শিক্ষককে নিজ হাতে পদক দিতে না পারায় প্রধানমন্ত্রীর দুঃখ প্রকাশ

ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১

বিশ্ববিদ্যালয়ের সরাসরি শিক্ষক অধ্যাপক রফিকুল ইসলামকে নিজের হাতে পদক তুলে দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী তার স্যারের কাছে ক্ষমা প্রার্থনাও করেছেন।

রবিবার (২১ ফেব্রুয়ারি) শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলপক্ষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে এ পরিস্থিতির অবতারণা হয়। অনুষ্ঠানে জাতীয় পর্যায়ে জাতীয় অধ্যাপক, ভাষাবিজ্ঞানী ও নজরুল গবেষক রফিকুল ইসলাম এবং বেসরকারি সংগঠন খাগড়াছড়ির জাবারাং কল্যাণ সমিতির নির্বাহী পরিচালক মথুরা বিকাশ ত্রিপুরা পদক পান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এ পদক পান উজবেকিস্তানের গবেষক ইসমাইলভ গুলম মিরজায়েভিচ। এছাড়া অনুষ্ঠানে নৃগোষ্ঠীর ভাষা নিয়ে কাজ করা বলিভিয়ার অনলাইনভিত্তিক উদ্যোগ অ্যাকটিভিজমো লেংকুয়াসকে বাংলাদেশ সরকারের সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যোগদান করেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে তার পক্ষে শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি পদক তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী ছিলেন। পদক পাওয়া রফিকুল ইসলাম তার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। সম্প্রতি মারা যাওয়া অধ্যাপক আনিসুজ্জামানও প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি শিক্ষক ছিলেন।

মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী তার শিক্ষককে নিজের হাতে পুরস্কার ‍তুলে দিতে না পেরে আক্ষেপ করেন। করোনার কারণে বের হতে না পারার সীমাবদ্ধতার কথাও তিনি উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারণে অনেক অনুষ্ঠান আমরা করতে পারিনি। আজকে শহীদ মিনারে যেতে পারলাম না। বাংলাদেশে থেকে শহীদ মিনারে যেতে পারবো না, এটা কখনোই হয়নি। সেই ছোটবেলা থেকেই আমি শহীদ মিনারে যাই। আজ প্রথম আমি শহীদ মিনারে যেতে পারিনি। এটা একট দুঃখ থেকে গেলো।’

প্রধানমন্ত্রীর বাইরে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রটোকলের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার কোথাও যেতে হলে বহু লোকের দায়িত্ব পালন করতে হয়। তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এই করোনাভাইরাস থেকে তারা যেন সুরক্ষা পায়, সেই বিষয়টি বিবেচনা করেই দীর্ঘদিনের অভ্যাস আর আকাঙ্ক্ষা পূরণ করতে পারলাম না। মানুষ ঘরে থাকুক,সুস্থ থাকুক— সেটাই আমার কাছে সব চেয়ে বড় বিষয়।’

সরকার প্রধান বলেন, ‘প্রথম আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা পদক দেওয়া হলো, কিন্তু আমি সরাসরি উপস্থিত থাকতে পারলাম না। এজন্য আমার দুঃখ থেকে গেলো। বিশেষ করে আমার শিক্ষক রফিকুল ইসলাম স্যারকে নিজের হাতে পদক তুলে দেওয়া আমার জন্য কতটা সম্মান ও গৌরবের ছিল। কিন্তু আমি নিজের হাতে দিতে পারলাম না। স্যার, আপনি আমাকে ক্ষমা করবেন। এই করোনাভাইরাসের কারণে—আসলে প্রধানমন্ত্রী হলে সব স্বাধীনতা থাকে না। অনেকটা ব্যক্তি জীবন থাকে না। আমি এক জায়গায় যেতে চাইলে নিরাপত্তাসহ প্রায় হাজারখানেক লোকের প্রয়োজন হয়। তাদের নানাভাবে কাজে লাগাতে হয়। তাদের কথা চিন্তা করেই আমি আসতে পারিনি। পুরস্কার পাওয়ার জন্য স্যার আপনাকে অভিনন্দন জানাই। অভিনন্দন জানাই অন্য যারা পেয়েছেন তাদেরও।’