চেনা অচেনা চার্লি চ্যাপলিন

এপ্রিল ২৩, ২০১৩

95e47/huch/2458/11ঢাকা জার্নাল: মাথায় ডার্বি হ্যাট, নাকের নীচে একটুখানি গোঁফ, পরনে টাইট কোট, বিরাট ঢোলা প্যান্ট, পায়ে বড় জুতো, হাতে লাঠি৷ এই পরিচিত চেহারা চলচ্চিত্র জগতের এক আইকন৷ বিংশ শতাব্দীর কিংবদন্তি চার্লি চ্যাপলিন৷

এমন অদ্ভুত সাজপোশাকেই নির্বাক ছায়াছবি ‘দ্য ট্র্যাম্প’-এ অভিনয় করে বিশ্বখ্যাতি পেয়েছিলেন৷ দরিদ্র অথচ সজ্জন ও অমায়িক এক ভবঘুরের জীবন কাহিনি নিয়ে এই ছবি৷ নাকের নীচের ছোট্ট গোঁফটা আজও ‘চ্যাপলিন গোঁফ’ হিসেবেই পরিচিত৷ ৭৫ বছরের ক্যারিয়ারে চ্যাপলিন কৌতুকাভিনয় দিয়ে হাসিয়ে হাসিয়েই জয় করেছেন দর্শকদের হৃদয়, দেখতে দেখতে অস্রুও ঝরেছে তাঁদের৷শিল্প, সংস্কৃতি, রাজনীতি থেকে শুরু করে শ্রমিক সমাজ, প্রেম-প্রীতি, ভালোবাসা এবং সামাজিক দুর্দশাও ছিল তাঁর ছবির বিষয়৷

নির্বাক যুগ থেকে শুরু করে সবাক ছবির জগতেও চ্যাপলিনের মতো আর কোনো শিল্পী ছায়াছবির জগতে এতটা প্রভাব বিস্তার করতে পারেননি৷

পুরো নাম: স্যার চার্লস স্পেন্সার চ্যাপলিন

জন্ম: ১৬ই এপ্রিল, ১৮৮৯, লন্ডন, ইংল্যান্ড

মৃত্যু: ২৫শে ডিসেম্বর, ১৯৭৭, ভিভে, সুইজারল্যান্ড

পেশা: অভিনেতা, চলচ্চিত্র পরিচালক, প্রযোজক, চিত্রনাট্যকার ও সংগীতকার

বাবা: চার্লস স্পেন্সার চ্যাপলিন সিনিয়র

মা: হান্নাহ হেরিয়েট চ্যাপলিন

স্ত্রী: মিলড্রেড হ্যারিস (১৯১৮ – ২০), লিটা গ্রে (১৯২৪ – ২৭), পোলেট গোদা (১৯৩৬ – ৪২), উনা ও-নিল (১৯৪৩ – ৭৭)

উল্লেখযোগ্য ছায়াছবি: দ্য ট্র্যাম্প, দ্য গোল্ড রাশ, দ্য সার্কাস, মডার্ন টাইমস, দ্য গ্রেট ডিক্টেটর

610_chaplin_introতবে তাঁর একটা অসাধারণ দিক হয়ত অনেকেই জানেন না৷ তিনি ছিলেন একাধারে অভিনেতা, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার ও সংগীতকার৷ সব কিছুতেই ছিলেন স্বশিক্ষায় শিক্ষিত৷ এমনকি চেলো, বেহালা ও পিয়ানো বাজানেতোও ছিলেন সিদ্ধহস্ত৷ এসবও শিখেছিলেন কোনো গুরুর সহায়তা ছাড়াই৷ প্রতিটি ছবির সংগীত রচনা করেছেন নিজে৷ কোনো ধরণের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা তাঁর ছিল না৷

শৈশব কেটেছে দুঃখ-দারিদ্র্যের মধ্যে৷ দুঃস্থ শিশুদের স্কুলে প্রাথমিক শিক্ষালাভ৷ সাত বছর বয়সেই আয়-রোজগারে নামতে হয় তাঁকে৷ নয় বছর বয়স থেকে মঞ্চে কৌতুক শিল্পী হিসেবে প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখানো শুরু৷ ১৯ বছর বয়সে ‘ফ্রেড কার্নো’ থিয়েটার কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ইংল্যান্ড থেকে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে৷ সেখানেই ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র জগতে রাজ্য বিস্তার শুরু৷

চ্যাপলিন ছিলেন উদার ও শান্তিবাদী৷ যে কোনো বৈষম্য, বিচ্যুতির সমালোচনায় ছিলেন অকুতোভয়৷ যুক্তরাষ্ট্রের অভিজাত সমাজের সমালোচনাও বাদ যায়নি তাঁর ছায়াছবিতে৷ এ কারণে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের রোশানলে পড়ে ৫০ দশকের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়তে বাধ্য হন চ্যাপলিন, থিতু হন সুইজারল্যান্ডে৷

ভবঘুরের জীবন কাহিনি থেকে বেরিয়ে নতুন আঙ্গিকের ছায়াছবি নির্মাণ শুরু করেন সেখানে৷ ১৯৭৫ সালে ইংলেন্ডের রানি এলিজাবেথ চ্যাপলিনকে নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন৷ ৭৭ সালে, ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন কিংবদন্তি চলচ্চিত্র শিল্পী স্যার চার্লস স্পেন্সার চ্যাপলিন ওরফে চার্লি চ্যাপলিন৷

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.