বৈষম্য ঘোচাতে চাকরি জাতীয়করণের দাবি এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের

অক্টোবর ২, ২০২২

এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য ঘোচাতে চাকরি জাতীয়করণের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম (বাবেশিকফো)।

রবিবার (২ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম আয়োজিত ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষায় বৈষম্য দুরীকরণ ও শিক্ষার মানোন্নয়নের একমাত্র উপায় জাতীয়করণ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় এ দাবি তুলে ধরা হয়।

লিখিত বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘স্বাধীনতার ৫০ বছর পেরিয়ে গেলেও বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা পূর্ণাঙ্গ সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যক্রম, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষা ব্যবস্থা পরিচালিত হলেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য বিরাজমান। বৈষম্যগুলো হলো— বাড়িভাড়া, উৎসবভাতা, চিকিৎসা ভাতা, পদোন্নতি না থাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা, হাউজ লোন, বদলি ভাতা, চাকরি শেষে সেই পেনশনের সুবিধা।’

তিনি বলেন, ‘অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের শিক্ষক-কর্মচারীদের কাছ থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০ শতাংশ হারে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা পাওয়ার নিশ্চয়তা নেই।’

অধ্যক্ষ মো. মাইন উদ্দিন বলেন, ‘অনেক অবসারপ্রাপ্ত শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। এছাড়া, অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন, তাদের জন্য বদলির ব্যবস্থা চালু অতীব জরুরি। অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত মাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও পাঁচশ’ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা পান। বিশ্বের কোনও দেশে শিক্ষাব্যবস্থায় এত বৈষম্য নেই।’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং বডির অনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক নিয়োগ এনটিআরসিএ সুপারিশ করলেও নিয়োগ নিয়ে উৎকোচ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। এ অবস্থায় এমপিওভুক্তি শিক্ষা জাতীয়করণ জরুরি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম শাহনেওয়াজ বলেন, ‘আগেও আমরা দেখছি, শিক্ষকরা দিনের পর দিন এই দাবিতে পথে আন্দোলন করেছেন। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এটাই দুঃখজনক। তাদের সাড়ে ১২ হাজার টাকা করে বেতন দেয়, আর ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া। এই সমস্যার নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।’

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর ড. হোসনে আরা, শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যক্ষ ড. মশিউর রহমান মৃধাসহ শিক্ষক নেতারা।