ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিবিড় তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী

অক্টোবর ২৪, ২০২২

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে ‘দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় ও ত্রাণ তৎপরতা মনিটরিং সেল’ খোলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে এই সেল। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে নিবিড় তদারকি করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার (২৪ অক্টোবর) বিকেলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রেস উইং।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার জন্য নিম্নোক্ত হটলাইন নম্বর সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে:
০১৭৬৯-০১০৯৮৬
০২-৫৫০২৯৫৫০
০২-৫৮১৫৩০২২
ফ্যাক্স: ০২-৯১০২৪৬৯

এদিকে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও প্রবল আকার ধারণ করেছে। মোংলা ও পায়রাবন্দরে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং সিভিয়ার সাইক্লোন (প্রবল ঘূর্ণিঝড়) রূপ নিয়ে উত্তর-পূর্বদিকে অগ্রসর হচ্ছে। এতে মহা বিপৎসংকেত জারি করা হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিলেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান। সোমবার সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন তিনি।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং আরও উত্তর-পূর্বদিকে এগিয়ে আসছে। সোমবার সন্ধ্যা নাগাদ এটি দেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে। এটি দেশের ১৩টি জেলায় মারাত্মকভাবে এবং দুটি জেলায় হালকাভাবে আঘাত হানতে পারে।

উপকূলীয় সব ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শতভাগ মানুষকে সন্ধ্যার মধ্যে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হবে। এ কথা জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী জানান, ৭ হাজার ৩০টির মতো শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে সকাল ৯টার দিকে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে (ক্রমিক নম্বর-৯) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর জানায়, মোংলা ও পায়রাবন্দরকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং এসবের অদূরবর্তী দ্বীপসমূহকে ৭ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ৬ নম্বর বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার নদীবন্দরসমূহকে ৩ নম্বর নৌ-বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় ৫০-৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। সেই সঙ্গে ভারি থেকে অতিভারি বর্ষণ হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবস্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৭ ফুট অধিক উচ্চতায় বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং-এর নাম থাইল্যান্ডের দেয়া। তবে শব্দটি শ্রীলঙ্কান। এর অর্থ ‘পাতা’ বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।

বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগরতীরের ১৩ দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে।