‘জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে তৃতীয় বিশ্বাসঘাতক’

মার্চ ১৩, ২০২১

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, ‘বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিকে ধ্বংস করেছিলেন। মীরজাফর ও খন্দকার মোশতাকের পর জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে তৃতীয় বিশ্বাসঘাতক হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। দেশের নাম বাংলাদেশ রেখে কার্যত পাকিস্তানে পরিণত করেছিলেন জিয়াউর রহমান। মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে তিনি মৌলবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন।’

শনিবার (১৩ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ‘আবার ইতিহাস বিকৃতির ষড়যন্ত্র’ শিরোনামে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে সম্প্রীতি বাংলাদেশ।

শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে জাতীয়তাবাদী চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বিএনপি ৭ মার্চকে বিকৃত করার চেষ্টা করছে। কার্যত ৭ মার্চেই বঙ্গবন্ধু প্রকৃত স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেই ইতিহাস বিকৃত করার চেষ্টা হলে ইতিহাসই বিএনপিকে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করবে। ইতিহাস মিথ্যাকে গ্রহণ করে না। তাই মিথ্যার রাজনীতিই বিএনপিকে ধ্বংস ও নিঃশেষ করবে।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বহির্বিশ্বে বিভিন্নভাবে চাপের মুখে পড়েছিলেন। কিন্তু তিনি সেসব চাপ উপেক্ষা করে বিচার সম্পন্ন করেছেন। খালেদা জিয়ার বিচার করার সময়ও নানামুখী চাপ ছিল। কিন্তু তিনি দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। দেখিয়েছেন রাষ্ট্র ক্ষমতায় থেকে দুর্নীতি করলে ক্ষমা পাওয়া যায় না।’

সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধূরী মানিক বলেন, ‘জিয়াউর রহমান ছিলেন স্বাধীনতাবিরোধী। বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাবা ছিলেন রাজাকার। জিয়া ছিলেন পাকিস্তানের চর। তিনি কোনও অবস্থাতেই মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। মানুষের চাপে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। জেনারেল ওসমানী তার কোর্ট মার্শাল করতে চেয়েছিলেন। আদালতের রায় আছে, জিয়া গায়ের জোড়ে সংবিধান লঙ্ন করে ক্ষমতা দখল করেছিলেন। পরবর্তীকালে জিয়া তার মন্ত্রিসভায় রাজাকার ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের স্থান দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় গিয়ে জিয়া ১১ হাজার মুক্তিযোদ্ধাকে হত্যা করেছিলেন। সেইসঙ্গে স্বাধীন বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের পুনর্বাসন করেছিলেন। এই রকম একজন ব্যক্তির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর তুলনা করা হয়। এই ধৃষ্টতাকে মেনে নেওয়া যায় না।’

আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য মুহম্মদ শফিকুর রহমান। এসময় আলোচনায় আরও অংশ নেন অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিমান চন্দ্র বড়ুয়া। সভাপতিত্ব করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। সঞ্চালনা করেন সম্প্রীতি বাংলাদেশের সদস্য সচিব অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল)। সেমিনারের মুল প্রবন্ধ লেখেন আলী হাবিব যা পাঠ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মাসুম বিল্লাহ।