লঞ্চে আগুন: ইঞ্জিন রুমে ত্রুটি পেয়েছে তদন্ত কমিটি

ডিসেম্বর ২৫, ২০২১

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ইঞ্জিন রুমে কিছু ত্রুটি দেখতে পেয়েছে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে তদন্ত কমিটি। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঝালকাঠি লঞ্চঘাটে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব মো. তোফায়েল ইসলাম।

তবে তদন্তে অগ্নিকাণ্ডের কারণ সম্পর্কে কী বলা হয়েছে তা নিশ্চিত করে কিছু বলতে চাননি মো. তোফায়েল ইসলাম। তিনি বলেন, সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সবাই সরেজমিনে পুড়ে যাওয়া জাহাজ ও দুটি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এখানে যে অভিজ্ঞতা হলো তা কাজে লাগিয়ে বলতে পারবো কী কারণে এ ঘটনা ঘটলো।

চালক চিলো কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ড্রাইভার ছিল কী, ছিল না―এগুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। কাগজ-কলমে সব মিলিয়ে বাস্তবে যাচাই করে দেখবো।

মো. তোফায়েল ইসলাম জানান, প্রথম যেই স্থানে জাহাজটি থামানোর জন্য গিয়েছিল সেখানে থেকে অন্য স্থানে আসার বিষয়গুলো আমরা যাচাই করছি। প্রথম যে স্থানে জাহাজটি গিয়েছিল সেখানকার স্থানীয় ইউপি সদস্য এবং ঘাটে লাগার পর যারা উদ্ধার কাজে এগিয়ে এসেছিল তাদের সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে।

অগ্নিকাণ্ড ও হতাহতের ঘটনার পেছনে প্রাথমিক কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, যেহেতু আমি তদন্ত কমিটির একজন সদস্য এবং আহ্বায়ক, তাই এ মুহূর্তে ধারনার ওপর অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করে কিছু বলতে পারি না। সবাই একসঙ্গে বসে কম্পাইল করে সিদ্ধান্তে আসবো।

তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটির প্রতিবেদন হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি গঠনের পর আজ আমরা সবাই ঢাকা থেকে এখানে এসেছি। হাসপাতাল এবং বরগুনা যেতে হবে। এছাড়া আরও অনেকের সঙ্গে কথা বলার প্রয়োজন রয়েছে। সব মিলিয়ে যথাসময়ে প্রতিবেদন দেওয়ার চেষ্টা করবো আমরা।

লঞ্চে হিসাবের বেশি যাত্রী ছিল কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘাটের কাগজপত্রে লঞ্চে ৩১০ জনের মতো যাত্রী ছিল। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে যাত্রী এর চেয়েও বেশি ছিল। স্থানীয় মানুষ যারা সহায়তায় এগিয়ে এসেছিলেন―তাদের কেউ কেউ বলছেন দেড়শত যাত্রী এখানে নেমেছেন, আবার কেউ বলছেন দুইশত মানুষ ওখানে নেমেছেন। একেক জন একেক রকম কথা বলছেন। আমার ধারণা যাত্রী ৩১০ এর বেশি হতে পারে।

লঞ্চ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, লঞ্চ কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে মাস্টার ও ড্রাইভারের নম্বর সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো বন্ধ রয়েছে, আর মালিকের মোবাইল নম্বরও বন্ধ পেয়েছি।

ইঞ্জিন রুমের ত্রুটির বিষয়ে হোফায়েলে ইসলাম বলেন, লঞ্চের ইঞ্জিন রুমে কিছু ত্রুটি আমরা পেয়েছি। সেটা কী এবং কেনও হয়েছে তার লিংকআপ করতে হবে। কারণ প্রাথমিকভাবে যা পেয়েছি সেটাকে লিংকআপ না করে মূল সিদ্ধান্তে যেতে পারবো না। অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা ছিল কিনা সেটাও খতিয়ে দেখছি। কমিটির প্রতিবেদনে সবকিছু উল্লেখ করা হবে।

অভিজ্ঞ ড্রাইভারদের মতে, এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের মতো একটি নৌ-যান চালনার জন্য একজন করে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির  ড্রাইভার, চারজন গ্রিজার এমনকি একজন ইলেকট্রিশিয়ানও থাকা প্রয়োজন।