গঙ্গা-যমুনা নাট্যোৎসবে মুখর শিল্পকলা একাডেমি

অক্টোবর ২, ২০২১

দর্শক ও শিল্পী-কলাকুশলীদের পদভারে মুখরিত শিল্পকলা একাডেমি। দীর্ঘ লকডাউন শেষে আবার শুরু হলো উৎসব।

সাজ সাজ রবে শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এখন তাই আনন্দের বন্যা।
জাতীয় নাট্যশালার তিন মিলনায়তন, সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তন, উন্মুক্ত মঞ্চ ও নাট্যশালার লবিসহ একাডেমির সর্বত্র এখন বইছে শিল্পের ফাগুনধারা।

গঙ্গা-যমুনা নাট্য ও সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর প্রাণের সঞ্চার বইছে শিল্পের আঙ্গিনায়।
শুক্রবার (১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে শুরু হয় ১২ দিনের এই উৎসব।

সন্ধ্যায় একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

উৎসব আহ্বায়ক গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূর, নাট্যাভিনেতা রামেন্দু মজুমদার, নাসির উদ্দিন ইউসুফ, আতাউর রহমান, শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকী প্রমুখ।
জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আয়োজন। এরপর বিভিন্ন গানের সমন্বয়ে কোলাজ নৃত্য পরিবেশন করে নাচের দল স্পন্দন। এরপর শুরু হয় আলোচনা সভা।

উদ্বোধনী আলোচনায় অতিথিরা বলেন, দেড় বছর পর শিল্পকলা একাডেমিতে এসে প্রাণের স্পন্দন ফিরে পেলাম। করোনার পর এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে দেশ একটি বার্তা পাবে যে, আমরা স্বাভাবিক জীবন শুরু করতে চাই। এই আয়োজন আমাদের প্রাণিত করবে। আর করোনার এই সময়ে আমরা ভার্চ্যুয়াল আয়োজন করেছি সাংস্কৃতিক অঙ্গনে, তাতে আমরা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে পেরেছি যে, আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, স্বপ্নের সাংস্কৃতিক প্রবাহ তৈরি করতে চাইছি।

উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হয় থিয়েটার (বেইলি রোড) এর প্রযোজনা ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’। একই সঙ্গে পরীক্ষণ থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় আরণ্যক নাট্যদলের নাটক ‘কহে ফেসবুক’ ও স্টুডিও থিয়েটার হলে মঞ্চায়ন হয় ঢাকা জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রযোজিত নাটক ‘জনকের মৃত্যু নেই’।

উদ্বোধনী দিনের সন্ধ্যায় প্রতিটি নাটকেই ছিল দর্শকদের উপচেপড়া ভিড়। মূল গেটের টিকেট কাউন্টার থেকে দোতলার মিলনায়তন পর্যন্ত ছিল দর্শকদের সারিবদ্ধ লাইন।

১২ দিনের এই উৎসবে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় মিলনায়তনে নাটক মঞ্চায়ন ছাড়াও বিকেল ৪টা থেকে উন্মুক্ত মঞ্চ ও নাট্যশালার লবিতে থাকছে পথনাটক, মূকাভিনয়, নৃত্যালেখ্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি, নৃত্য, ধামাইল গান, গম্ভিরা, বাউল গানসহ নানা সাংস্কৃতিক কার্যক্রম। এবারের উৎসবে অংশ নিচ্ছে সারা দেশের ১৪০টি দলের প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিল্পী।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে মঞ্চায়ন হবে প্রাচ্যনাটের ‘সার্কাস সার্কাস’, পরীক্ষণ থিয়েটার হলে সময়ের ‘ভাগের মানুষ’ ও মুন্সীগঞ্জের থিয়েটার সার্কেলের নাটক ‘পঞ্চভূতের রংতামাশা’।