সেই লুসাইলেই অন্য এক আর্জেন্টিনা

নভেম্বর ২৭, ২০২২

এই সেই লুসাইল স্টেডিয়াম, যেখানে মেসিদের শুরুটা অঘটনের মধ্য দিয়ে হয়েছে। কেউই ঘুণাক্ষরে হার কথাটি কল্পনাতেও আনেনি। ফেভারিট আর্জেন্টিনা হেরে যাবে, তাও আবার সৌদি আরবের মতো আন্ডারডগের কাছে! কিন্তু পরে দেখা গেলো ফুটবলের নির্মম বাস্তবতা। মুহূর্তেই লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সবকিছু। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে বিদায়ের মতো রূঢ় বাস্তবতাও চোখ রাঙাচ্ছিল। তবে মেক্সিকোর বিপক্ষে অন্তত বাজে কিছুর পুনরাবৃত্তি যে হবে না, এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। অতীত পরিসংখ্যানও প্রেরণা জোগাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত চাপকে জয় করে আর্জেন্টিনাকে স্বমহিমায় উদ্ভাসিত করলেন মেসি। আর তাতে জমজমাট বিশ্বকাপের যে একটা আমেজ, সেটাও টিকে রইলো বেশ ভালোভাবে।

রাতের আলোতে স্টেডিয়ামে হাজারো সমর্থক নানা সাজে জড়ো হয়েছিলেন প্রিয় দলের সাফল্য দেখতে। লিওনেল মেসি-ফেরনান্দেজের লক্ষ্যভেদে মেক্সিকোকে হারিয়ে দারুণ ছন্দে ফেরা দলটি পেয়েছে অকুণ্ঠ সমর্থন।

মাঠে ঢোকার আগেও সমর্থকরা ছিল ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। একজন তো দৃঢ় বিশ্বাস নিয়ে বলেছিলেন, ‘এই দলটির ওপর আমাদের অগাধ আস্থা আছে, তারা জিতবে। মেসি গোল করবে কিনা তা নিয়ে ভাবছি না। আসলে সেদিকে আমাদের মনোযোগ কম। আমরা চাইছি দল জিতুক, যেন ভালো কিছু হয়। আর মেসি গোল করতে পারলে তো ভালো লাগবেই।’

বুয়েন্স আয়ারস থেকে আসা সেই নারী সমর্থকদের অগাধ আস্থার জোরে দল তিন পয়েন্ট পেয়েছে। ম্যাচশেষে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। তবে যারা লুসাইলের মাঠ থেকে খেলা দেখে বেরিয়ে যাচ্ছিলেন, তাদের অবয়বে ছিল স্বস্তি। ছিল তৃপ্তিও। সেই সঙ্গে নেচে-গেয়ে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেওয়ার দৃশ্য তো ছিলই।

কারণ, এই ম্যাচটির ওপরই যে ঝুলে ছিল আর্জেন্টিনার নকআউট পর্বে টিকে থাকার সম্ভাবনা। মেক্সিকোর বিপক্ষে জিতে এখন পথ সহজ হয়েছে। তবে শঙ্কার মেঘ এখনও কেটে যায়নি। পরের ম্যাচে পোল্যান্ডের বিপক্ষে জিততেই হবে। ড্র করলে তখন জটিল হিসাব-নিকাশের মুখোমুখি হতে হবে। অপেক্ষায় থাকতে হবে অন্য দলের গতিবিধির ওপর।

সেটি নিশ্চয়ই হতে দেবেন না মেসির দল। জিতে আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনা দলটি এখন চাইছে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। আরও ধারালো হতে। নিঁখুত আক্রমণের সঙ্গে গোল পেলেই তখন নকআউটে ওঠার পথটাও মসৃণ হবে।