গুরুতর অবস্থা মাহমুদুর রহমানের
এপ্রিল ২১, ২০১৩ ঢাকা জার্নাল: আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের অবস্থা গুরুতর। জানা গেছে, শরীরের বিভিন্নস্থানে ক্ষত এবং ব্যথা নিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।
তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার নয় সদস্য বিশিষ্ট মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদরোগ বিভাগের প্রধান আবু সিদ্দিকীকে এ বোর্ডের প্রধান করা হয়েছে।
শনিবার বিএসএমএমইউয়ের একটি সূত্র সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
বোর্ডের অন্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন- হৃদরোগ বিভাগের অধ্যাপক নুসরাত আহমেদ চৌধুরী, অধ্যাপক সদর ব্যানার্জী, সহযোগী অধ্যাপক মঞ্জুরুল মাহমুদ, এ বিভাগের আরেক চিকিৎসক এবং অন্য বিভাগ থেকে অধ্যাপক এবিএম আবদুল্লাহ, অধ্যাপক রফিকুল আলম, সহযোগী অধ্যাপক হারিস চৌধুরী এবং সহযোগী অধ্যাপক আকতার হামিদ।
বিশেষ সূত্র জানায়, মাহমুদুর রহমান অনশন করায় তাকে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। তার শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাতের ক্ষত রয়েছে। এ অবস্থায় অনশন এবং ব্যথায় মাহমুদুর রহমানের অবস্থা ক্রমাগত অবনতির দিকে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
সূত্র আরো জানায়, মাহমুদুর রহমানকে কোনোভাবেই খাবার খাওয়ানো যাচ্ছে না। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তার নাকে পাইপ দিয়ে তরল খাদ্য দেয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু এতেও বাধা দিচ্ছেন তিনি। এখন থেকে চিকিৎসক বোর্ড তাকে পর্যবেক্ষণে রাখবে।
সূত্র জানায়, শনিবার সকালে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় দেখা গেছে, মাহমুদুর রহমানের হৃৎপিণ্ডের পালস্ অর্ধেকে নেমে গেছে। এখন মেডিকেল বোর্ডের প্রধান কাজ হবে তাকে খাবার গ্রহণে উদ্বুদ্ধ করা।
শনিবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালের ডি-ব্লকের দ্বিতীয় তলায় হৃদরোগ বিভাগের সিসিইউ’র সামনে গিয়ে দেখা গেছে, চারজন কারারক্ষী এবং ৮ জন পুলিশ পাহারা দিচ্ছে। এখানে মাহমুদুর রহমান থাকায় এ নিরাপত্তা প্রহরা বসানো হয়েছে।
সেখানে দায়িত্বরত একজন কর্মচারী জানান, শুক্রবারের পর মাহমুদুর রহমানের কোনো স্বজন-শুভাকাঙ্ক্ষীকে ভেতরে ঢুকতে দেয়া হয়নি।
এদিকে ছেলের এ অবস্থা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মা মাহমুদা বেগম। ডায়াবেটিসের রোগী হওয়া সত্ত্বেও কয়েকদিন ধরে তিনি অধিকাংশ সময় অনাহারে থাকছেন।
আমার দেশ পত্রিকার রাজনৈতিক প্রতিবেদক মাহবুবুর রহমান জানান, ‘ছেলের অনশনের কথা শুনে মাহমুদা বেগম ছেলে না খাওয়া পর্যন্ত নিজেও খাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন। পরে মাহমুদুর রহমানের স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা তাকে জোর করে দিনে এক বেলা খাওয়াচ্ছেন।’
দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশনা চালু, মা মাহমুদা বেগমের নামে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার এবং প্রেসের ১৯ জন কর্মচারীর মুক্তির দাবিতে গত সোমবার থেকে কারাগারে অনশন করছেন মাহমুদুর রহমান। অসুস্থ হয়ে পড়লে কারা কর্তৃপক্ষ গত বৃহস্পতিবার তাকে শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পাঠায়।
রাজধানীর তেজগাঁও থানায় দায়ের করা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের একটি মামলায় গত ১১ এপ্রিল আমার দেশ কার্যালয় থেকে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ৩টি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে ১৩ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।