উচ্চশিক্ষায় দেয়াল ভেঙে দিতে হবে: শিক্ষামন্ত্রী

নভেম্বর ২৭, ২০২২

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষায় নানামুখী দেয়াল রয়েছে৷ শিক্ষা যদি জীবনব্যাপী হয় তাহলে উচ্চশিক্ষার দেয়ালগুলো ভেঙে দিতে হবে৷ একজন শিক্ষার্থীকে যে কোনো বয়সে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দিতে হবে৷ যদি কোন শিক্ষার্থী উচ্চমাধ্যমিক গন্ডি পার করে কর্মজীবনে জড়িয়ে পড়েন এবং পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষায় ফিরতে চান তাহলে তাকেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ দিতে হবে৷ এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিতে ধরাবাধা নিয়ম থেকে বের হয়ে এসে শিক্ষা গ্রহনের দরজা উন্মুক্ত রাখতে হবে৷

রোববার (২৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি কনভেনশন হলে রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন (রাওয়া) এর আয়োজনে “শিক্ষা এবং নৈতিকতা” শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী৷

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা খুব দক্ষ মানুষ হলাম কিন্তু আমার ভিতরে নৈতিকতা বোধ না থাকে তাহলে সেই শিক্ষার কোন মূল্য নেই৷ সঠিক শিক্ষাগ্রহণের পাশাপাশি আমাদের শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধও শেখাতে হবে৷

সেমিনারে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, আমাদের রাষ্ট্র ও জাতির সামনে একটি সুস্পষ্ট লক্ষ্য এবং তার কৌশল বাস্তবায়নের জন্য সুস্পষ্ট কর্মনীতি দরকার। নানা ধারা-উপধারায় বিভক্ত বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা রুপ ও প্রকৃতি অত্যন্ত জটিল৷ যে রাষ্ট্রে অপসংস্কৃতি প্রবল এবং সংস্কৃতি নির্জীব, অপসংস্কৃতিকেই যে রাষ্ট্র সংস্কৃতি বলা হচ্ছেভ, তাতে স্কুলের পাঠ্যপুস্তকে নীতিবিদ্যা ও নীতিশিক্ষাকে স্থান দেওয়া কঠিন।

তিনি বলেন, আমাদের জীবনধারায় উন্নত বিজ্ঞান-প্রযুক্তিকে আমরা যথাসম্ভব গ্রহণ করব৷ আমাদের কল্যাণে আমরা সেগুলোকে ব্যবহার করবো কিন্তু সেগুলো দ্বারা আমরা পরিচালিত হবো না৷

সেমিনারে শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম বলেন, নীতিশাস্ত্রের সফল বিকাশ ঘটাতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান৷ যদি এর সঙ্গে পরিবার সংযুক্ত থাকে তাহলে বিকাশটি আশানুরূপ হয়৷ কিন্তু আমাদের দেশের সমাজ বাস্তবতা পাল্টেছে, পরিবারের ভেতর সুনীতির চর্চা কমেছে। কোনো কোনো পরিবারের সুনীতির জায়গা নিয়ে নিয়েছে দুর্নীতি। তারপরেও অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের মূল্যবোধ চর্চায় আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে৷ কিন্তু ঘরের বাইরের জগতে নৈতিকতার স্থলন ও অভাব থাকলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নীতির চর্চা উৎসাহিত না করলে পরিবারগুলির উদ্যেগে শুধুমাত্র একটা নির্দিষ্ট জায়গা পর্যন্ত সন্তানদের নিয়ে যেতে পারে৷ আমাদের দেশে যে পরিক্ষা নির্ভর, সনদমুখি শিক্ষাব্যবস্থা প্রচলিত, তাতে বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর প্রকৃত মেধার পরিচয় পাওয়া যায় না, বিকাশ ঘটা তো দূরের কথা। এই শিক্ষা নৈতিকতার বিকাশে সহায়ক নয়৷

সেমিনারে ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. দিল আফরোজা বেগম, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্(বিইউপি) এর সাবেক উপাচার্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ: লে. জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক খুরশীদা বেগম এবং রাওয়ার সভাপতি মেজর জেনারেল (অব) আলাউদ্দিন এম এ ওয়াদুদসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন৷