ভারতে কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্তে কারচুপি !

এপ্রিল ২৩, ২০১৩

indian-parliamentঢাকা জার্নাল: কয়লা ব্লক বণ্টনে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে তদন্তকারী কেন্দ্রীয় তদন্ত ব্যুরো সিবিআই-এর রিপোর্টে সরকার কারচুপি করেছে, এই অভিযোগে বিরোধী দল বিজেপি কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করেছে৷ বামদল প্রকৃত সত্য জানতে চেয়েছে৷

কয়লা ব্লক বণ্টনের দুর্নীতি নিয়ে ফের সংসদ তোলপাড়৷ গত বছর এই ইস্যুতে গোটা দেশে উঠেছিল রাজনৈতিক ঝড়৷ শেষে ঐ দুর্নীতির সিবিআই তদন্তের আদেশ দিতে সরকার বাধ্য হয়৷ এবার বাম ও ডান সব দল এককাট্টা৷ প্রধান বিরোধী দল কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রীর ইস্তফা দাবি করে৷ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী যদি ইস্তফা না দেন, তাহলে প্রধানমন্ত্রী যেন তাঁকে বরখাস্ত করেন৷

কিন্তু কেন? বিজেপির অভিযোগ, সিবিআই তদন্ত রিপোর্টে সন্দেহের তির প্রধানমন্ত্রীর দিকে থাকায় কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী সিবিআই-এর এক শীর্ষকর্তাকে ডেকে পাঠিয়ে তাঁকে দিয়ে ঐ তদন্ত রিপোর্টের ঐ অংশ সংশোধনে বাধ্য করা হয়৷ সংশোধিত রিপোর্ট এবার পেশ করার কথা সুপ্রিম কোর্টে৷ বিরোধী দলগুলি মনে করে তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর ওপর সরকারের এই ধরণের চাপ সৃষ্টি করা সত্যকে চাপা দেবার অপচেষ্টা৷ এভাবে কয়লা কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িতদের ছেড়ে দেয়া অন্যায় যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী৷

শুধু তাই নয়, সিবিআই-এর ঐ শীর্ষ ব্যক্তিকে বদলি করা হয় ঐ ধরণের রিপোর্ট দেবার জন্য এমনটাই অভিযোগ৷ সিবিআই যে সরকারের হাতের পুতুল, স্বাধীন তদন্তকারী সংস্থা নয়, এটা তার আরেকটা নমুনা৷ তাই বিজেপির দাবি, এই বিরাট দুর্নীতির তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে বিশেষ তদন্ত দল গঠন করা দরকার৷

উল্লেখ্য, ২০০৪ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে দেশের ১৪২টি কয়লা ব্লক প্রতিযোগিতামূলক ভিত্তিতে নিলাম না করে ২৫টি সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বণ্টন করা হয়৷ শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী এবং সমর্থকদের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছিল৷ বাজার দামের চেয়ে কম দামে তাদের কয়লা ব্লক বণ্টন করা হয়৷

ফলে সরকারের আর্থিক লোকসান দাঁড়ায় আনুমানিক ১ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি টাকা৷ এই মর্মে কম্পট্রোলার এবং অডিটার জেনারেলের রিপোর্ট দেয়ায় তা নিয়ে ওঠে রাজনৈতিক ঝড়৷ যেহেতু ঐ সময় কয়লা মন্ত্রক ছিল প্রধানমন্ত্রীর অধীনে তাই প্রধানমন্ত্রীর ইস্তফারও দাবি উঠেছিল৷

টু-জি স্পেকট্রাম দুর্নীতির জের কাটতে না কাটতে কয়লা ব্লক কেলেঙ্কারিতে সরকার সংসদের ভেতরে ও বাইরে তীব্র চাপের মুখে পড়ে৷ ১১ দিন সংসদ অচল করে রাখে বিরোধী পক্ষ৷ গত বছর প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং সংসদে এক বিবৃতি দিয়ে বলেন, সিএজি রিপোর্ট ভ্রান্ত এবং আর্থিক লোকসানের পরিমাণ অতিরঞ্জিত৷ দেশের দ্রুত শিল্পায়নের স্বার্থে তা বণ্টন করা হয় তৎকালীন নিয়মবিধি মেনে৷

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.