‘সংকট সমাধানে আলোচনার বিকল্প নেই’

এপ্রিল ২১, ২০১৩

bbc-1ঢাকা জার্নাল: দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা টিআইবি বলছে, বর্তমান রাজনৈতিক সঙ্কট সমাধানে প্রধান দুটো রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলোচনার কোনো বিকল্প নেই।

বিবিসির বাংলাদেশ সংলাপে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, দল দুটো চাইলে দেশটির নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে অচলাবস্থা নিরসনে সংস্থাটি মধ্যস্থার কথা বিবেচনা করবে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোটের অংশীদার জাসদের একজন শীর্ষস্থানীয় নেতা দাবি করেছেন আগামী নির্বাচনে বিএনপি অবশ্যই অংশ নেবে।

নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে চলমান সংকট এড়াতে সম্প্রতি ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ বা টিআইবি একটি ফর্মূলা প্রকাশ করেছে।

এতে সংস্থাটি দুই প্রধান দলের নেতৃত্বাধীন জোট থেকে সমানসংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে একটি সংসদীয় কমিটির মাধ্যমে নির্বাচিত বা অনির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচনকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলো।

শনিবার বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে অংশ নিয়ে ট্রান্সপারেন্সী ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন সুযোগ থাকলে এবং দুই প্রধান দল চাইলে সংস্থাটি এ সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে।

তিনি বলেন , “বাংলাদেশের প্রধান দুটি দলের মধ্যে সংঘাতময় সম্পর্ক। যার খেসারত দিতে হচ্ছে দেশবাসীকে। এ ধারা চলতে থাকলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া ঝুঁকির সম্মুখীন হবে। আমরা ঐকমত্যের কথা বলেছি।”

টিআইবি কি নাগরিক উদ্যেগ নিয়ে কোন মধ্যস্থতায় আগ্রহী ? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এটা নির্ভর করবে যাদের নিয়ে মধ্যস্থতা করার কথা তাদের কোন আগ্রহ থাকলে। আমাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া হলে তাহলে আমরা অবশ্যই আমাদের স্কিল বা ক্যাপাসিটি থাকলে আমরা বিবেচনা করতে পারি।”

তবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের অংশীদার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল – জাসদের কার্যকরী সভাপতি মইন উদ্দিন খান বাদল দাবি করেন আগামী নির্বাচনে প্রথম যে দলটি অংশ নিবে সেটি বিএনপি। তবে কিভাবে এটি তিনি নিশ্চিত হলে সেটি তিনি ব্যখ্যা করেননি।

তিনি বলেন, “সাংবিধানিক সরকার রয়েছে। নির্বাচনে পার্লামেন্ট হয়েছে এবং সেটি বহাল আছে। হাইকোর্ট বলেছে সংসদ চাইলে আগামী দুটি নির্বাচন হতে পারে। কিন্তু আমি চাইনি। আগামী নির্বাচনে প্রথম যে দলটি অংশ নিবে সেটি হলো বিএনপি।”

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমশের এম চৌধুরী বলেন, টিআইবির প্রস্তাবে অনেকগুলো ইতিবাচক দিক রয়েছে। এর ভিত্তিতে আলোচনা হলে একটি সমাধান আসবে। মানুষ সংলাপের জন্য অপেক্ষা করছে। কারন দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের কোন সম্ভাবনা নেই।

তিনি বলেন, “যে কথাটা টিআইবি বলেছে মূলত সেটা হলো নির্দলীয় ব্যবস্থা নিতে হবে যেটি মানুষ চায়। টিআইবির প্রস্তাবে অনেক ইতিবাচক কথা রয়েছে যেগুলো সবার বিবেচনা যোগ্য।”

এ প্রসংগে একজন দর্শক বলেন, “সরকারের দিকে অনাগ্রহ রয়েছে সংলাপে বসার। বিএনপিরও কিছু সমস্যা আছে, তারা সংসদে আসতে চাচ্ছেনা। তাহলে কিভাবে সংলাপ হবে তারও কোন রূপরেখা দিচ্ছেনা। সেখান থেকে দেখছি দু দলেরই প্রব্লেম আছে।”

সম্প্রিতি চট্রগ্রামের ফটিকছড়িতে হরতাল বিরোধী মিছিলকে কেন্দ্র করে সংঘটিত ঘটনা কি সন্ত্রাসী হামলা না-কি গণপ্রতিরোধ এমন এক প্রশ্নের জবাবে মি. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, এটি গণপ্রতিরোধ নয় বরং এটি দেশের জন্য উদ্বেগের বিষয়।

ব্যবসায়ী ও লেখক রুবানা হক বলেন একটির পর একটি কর্মসুচি আসতে থাকলে সাধারন মানুষ ও ব্যবসায়ীরা নিরাপদ থাকতে পারেনা। .

তিনি বলেন, “এটিকে গণপ্রতিরোধ বললে ভয়ানক ভুল বলা হবে। তবে একেবারে যে জনসমর্থন নেই তাও তো নয়। কারন যারা করছেন তারাতো আমাদেরই মতো নাগরিক। তাই কি অবস্থায় এগুলো হচ্ছে সেটা দেখতে হবে। অবশ্যই সহিংসতাকে আমরা কোন মতেই সমর্থন করতে পারিনা।”

বাদল বলেন এসব ঘটনা যুদ্ধাপরাধের বিচারের সংগে সম্পর্কিত। সরকার শুরুর দিকে এসব মোকাবেলায় উদাসীনতা দেখিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সবাইকে মিলে একটি রাজনৈতিক পন্থা বের করে আনতে হবে।

বিদেশে দুর্ঘটনায় পড়লে প্রবাসী বাংলাদেশীরা যাতে বাংলাদেশ মিশন থেকে আরো সেবা পেতে পারেন সেজন্য সমন্বয়হীনতা দূর করে মিশনগুলোকে আরো সক্রিয় করার উপর জোর দেন প্যানেলিস্ট এবং কয়েকজন দর্শক।

বিয়াম মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে পদ্মা সেতু প্রকল্পে দুর্নীতি ও কানাডীয় কোম্পানীর বিষয়ে বিশ্বব্যাংকের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রাণবন্ত আলোচনা হয়েছে।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.