দেশে প্রায় ১৪ হাজার এইডস রোগী, ‘বিদেশফেরত কর্মীদের আবারো এইচআইভি পরীক্ষা করতে হবে’

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, ‘পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে প্রায় ১৪ হাজার জন এইডস রোগী আছে। এদের মধ্যে প্রায় ১০ হাজার জনকে সনাক্ত করা গেছে। যারা নিয়মিত সরকারি চিকিৎসা নিচ্ছেন। এই এইডস রোগীদের অধিকাংশই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার দেশগুলো থেকে এইডস আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরে তারা তাদের পরিবারের কাছের সদস্যদের আক্রান্ত করছেন। দেশে ফেরার সময় নিজেরাও জানতে পারেনি যে, তারা এইডস আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। এজন্য আমরা ঠিক করেছি, দেশ ত্যাগের আগে যেভাবে এইডস পরীক্ষা করে এইচআইভি নেগেটিভ হলে তারপর বিদেশে যেতে হয়, একইভাবে দেশে প্রবেশের সময়ও তাদেরকে আবার পরীক্ষা করা হবে। এতে করে আক্রান্তদের সঠিক চিকিৎসা দেওয়া যেমন সহজ হবে, অন্যদিকে, তাদের পরিবারের অন্যান্য নিরাপদ সদস্যরাও এই রোগের হাত থেকে রেহাই পাবেন।’

বৃহস্পতিবার (১ ডিসেম্বর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসময় দেশে এইডস রোগীদের চিকিৎসা দেয়া প্রসঙ্গে জানান, ‘বর্তমানে সরকার বিনামূল্যে এইডস রোগীদের চিকিৎসা দিচ্ছে। চিকিৎসা নিলে এইডস রোগীরা আরো বেশিদিন সুস্থ থাকতে পারে। তবে সামাজিক প্রতিবন্ধকতার কথা ভেবে এইডস হলে তারা গোপন রাখে এবং সেকথা কাউকে প্রকাশ না করে অন্যদেরকেও আক্রান্ত করে ফেলে। এতে করে দেশে এইডস রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।’

উল্লেখ্য, দেশে প্রথম এইডস রোগী ধরা পড়ে ১৯৮৯ সালে। দেশের সাধারণ মানুষের মধ্যে মাত্র ০.০১ ভাগ এবং পতিতাবৃত্তি কাজের সঙ্গে জড়িতদের ৪.১ ভাগ এইডস আক্রান্ত রয়েছে। অধিকাংশ সংখ্যক এইডস রোগীই মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকা অঞ্চলের দেশ থেকে দেশে প্রবেশ করে থাকে। ২০২২ সালের তথ্যানুযায়ী, এইডস রোগে নতুন ৯৪৭ জন আক্রান্ত হয়েছে এবং ২৩২ জন মারা গেছে। তথ্যমতে, ১৯৮৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত মোট ৯৭০৮ জন আক্রান্ত ও ১৮২০ জন মারা গেছে।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন অনুবিভাগ) মো. সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব (জনসংখ্যা, পরিবার কল্যাণ ও আইন অনুবিভাগ) ডা. আশরাফী আহমদ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি রাজেন্দ্র পোখড়া, স্বাস্থ্য অধিদফরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, লাইন ডাইরেক্টর ডা. খুরশীদ আলমসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। সভায় সুচনা বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ মুজিবুল হক।