বাংলাদেশে হত্যা, গুম, অপহরণ, বৈষম্য চলছেই: যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার

এপ্রিল ২০, ২০১৩

mediঢাকা জার্নাল: বাংলাদেশে মানবাধিকারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে গুম ও নিখোঁজ হয়ে যাওয়া, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্য, দুর্বল কর্মপরিবেশ ও শ্রমিক অধিকার, বিচারবহির্ভূত হত্যা, অপহরণের ঘটনা নিয়মিত ঘটছে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব অপরাধের সঙ্গে দেশের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে মনে করছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ২০১২ সালের মানবাধিকার রিপোর্টে এসব কথাই বলা হয়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তৈরি এ রিপোর্ট আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন এফ কেরি। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটায় রিপোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।

রিপোর্টে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠি, বিশেষ করে রোহিঙ্গা শরণার্থী, আদিবাসী ও নারীরা অসম আচরণের শিকার হচ্ছেন। তাদের ওপর সহিংসতারও ঘটনা রয়েছে। কারখানায় শ্রমিকরা তাদের ইউনিয়ন গঠনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন, কারখানায় তারা অনিরাপদ কর্মপরিবেশে কাজ করছেন।

এ প্রসঙ্গে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর রাতে তাজরিন গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে আগুনের ঘটনাকে গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে এই রিপোর্টে।

মানবাধিকার লঙ্ঘনের অন্যান্য ঘটনার মধ্যে গণগ্রেপ্তার, আটক ও পুলিশের হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা রয়েছে বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থা কে দুর্বল হিসেবে উল্লেখ করে এর কারণে বিচারপূর্ব দীর্ঘ কারাবাসকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

বাক স্বাধীনতা ও সভাসমাবেশ করার অধিকার সীমিত করা হচ্ছে। সাংবাদিকরা অপেক্ষাকৃত কম অধিকার ভোগ করছেন। তারা সেল্ফ সেন্সরশিপে বাধ্য হচ্ছেন।

সংহিসতা ও সংঘাত, অব্যাহত দুর্নীতি বড় সমস্যা হিসেবে রয়ে গেছে। কিছু কিছু এনজিও তাদের কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে আইনি ও অপ্রাতিষ্ঠানিক বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। অর্থনৈতিক দৈন্যতা বা পাচারের শিকার হয়ে অনেক শিশু কাজে বাধ্য হচ্ছে। প্রতিবন্দ্বীদের প্রতি বৈষম্য রয়েছে, বিশেষ করে এইসব শিশুদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার সুযোগ কম রয়েছে। ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর সামাজিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে। মেয়েশিশুদের বাল্যবিবাহ একটি সমস্যা।

যৌথদরকষাকষির অধিকার থেকে শ্রমিকরা বঞ্চিত। অপ্রাতিষ্ঠানিকখাতে শিশুশ্রম সমস্যাই থেকে গেছে।

দুর্নীতি ও দুর্নীতি করে পার পেয়ে যাওয়াকেও একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবারের মানবাধিকার প্রতিবেদনে।

আইনের শাসনের দুর্বল প্রয়োগের কারণে সাধারণ নাগরিকদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে। নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে হত্যার ঘটনা আগের বছরগুলোর মতোই রয়েছে। এবং সে ব্যাপারে সরকার কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর থেকে এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। নিউইয়র্ক থেকেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একটি প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশ করে পররাষ্ট্র বিভাগ।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.