সুস্থ ধারার সমাজ সৃষ্টি আমাদের অভীষ্ট লক্ষ্য: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

ডিসেম্বর ২৯, ২০২১

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেছেন, ‘জ্ঞানভিত্তিক সমাজ সৃষ্টি আমাদের আকাঙ্খা। আর সেটি নিশ্চিত করতে পারলে দূর হবে অপসংস্কৃতির চর্চা, অগণতান্ত্রিক আচরণ, সাম্প্রদায়িক মনোভঙ্গি, ক্ষমতা দখলের অপপ্রয়াস। আমাদের সকলের অভিষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে একটি শুদ্ধ, সুন্দর ও সুস্থ ধারার সমাজ সৃষ্টি।’

আজ বুধবার (২৯ ডিসেম্বর) অনলাইন প্লাটফর্ম জুম অ্যাপের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বিশেষ সিনেট অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে এসব কথা বলেন উপাচার্য। সিনেট অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য ও সিনেটের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

সিনেটের চেয়ারম্যান ড. মশিউর রহমান বলেন, ‘জাতির পিতার জন্মশতবর্ষ উদযাপন এবং স্বাধীনতার ৫০ বছরের গৌরব ও অর্জনকে সাথে নিয়ে এবং চেতনাকে শাণিত করে আমরা নতুন বর্ষ শুরু করতে যাচ্ছি। ১৯৭১-এর এই ডিসেম্বরে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পোশাক পরিহিত অবস্থায় আত্মসমর্পন করতে বাধ্য হয়েছে আমাদের অকুতোভয় মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনীর কাছে। প্রশিক্ষিত পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী আমাদের গেরিলা যোদ্ধাদের কাছে পরাস্ত হয়ে মাথা নিচু করে আত্মসমর্পন করে ফিরে গেছে। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রজন্ম হিসেবে এ আমাদের গৌরবের বিষয়। কিন্তু ৩০ লক্ষ শহীদদের দেশমাতৃকার জন্য যে আত্মাহুতি, লক্ষ লক্ষ নির্যাতিত নারীর ত্যাগের মূল্যায়ন আজ প্রতিটি মূহুর্তে আমাদের জন্য অপরিহার্য। সে কারণেই আমরা গভীর একাত্মতা অনুভব করি আমাদের পূর্বপুরুষ মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে। তাদের রক্তঋণে আবদ্ধ হয়ে আমরা জড়িয়ে আছি চেতনা ও মুক্তির লক্ষ্য অর্জনের অটুট বাঁধনে। এ পথ ততটা মসৃণ নয়।’

সিনেট চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের এই প্রিয় স্বদেশেই অকস্মাৎ বোমা হামলা, মানুষ হত্যা, আগুনে পুড়িয়ে জান-মালের ক্ষতি সাধন, মাদক, জঙ্গিবাদের উত্থান এরূপ বহুবিধ নেতিবাচক ও সমাজবিনাশী প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। নতুন প্রজন্মের জন্য এসব সুখকর বিষয় নয় নিশ্চয়ই। প্রজন্মের হাতে তুলে দিতে হবে সেই আলোকজ্জ্বল মশাল, যেখানে নিবিড় ও গভীর দেশপ্রেমে জাগ্রত হবে তারা। ভালবাসবে মা-মাটি ও মাতৃভূমিকে। একইসঙ্গে নিজেদেরকে প্রস্তুত করবে আধুনিক শিক্ষা বিজ্ঞান চেতনা ও মুক্তবুদ্ধিতে। সে পথে আগামী প্রজন্মকে নিয়ে আসতে হলে কঠোর পরিশ্রম ব্যতিরেকে আমাদের আর কোন বিকল্প নেই। সে লক্ষ্যেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় গভীর মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে।’ এ সিনেটে গত অধিবেশনে সার্ভিস রুলের বিভিন্ন ধারা ও তফসিলের সংযোজন-বিয়োজন পরিমার্জনপূর্বক সংবিধি সংশোধন অনুমোদন হয়।’

এ অধিবেশনে জুম অ্যাপের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে বক্তব্য রাখেন সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও পিএসসি’র সাবেক সদস্য প্রফেসর ড. শরীফ এনামুল কবির, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের উপাচার্য প্রফেসর ড. মুনাজ আহমেদ নূর, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুনর রশীদ খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সাজাহান মিয়া, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামাণিক প্রমুখ।

এছাড়া মাউশির ডিজি প্রফেসর ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, বিভিন্ন বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার, সকল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষসহ ৬২ জন সম্মানিত সিনেট সদস্য এবং ৩ জন আমন্ত্রিত অতিথি অধিবেশনে সংযুক্ত ছিলেন।

সিনেট অধিবেশন সঞ্চালনা করেন সিনেট সচিব রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেন।