুই জন পরে এসে জমা দেবেন।‘

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে পাঁচ জন পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি, তাদের এই মুহূর্ত থেকে পদত্যাগপত্র গ্রহণ হয়ে গেল। আমরা এখন থেকে আর সংসদ সদস্য নই। স্পিকার গ্রহণ করেছেন। বাদবাকি পদক্ষেপ উনি জাতি ও গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেবেন।’

এই সাত জনের সংসদে আসা, পদত্যাগ করা সবই দলের সিদ্ধান্তে হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা লাখ লাখ মানুষের সামনে আনন্দের সঙ্গে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি। একদিন আগেও কেউ ক্ষমতা ছাড়তে চায় না। আমরা এক বছর এক মাস আগে ছেড়ে দিয়েছি স্বেচ্ছায়।’

এসময় রুমিন ফারহানা বলেন, ‘আমাদের পদত্যাগে স্পিকার কিছুটা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। জানতে চেয়েছেন, আমরা কেন পদত্যাগ করছি। আমরা বলেছি দলীয় সিদ্ধান্তের কথা।’

এর আগে রবিবার (১১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা ২০ মিনিটে সংসদ ভবনে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর দফতরে যান তারা। শনিবার (১০ ডিসেম্বর) গোলাপবাগ সমাবেশে ঘোষণার পরদিন আজ সংসদে গিয়ে সশরীরে পদত্যাগপত্র জমা দিতে গেলেন তারা।

বিএনপির সাত সংসদ সদস্যের মধ্যে আব্দুস সাত্তার অসুস্থ থাকায় এবং হারুনুর রশিদ বিদেশে থাকায় অনুপস্থিত রয়েছেন। সংসদে প্রবেশের সময় রুমিন ফারহানা সাংবাদিকদের জানান, তারা গতকালই ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। আজ সশরীরে জমা দিতে এসেছেন।

৩৫০ আসনের সংসদে বিএনপির সাত জন সংসদ সদস্য হলেন উকিল আব্দুস সাত্তার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২), হারুনর রশীদ (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩), জি এম সিরাজ (বগুড়া-৭), আমিনুল ইসলাম (চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২), জাহিদুর রহমান (ঠাকুরগাঁও-৩), মোশাররফ হোসেন (বগুড়া-৪) ও রুমিন ফারহানা (সংরক্ষিত নারী আসন)।

এদের মধ্যে হারুন বিদেশে রয়েছেন। তিনি পদত্যাগপত্র স্বাক্ষর করে পাঠিয়েছেন বলে জানানো হয়। অন্যরা পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।

২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গড়ে ভোটে অংশ নিয়েছিল। সেই নির্বাচনে বিএনপির ছয়জন বিজয়ী হন, পরে সংরক্ষিত নারী আসনের একটি পায় দলটি। নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ তুলে শুরুতে বিএনপি জানিয়েছিল, তারা সংসদে যাবে না। পরে সিদ্ধান্ত বদলে শপথ নেন দলটির সংসদ সদস্যরা।

সদস্যদের আসন শূন্য হওয়ার বিষয়ে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৭ (২) এ বলা হয়েছে- কোনও সংসদ সদস্য স্পিকারের কাছে স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদ ত্যাগ করতে পারবেন, এবং স্পিকার কিংবা স্পিকারের পদ শূন্য থাকলে বা অন্য কোনও কারণে স্পিকার স্বীয় দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে ডেপুটি স্পিকার যখন উক্ত পত্র প্রাপ্ত হন, তখন হতে উক্ত সদস্যের আসন শূন্য হবে।