জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় টিআইবি ও বাপা’র দশ দফা দাবি

এপ্রিল ২২, ২০১৩

Humanchain 1তাহা, ঢাকা জার্নাল: ধরিত্রী রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় কার্যকর নীতি ও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে দশ দফা দাবি উত্থাপিত করেছে টিআইবি ও বাপাসহ অন্যান্য সংগঠন।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে  টিআইবি, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), বাংলাদেশ ওয়াটার ইন্টিগ্রিটি নেটওয়ার্ক (বাউইন), কাইমেট ফাইন্যান্স গভার্নেন্স নেটওয়ার্ক (সিএফজিএন), গ্রিন ভয়েস আয়োজিত এক মানববন্ধনে সরকারের উদ্দেশ্যে এই দাবি উত্থাপিত করা হয়।

দাবিগুলো হলো: 

 বিশ্বের তাপমাত্রা কাঙ্খিত পর্যায়ে নামিয়ে আনার জন্য সকল পক্ষের সমন্বয়ে দ্রুত ২য় মেয়াদে কিয়োটো প্রটোকল চুক্তি গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
 জলবায়ু পরিবর্তনে তিগ্রস্ত দেশসমূহকে তিপূরণ প্রদান, প্রাপ্য জলবায়ু অর্থ বাংলাদেশের হাতে অবিলম্বে সরাসরি ন্যস্ত করাসহ জলবায়ু অর্থায়ন প্রক্রিয়া সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।
 বাস্তুহারা ও জীবিকাহারা মানুষদের শিল্পায়িত দেশে অভিবাসনের সুযোগ প্রদান করা।
 জলবায়ু-তাড়িত বাস্তুচ্যুতদের পুনর্বাসনে বাংলাদেশে জাতিসঙ্ঘের আন্তর্জাতিক অভিবাসন কেন্দ্র স্থাপনে দাবি জানানো।
 জীবাশ্ম জ্বালানীর ব্যবহার হ্রাস এবং নবায়নযোগ্য জ্বালানীর ব্যবহার বৃদ্ধিতে কার্যকর প্রণোদন দেয়া;
 উপকূলীয় বনায়ন বৃদ্ধি, পরিবেশ-বান্ধব, সুষম উন্নয়ন পরিকল্পনা ও কৌশল; এবং দ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা।
 জলবায়ু অভিযোজনসহ সব ধরনের উন্নয়ন পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে স্থানীয় ভুক্তভোগী জনগোষ্ঠীর সরাসরি অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
 মতাবান ব্যক্তি, ব্যবসায়ী কর্তৃক সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের যোগসাজশে নদীসহ জলাশয় ও জলমহালসমূহের বেআইনী দূষণ ও সংরক্ষিত বনাঞ্চল দখল বন্ধে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
 শিল্পবর্জ্য নির্গমনের বিধিমালার কঠোর প্রয়োগ এবং পানি দূষণকারীর কাছ থেকে ক্রমবর্ধমান হারে জরিমানা আদায় নিশ্চিত করা।
 পশুর নদীর তীর থেকে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের স্থান সরিয়ে তা পরিবেশের জন্য নিরাপদ স্থানে স্থাপন।

মানববন্ধনে আয়োজকেরা জানান, গ্লোবাল কাইমেট ঝুঁকি সূচক ২০১২ অনুযায়ী আগামী ২০ বছরে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে ঝুঁকিতে অবস্থানকারী তিনটি দেশ হলো বাংলাদেশ, মায়ানমার এবং হন্ডুরাস। এছাড়াও কাইমেট ভালনারেবল মনিটর রিপোর্ট ২০১১ তে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে অবস্থানরত ‘হট স্পট’ হিসাবে বাংলাদেশকে উল্লেখ করে শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঘূর্ণিঝড়ের কারণে আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ বছরে অতিরিক্ত গড়ে ৬ লাখ লোক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে পূর্বাভাস  দিয়েছে।

তারা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম প্রধান ঝুঁকি হলো সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং এর ফলে নদী ও জলাশয়ের পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে তা অনেকাংশে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে যাওয়ার আশংকাও প্রবল।

ফলে, এশিয়ার ৪৯টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পানি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে অবস্থানকারী ৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এ প্রেক্ষিতে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় ২য় মেয়াদে কিয়োটো চুক্তি বাস্তবায়নে উন্নত দেশসমূহের অনীহা এবং ক্ষতিগ্রস্ত দেশসমূহের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়নের নিশ্চয়তা প্রদান না করায় বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সাধারণ সম্পাদক ড. এম. এ. মতিন,  জলবায়ু অর্থায়ন সুশাসন প্রকল্প সমন্বয়ক এম. জাকির হোসেন খান, বাপা’র যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মিহির বিশ্বাসসহ অন্যান্য সংগঠন প্রধানেরা।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.